ঝিনাইদহে কয়েকদিনের ব্যবধানে দুজন অপহরণ : গুলিবিদ্ধ লাশ

পুলিশ পরিচয়ে অস্ত্রের মুখে তুলে নেয়া হলো, এরপর আর হদিস মিললো না। কয়েকদিনের মাথায় উদ্ধার হলো গুলিবিদ্ধ লাশ। বেশ কিছুদিন ধরে প্রায় অভিন্ন এ অপহরণ ও হত্যাকাণ্ড সারাদেশেই বেড়েছে। ঝিনাইদহে কয়েকদিনের ব্যবধানে দুজনের অপহরণ ও গুলিবিদ্ধ মৃতদেহ উদ্ধারের পর সঙ্গত কারণেই সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। আবার কখন কার বুকের মানিককে এভাবে হারাতে হয় কে জানে?

যারা যে পরিচয়েই অপহরণ করুক, তাকে সুহালে উদ্ধারের দায়িত্ব অবশ্যই পুলিশের। তা ছাড়া অপহরণের পর উদ্ধারের চেয়ে অপহরকচক্রের অপতৎপরতা বন্ধে বাস্তবমুখি পদক্ষেপ প্রয়োজন। তা যখন হচ্ছে না, তখন পুলিশই যে অভিযুক্তের শীর্ষে তা বলাই বাহুল্য। পুলিশ জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। আইন প্রয়োগে থাকবে পেশাদারত্ব। আমাদের দেশের বাস্তবতায় তার কতোটুকু আছে? তোষামোদ আর পক্ষপাতিত্ব শুধু প্রকাশ্যেই রূপ পাচ্ছে না, আস্থাশীলতা আর আস্থাহীনতার ওজনে কোন দিকটা ভারী হচ্ছে তা পরখ করলেই অনেকটা পরিষ্কার হচ্ছে।

রাজনৈতিক কারণেই তথা রাজনৈতিক স্বার্থে যদি কোনো সংস্থাকে বিশেষভাবে লাগানো হয়, তা হলে গণতন্ত্র শুধু আহতই হয় না, পক্ষপাতিত্বের রেওয়াজ পরবর্তীতে বোমেরাং হয়। অবশ্যই বিচার বহির্ভূত কোনো হত্যাকাণ্ডকে সমর্থন করা যায় না। যদিও এক সময়ের রক্তাক্ত জনপদ খ্যাত জনপদে দাপিয়ে বেড়ানো বাঘা বাঘা অস্ত্রধারীদের পতন ঘটানোর এনকাউন্টার বা ক্রসফায়ার এলাকাবাসীর আকুণ্ঠ সমর্থন পেয়েছে। এলাকার বাঘা বাঘা সন্ত্রাসীদের পতনের পর এখন অতো অপহরণ, খুন কেন? অপহরণ খুনের সাথে জড়িতদের অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি করা উচিত।

পুলিশ পরিচয়ে শহরের ভেতর থেকে অপহরণ করা হচ্ছে। পুলিশের তরফে বলা হচ্ছে, ‘ওই নামে কাউকে পুলিশ ধরেনি।’ এ কথা বলেই কি পুলিশ পুলিশের দায় এড়াতে পারে? অবশ্যই অপহৃতকে সুহালে উদ্ধার করার পাশাপাশি আপহরণকারীদের আইনে সোপর্দ করাটাই পুলিশের দায়িত্ব। ব্যতিক্রমে বাড়ে শঙ্কা, হারায় আস্থা। অপহরণ খুন গুম বন্ধে সরকারেরও আশু পদক্ষেপ প্রয়োজন।