উল্টো পথে ট্রেন : রাজবাড়ীতে বড় ধরণের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেল যাত্রীরা

স্টাফ রিপোর্টার: ড্রাইভার ও সহকারী ড্রাইভারের ভুলে ফরিদপুর-রাজবাড়ী চলাচলকারী আন্তনগর ট্রেনটি উল্টো দিকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার গিয়ে মাছপাড়া নামক স্থানে থামে। এ সময় আতংকিত  অনেক যাত্রীই ট্রেন থেকে লাফিয়ে নামতে গিয়ে আহত হন। তবে বড় ধরণের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছেন যাত্রীরা।

স্টেশন মাস্টার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ট্রেনটি সকাল ৮টা ১০মিনিটে রাজবাড়ী স্টেশনের ২ নম্বর প্লাটফর্ম থেকে ফরিদপুরের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার সকল প্রস্তুতি নেয় চালক ও সহকারী চালক। সকাল ৭টা ৫৫মিনিটে ড্রাইভার মোহাম্মদ আলী (এলএম) সহকারী ড্রাইভার (এএলএম) ফয়সাল আহমেদ ইঞ্জিন চালু করে নিচে নেমে এসে প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে ফোরম্যান বিজয় কুমার ধরের সাথে কথা বলছিলেন। এ সময় আকস্মিকভাবে ট্রেনটি পেছনের দিকে (ব্যাক গিয়ারে) দ্রুত বেগে চলতে শুরু করে। ততক্ষণে ফোরম্যান, ড্রাইভার ও সহকারী ড্রাইভার ট্রেনের পেছনে পেছনে দৌঁড়াতে থাকলেও কয়েক মিনিটের মধ্যে ট্রেন কুষ্টিয়ার দিকে ছুটতে থাকে। স্টেশনের পশ্চিম দিকে ১২ নং সিগনাল পয়েন্টে গিয়ে বিকট শব্দে পয়েন্টের পাত ভেঙে প্রায় ৬০ মাইল গতিতে ট্রেনটি বেরিয়ে যায়। এরপর বিভিন্ন রেলগেট ও সিগনাল পয়েন্টে কোন প্রকার হুইসেল ছাড়া দ্রুত গতিতে ট্রেনটি চলতে থাকায় ট্রেনে থাকা ও বিভিন্ন স্টেশনের যাত্রীরা কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই নাটকীয়ভাবে এসব ঘটনা দেখে হতভম্ভ হয়ে যান। এভাবে পাঁচটি স্টেশন পার করে যাত্রীরা ট্রেনের চেইন, হুসপাইপ ও ভ্যাকুইম খুলে দিলে মাছপাড়ার কাছে গিয়ে ট্রেনটি থেমে যায়।

ইতিমধ্যে রাজবাড়ী থেকে সকল স্টেশন মাস্টারদের কাছে পাগলা ট্রেনের খবর পাঠিয়ে দিলে সংশ্লিষ্ট স্টেশনের মাস্টারগণ লাইন ক্লিয়ার দিয়ে ট্রেনটি সামনে যাওয়ার সব ব্যবস্থা করে রাখে। অপরদিকে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা গোয়াtrain-লন্দ ঘাটগামী নকসীকাঁথা ট্রেনটির সাথে ‘পাগলা ট্রেনের’  সংঘর্ষ এড়াতে আগে ভাগেই (সকাল সাড়ে ৮টায় ) কুস্টিয়া স্টেশনের লুপ লাইনে ফেলে রাখে। পরর্তীতে রাজবাড়ী থেকে একটি পাওয়ার (ইঞ্জিন) গিয়ে মাছপাড়ায় থেকে ট্রেনটিকে উদ্ধার করে রাজবাড়ী স্টেশনে নিয়ে আসে। এতে রাজবাড়ী-ফরিদপুর, গোয়ালন্দ-পোড়াদহ, গোয়ালন্দ-রাজশাহী অন্তনগর সকল ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয় ঘটে।

জানা গেছে, রেলওয়ে পাকশী ও রাজশাহী বিভাগীয় কর্মকর্তারা এ ট্রেনে ড্রাইভার মোহাম্মদ আলী, সহকারী ড্রাইভার ফয়সাল আহমেদ ও গার্ড সুভাষ কুমার শর্মাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছেন। এ ঘটনায়  ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।