দর্শনা কেরুজ চিনিকলে হঠাৎ পরিবর্তন!

বেগমপুর প্রতিনিধি: কেরুজ চিনিকল শুধু চিনি উৎপাদন ও মদ তৈরি করেই থাকে না পাশাপাশি সামাজিক উন্নয়নে অর্থ বরাদ্দ দিয়ে থাকে। সবকিছু মিলিয়ে এলাকায় আর্থসামাজিক উন্নয়নের চালিকা শক্তি হিসেবে বিশেষ অবদান রেখে যাচ্ছে এ প্রতিষ্ঠানটি। মাঝে মধ্যে কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা, কর্মচারীর দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও দায়িত্ব অবহেলার কারণে প্রতিষ্ঠনটি লোকসানের মুখে পড়ে।

১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে ৪ বছর দায়িত্ব পালন করেছেন জেডি নিকাশ। এরপর অনেকেই নিয়ম মাফিক দায়িত্ব পালন করে চলে গেছেন। দায়িত্ব পালনকালে কেউ গুছিয়েছেন নিজ আখের আবার কেউ শিক্ষা দিয়ে গেছেন নীতি নৈতিকতা আর সততার। আবার যারা শক্ত হাতে নিয়ন্ত্রণ করতে গেছেন দুর্নীতি আর অনিয়ম তাদের আর বেশি দিন থাকা হয়নি এখানে। হঠাৎ গত ২২ মার্চ থেকে নিজ কর্মস্থলে সকলেই অ্যালার্ট। চোখে পড়ে সর্বত্র পরিবর্তন। যার মধ্যে ছিলো সকাল ৭টার মধ্যে নিজ কর্মস্থলে উপস্থিত নিশ্চিত করা এবং ৩টার সময় কর্মস্থল ত্যাগ করা। গত রোববার দুপুর ২টা বাজতে ১০ মিনিট বাকি। চোখে পড়ে চিনিকলের কর্মকর্তা, শ্রমিক ও কর্মচারীরা নিজ নিজ কর্মস্থলে কাজ নেই তবুও চেয়ারে বসে আছেন আর ঘড়ির কাঁটার দিকে চোখ রাখছেন। প্রায় ২টার সময় সবাই কর্মস্থলে কি আশ্চর্য। এমনটা এর আগে চোখে পড়েনি। রেওয়াজ আছে বাজারের ব্যাগ সাথে নিয়ে সকালে অফিসে গিয়ে হাজিরা খাতায় সই করে চায়ের দোকানে অথবা বাজার করতে চলে যান। আবার বিভিন্ন কাজের অজুহাত দেখিয়ে পাশের জনকে ম্যানেজ করেও অফিস ফাঁকি দেয়ার অভ্যাস আছে অনেকেরই। জানতে চাইলাম আপনারা এখনও অফিস করছেন? সবার কাছ থেকে একটাই উত্তর এলো, নতুন এমডি স্যার এসেছেন। নাটোর চিনিকল থেকে কেরুজ চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে এসছেন এবিএম আরশাদ হুসাইন। যিনি সময়ের এবং দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে না কি খুবই সিরিয়াস। অফিসের টাইম টু টাইম খোঁজখবর রাখছেন। অনুসন্ধানে জানা গেলো এমডি দ্বিতীয় দিনে সময়ের মধ্যে নিজ কর্মস্থলে উপস্থিত না থাকায় ডিস্টিলারি বিভাগের একজনের খাতায় লাল কালি দিয়েছেন এবং একদিনের বেতন কর্তনের চিঠি ধরিয়ে দিয়েছেন তার হাতে। ব্যাস! একজনের খাতায় লাল কালির দাগে সবাই নাকি সতর্ক হয়ে গেছেন। ফলে সময়ের প্রতি সবাই হয়েছেন যত্নবান। একটি মানুষের পরিবর্তনে যদি প্রতিটি বিভাগে এতো পরিবর্তন ঘটে তাহলে সবাই যদি এমডির মতো হতেন তাহলে চিনিকলটি সোনার কলে পরিণত হতে বেশি দিন সময় লাগবে না বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করে। বাণিজ্যিক খামারগুলোর দিকেও নজর দেয়া দরকার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের। একটু নজরদারি রাখলেই চোখে পড়বে অনেক কিছু। তবে একার পক্ষে কোনো কিছুই করা সম্ভব না।

ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবিএম আরশাদ হুসাইন বলেন, সকলের সহযোগিতা চাই। কারণ প্রতিষ্ঠান বাঁচলে এলাকার সার্বিক উন্নয়ন ঘটবে। আর উন্নয়নের অংশীদার হবো সকলে মিলে।