অজ্ঞাত রোগে মৃত্যু : স্বাস্থ্য বিভাগের তড়িত পদক্ষেপ কাম্য

বিজ্ঞান বহুদূর এগিয়েছে। স্বাস্থ্য বিজ্ঞানও বসে নেই। অজানা বহু রোগ যেমন শনাক্ত হয়েছে, হচ্ছে, তেমনই প্রতিষেধকও আবিষ্কার হয়েছে, হচ্ছে প্রায় প্রতিনিয়ত। এরপরও অজ্ঞাত রোগে মৃত্যু? ঝিনাইদহের মহেশপুরে ভারত সীমান্তবর্তী এলাকায় অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হয়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। রোগ শনাক্ত ও প্রতিকারের উপায় অনুসন্ধানে ইতোমধ্যে বিশেষজ্ঞ দল সরেজমিন পরিদর্শন করেছে। ওই রোগে আক্রান্তদের উপসর্গ পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি উপশমের সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে। ঝিনাইদহে চিকিৎসকদের সকল প্রকারের ছুটিও বাতিল করেছে জেলা স্বাস্থ্যকর্তা। গতকাল দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকায় এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

‌এক সময় গ্রামের পর গ্রাম ডায়রিয়া, কলেরায় উজাড় হয়েছে। এখন? তেমনটি ভাবাও অবান্তর। যক্ষ্মা হলে রক্ষা নেই, এ কথার এখন আর ভিত্তি নেই। ক্যানসারও সময়মতো চিকিৎসা শুরু করলে দেশেই সুস্থ করে তোলা সম্ভব। এরপরও বিশেষ ইবোলাসহ কিছু রোগ রয়েছে যা থেকে মানুষকে রক্ষা করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। এ রোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার নিমিত্তে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা বিশ্বজুড়ে বিশেষ সতর্কতাও জারি করে রেখেছে। প্রতিবেশী দেশ ভারত সোয়াইন ফ্লু নিয়ে হিমসিম খাচ্ছে। পড়শি রাজ্য পশ্চিমবঙ্গে এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। বলার অবকাশ রাখে না যে, পশ্চিমবঙ্গের সাথেই সীমান্ত চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, যশোর, সাতক্ষীরা, ঝিনাইদহসহ বিশাল এলাকা। সোয়াইন ফ্লু থেকে রক্ষা পেতে দেশের প্রতিটি সীমান্তে বিশেষ সতর্কতার পাশাপাশি চেকপোস্টগুলোতে দু দেশের মধ্যে ভ্রমণকারীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিশেষ তাগিদও দেয়া হয়েছে। অবশ্য এ তাগিদ কর্তব্যরতদের কতোটা কর্তব্যপরায়ন করতে পেরেছে তা তদারক কর্তাদের খতিয়ে দেখার দাবি রাখে বৈকি! তা ছাড়া সোয়াইন ফ্লু রোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার বিষয়ে সীমান্তবাসীদের মধ্যে সচেতনতামূলক তেমন কর্মসূচিও পরিলক্ষিত হচ্ছে না। অস্বাভাবিক সর্দি-কাশি গলায় ব্যথায় আক্রান্ত রোগীর সর্দি কফের সংস্পর্শতা এড়ানোর যেমন দরকার, তেমনই আক্রান্তেরও কী করা উচিত তা জানাতে প্রচার প্রচারণা প্রয়োজন নয়কি?

মহেশপুরের ভারত সীমান্তবর্তী এলাকায় এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। রোগের যে উপসর্গ পরিলক্ষিত হয়েছে তা দেখে এবং প্রয়োজনীয় প্রাথমিক পরীক্ষা করে তাকে সোয়াইন ফ্লু কি-না তা স্পষ্ট করেনি চিকিৎসা বিভাগ। প্রাথমিকভাবে স্বাস্থ্য বিভাগের তরফে বলা হয়েছে, ‘রোগটি অজ্ঞাত। এ রোগ নির্ণয়ের কাজ চলছে।’ স্বাস্থ্য বিভাগের উক্তি আতঙ্ক দূর করার জন্য যথেষ্ট না হলেও এলাকাবাসীকে হতাশাগ্রস্ত থেকে যে রক্ষা করেছে তা বলাই বাহুল্য। দ্রুত রোগ শনাক্ত করে ওই রোগে মৃত্যুরোধে স্বাস্থ্য বিভাগের সক্ষমতা কাম্য। একইভাবে অজ্ঞাত রোগ নিয়ে আতঙ্কগ্রস্ত হওয়ার বদলে এলাকাবাসীকে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনে আন্তরিক হওয়া দরকার।