চুয়াডাঙ্গা ও দামুড়হুদায় শিলাবৃষ্টি : ফসলের ক্ষতি বিদ্যুত বিপর্যয়

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা ও দামুড়হুদাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় শিলাবৃষ্টিতে মাঠের ফুল ধরনের আবাদে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমেরও ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার কৃষকেরা। অপরদিকে বৃষ্টি শুরু হলে চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও আলমডাঙ্গায় বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। বৃষ্টির পর বড়বাজারসহ কয়েকটি ফিডারে বিদ্যুত সরবরাহ চালু করা হলেও মেহেরপুর ও বিডিআর ফিডারে বিদ্যুত সরবরাহ রাত ১২টার দিকেও অনিশ্চয়তা অবস্থায় ছিলো। এসব ফিডারের বিদ্যুত লাইনে ত্রুটির কারণে বিদ্যুত সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়ে চুয়াডাঙ্গা বিদ্যুত বিতরণ কেন্দ্র থেকে বলা হয়, ত্রুটি শনাক্তের কাজ চলছে। ত্রু টি শনাক্তের পর তা মেরামত করে বিদ্যুত সরবরাহ চালু করা হবে।
চুয়াডাঙ্গায় গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৫টা ৫৫ মিনিট থেকে রাত ৮টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত ৫৯ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। স্থানীয় আবহাওয়া অফিস এ রেকর্ডের তথ্য জানিয়ে বলেছে, বৃষ্টির সাথে ১০-১৫ মিনিট শিলা পড়েছে। কালবোশেখি নয়, দমকা বাতাস হয়েছে। এদিকে বৃষ্টিপাতে সন্ধ্যার পর চুয়াডাঙ্গার জনজীবন স্থবির হয়ে পড়ে। মাঠের তামাক ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিস্তীর্ণ ধানক্ষেতের ধানের ফুল শিলা বৃষ্টিতে ঝরে যাওয়া ধানের আবাদে চিটা হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণের এক কর্মকর্তা বলেছেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবার ধানের আবাদে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা ফুটে উঠেছিলো। শিলা বৃষ্টিতে সে সম্ভাবনায় চিড় ধরেছে। আমগাছেও এবার প্রচুর মুকুল এসেছে। শিলা বৃষ্টিতে আমের ফলনেও বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে বৃষ্টির পর শীতল বাতাসে শীতের আমেজ এনে দেয়। ফলে অধিকাংশেরই রাতের ঘুমটা ছিলো স্বস্তির।
দামুড়হুদা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, দামুড়হুদায় ঝড়ো বাতাস আর শীলাবৃষ্টিতে মাঠের ধান, আমসহ মাঠে থাকা বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে আকাশ কালো মেঘে ঢেকে যায় এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার ইব্রাহিমপুর, কলাবাড়ি, ভগিরথপুর, নতিপোতা, হেমায়েতপুর, চারুলিয়াসহ বিভিন্ন গ্রামের ওপর দিয়ে প্রায় ঘণ্টাব্যাপি বয়ে যাওয়া ঝড়ের সাথে শিল পড়ে গাছের আম, মাঠের ধানসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতির পাশাপাশি লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে বেশ কিছু বাড়িঘর। বিশেষ করে টিনের তৈরি ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। নাটুদাহ ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান চারুলিয়ার শফিকুল ইসলাম শফি মোবাইলফোনে জানান, ওই এলাকায় প্রচুর পরিমাণে শিলাবৃষ্টি হয়েছে। শীলাবৃষ্টিতে আমসহ ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া টিনের তৈরি বেশ কিছু বাড়িঘরের চালে শিল পড়ে তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হেমায়েতপুর, নতিপোতা, ভগিরথপুর, ইব্রাহিমপুরসহ বেশকিছু গ্রাম থেকেও মোবাইলফোনে এলাকার ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি জানানো হয়েছে।
রাজশাহীতে আঘাত হেনেছে মরসুমের দ্বিতীয় কালবোশেখি। সাথে ছিলো বজ্রবৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টি। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টার পর থেকে শুরু হয় ওই ঝড়। তবে বজ্রবৃষ্টি চলেছে শুরু থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। এছাড়া ঝড় শুরুর দিকে হয়েছে শিলাবৃষ্টি।