আইসিসির সভাপতি থেকে পদত্যাগের ঘোষণা মুস্তফা কামালের

স্টাফ রিপোর্টার: আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন আ হ ম মুস্তফা কামাল। গতকাল বুধবার অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশে ফিরে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন। মুস্তফা কামাল বলেন, আমি এখন থেকে যে বক্তব্য দেবো তা হবে সাবেক আইসিসি সভাপতির। আমার দেশের মানুষকে ছোট করে আমি এ পদে থাকতে চাই না।

তিনি বলেন, যারা বেআইনি ও অসাংবিধানিক কাজ করতে পারে তাদের সাথে আমার কাজ করা সম্ভব নয়। সারা বিশ্বের মানুষ জানে প্রকৃত সত্য কি। কামাল বলেন, আইসিসির সংবিধানের ৩.৩ ধারা মোতাবেক আইসিসির ওয়ার্ল্ড ইভেন্টে পুরস্কার দেয়ার দায়িত্ব থাকে একমাত্র সভাপতির ওপর। এ কাজটি বিচ্যুত হওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। গত ২৯ মার্চ বিশ্বকাপ বিজয়ীদের ট্রফি দেয়ার কথা ছিলো আমার। কিন্তু আমি দিতে পারিনি। কেন তার কারণ সবাই জানে। গত ১৯ মার্চ বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচে কি হয়েছিলো তা সবাই জানে। আইসিসি সভাপতি হিসেবে আমি সেদিন মাঠে ছিলাম। অন্যান্য কর্মকর্তারাও ছিলেন।

তিনি বলেন, সেদিনের ম্যাচে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে স্পাইডার ক্যামেরা ছিলো না। এটি বিশ্বকাপে এ ঘটনা এরকমই প্রথম হয়েছে। অথচ এটি রাখার কথা। বিতর্কিত আম্পায়ারিংও হয়েছে। জায়ান্ট স্ক্রিনে ইন্ডিয়ার পক্ষেও স্লোগান দেয়। সেখানে লেখা ছিলো ‘জিতেগা ভাই জিতেগা, ইন্ডিয়া জিতেগা।’ আমি বার বার সরাতে বললেও আমার কথা শোনেনি। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে।

মুস্তফা কামাল বলেন, আম্পায়ারও মানুষ। তাদেরও ভুল ভ্রান্তি হতে পারে। যদি সেদিন টেকনলজি পূর্ণমাত্রায় ব্যবহার করা হতো তবে আম্পায়ারিঙের ভুল ধরা যেতো। এই বিতর্কিত খেলা শেষে সাংবাদিকদের আমার মনের কথা বলেছি।  এ কারণে ফাইনালের আগের দিন বিকেলে একটি মিটিং বসানো হয়। সেখানে আমাকে অ্যাপলজি সাবমিট অথবা স্টেটমেন্ট উথড্র করতে বলা হয়। কিন্তু আমি এটা না করায় আমাকে বলা হয় তাহলে আপনি ট্রফি দিতে পারবেন না। আমি বলেছিলাম, এটা করতে হলে তো সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে। তারা জানান, সেটা দেখা যাবে। আমি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছি, আল্লাহ তাদের বিচার করবে। ট্রফি দেয়া আমার কাছে বড় কথা নয়, বড় আমার দেশের মানুষ। তিনি বলেন, একজন সভাপতি হিসেবে ন্যায়বিচার ও সত্যবাদিতা আমার কাছে বেশি প্রাধান্য পাবে। ওইদিনের ম্যাচে বাংলাদেশ না হয়ে অন্য কোনো দেশ থাকলেও আমার একই ওভজারভেশন থাকতো। আমি যেমন আইসিসি সভাপতি তেমনি একজন মানুষ। ক্রিকেটের প্রতি, বাংলাদেশের ক্রিকেটের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা ভালোবাসা আছে। নিজের আবেগ থেকেই ম্যাচের পরে অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছি।

কামাল বলেন, ম্যাচ শেষে সবাই বলছিলো আইসিসি এখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল নয়, এটি এখন ইন্ডিয়া ক্রিকেট কাউন্সিল। কিন্তু আমি তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের সভাপতি, ইন্ডিয়া ক্রিকেট কাউন্সিলের নয়। তাই আমার পদত্যাগ করা উচিত।

Leave a comment