যোগ্যতম দল হিসেবেই ক্রিকেটের বিশ্বকাপ নিজেদের করে নিয়েছে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া। ক্রিকেট বিশ্বকাপে এটি তাদের পঞ্চম শিরোপা জয়। যে দল পঞ্চমবারের মতো বিশ্বকাপ জয় করেছে তাদের কুর্নিশ করলে কম করা হয়। অভিবাদন। কিন্তু এবারের ক্রিকেট বিশ্বকাপ বিশ্ববাসীকে নানাভাবেই যে বিব্রত করেছে তা বলাই বাহূল্য। বাংলাদেশের অগণিত দর্শক যারপরনাই হতাশ হয়েছে ভারতের সাথে অনুষ্ঠিত কোয়ার্টার ফাইনালের খেলাটিতে আম্পায়ারের কিছু বিতর্কিত সিদ্ধান্তের কারণে। তবুও ….
যেদিন বাংলাদেশ বনাম ভারতের খেলা হলো, সেদিন শুধু বাজে রেফারিংই নয়, নানা অনিয়ম শাদা চোখেই ধরা পড়েছে। আইসিসি বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়নশিপের খেলার মাঠে যখন ডিসপ্লে বোর্ডে ভারতের জয়ের আগাম ইঙ্গিত দিয়ে বিজ্ঞাপন প্রচার হয় তখন পক্ষপাতিত্বের বিষয়টি স্পষ্ট হতে আর বাকি থাকে না। চরম এ একপেশে পদক্ষেপের প্রতিবাদ নয়, সমালোচনা করতেই আইসিসির সভাপতিকে রেওয়াজ অনুযায়ী ট্রফি প্রদানের মঞ্চ বঞ্চিত করা হয়েছে। এরপরও কি বলতে হবে, এবারের বিশ্বকাপ আয়োজন স্বচ্ছতার সাথে সম্পন্ন হয়েছে? এরপরও যুদ্ধ ও জঙ্গিবাদের ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ বর্তমান বিশ্বে দীর্ঘ সময় ধরে কোটি কোটি মানুষকে নির্মল আনন্দ জুগিয়েছে যে খেলা তার গুরুত্ব অপরিসীম। গত এক মাসে ক্রিকেটপ্রিয় মানুষের নজর ছিলো টেলিভিশনের পর্দায়। খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগত নৈপুণ্য যেমন আলোচিত হয়েছে, তেমনি দলগতভাবে দলগুলো মাঠে যে নৈপুণ্য দেখিয়েছে, তা নিয়েও অনেক আলোচনা হয়েছে। ক্রিকেট তীর্থ মেলবোর্ন মাঠে এক মাসের আয়োজনের যবনিকাপাত হলেও থেমে থাকবে না ক্রিকেট। এবারের বিশ্বকাপের সাফল্য ও ব্যর্থতার চুলচেরা বিশ্লেষণ হবে। এবারের ব্যর্থতার কারণগুলো চিহ্নিত করে আগামীদিনের ক্রিকেটকে এগিয়ে নেয়ার নতুন পরিকল্পনা করবে আইসিসি ও সদস্য দেশগুলো। এটাই প্রত্যাশা করে বিশ্ববাসী।
আর বাংলাদেশ দল? প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। আয়োজনে কিছু পক্ষপাতমূলক চিত্র ফুটে উঠলেও বাংলাদেশের দামাল ছেলেরা এবার যে সাফল্য দেখিয়েছে। আশা জাগিয়েছে। ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে বাংলাদেশ অচিরেই বিশ্বকাপে নিজেদের আরো মর্যাদার আসনে নিয়ে যেতে সক্ষম হবে। সাফল্যের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হলে ক্রিকেট নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। ক্রিকেট নিয়ে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করতে হবে।