স্টাফ রিপোর্টার: সিটি করপোরেশন নির্বাচন ঘিরে দু শিবিরেই চলছে নানা হিসাব-নিকাশ। অরাজনৈতিক এ নির্বাচনে এখন রাজনীতিই হয়ে উঠেছে মুখ্য। রাজনৈতিক লাভ-লোকসানের হিসাব কষে এগোচ্ছে প্রধান দু রাজনৈতিক দল। প্রার্থী সমর্থন দিয়ে নির্বাচনের মাঠে নামলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ জয়-পরাজয়ের হিসাব কষছে বিএনপির অবস্থানের ওপর। আর বিএনপি নির্বাচনের ছক করছে সরকারের গতিবিধি ও আচরণ দেখে। এ কারণে এখন পর্যন্ত প্রার্থী মনোনয়ন ও নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দেয়নি দলটি। শেষ পর্যন্ত বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট নির্বাচনের মাঠে থাকলে আওয়ামী লীগের জন্য নির্বাচনী হিসাব অন্যরকম হবে বলে মনে করছেন দলের নেতারা। এ কারণে বিরোধী জোটের অবস্থানের ওপর নির্ভর করেই নির্বাচনী কৌশল ঠিক করতে চায় ক্ষমতাসীন দল। এছাড়া বিএনপি নির্বাচনে যাওয়ার যে শক্ত ইঙ্গিত দিয়ে আসছে তাতে অনেকটা শঙ্কাও ভর করেছে আওয়ামী লীগে। কারণ বিএনপি একক প্রার্থী দিয়ে মাঠে নামলে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর জন্য তা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। অন্যদিকে মামলা ও রাজনৈতিক হয়রানিতে বিপর্যস্ত বিএনপিতে নির্বাচনে অংশ নেয়া না নেয়া নিয়ে নানা মত থাকলেও শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকার পক্ষেই মত আসছে। দলটির নীতিনির্ধারকরা বলছেন, নেতাকর্মীরা হয়রানির শিকার হলেও সুষ্ঠু ভোট হলে সাধারণ ভোটাররা তাদের পাশে দাঁড়াবেন। এতে নির্বাচনের ফলও তাদের পক্ষে থাকবে।
শঙ্কায় আওয়ামী লীগ। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোট অংশ নেয়ায় কিছুটা শঙ্কায় পড়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। এ কারণে জীবনপণ লড়াই মানসিকতা নিয়ে অংশ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের নীতিনির্ধারকরা। গত শুক্রবার গণভবনে আয়োজিত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাদের নিয়ে বৈঠকে এসব প্রসঙ্গে আলোচনা হয়।
বৈঠকে কাউন্সিলর পদে অংশ নিতে আগ্রহী কয়েকজন প্রার্থী বলেন, বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেয়ার বার্তা পাওয়া যাচ্ছিলো। কিন্তু সেই বার্তা ভুল প্রমাণ করে তারা অংশ নিচ্ছেন। দলীয়ভাবে বিশৃঙ্খল অবস্থায় থাকলেও প্রার্থী দেয়ার ক্ষেত্রে তারা কম প্রার্থী দিচ্ছে। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও কোতোয়ালি থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান, সূত্রাপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফী, সবুজবাগ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ ও ওয়ার্ড পর্যায় থেকে আবদুস সালাম ও আসলাম মাস্টার বক্তব্য রাখেন। বক্তারা তাদের বক্তব্যে, নিজেদের মধ্যে নানা বিভেদের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। এজন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপও কামনা করেন নেতারা। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য চলাকালীন সময়ে মাঠ পর্যায়ের নেতারা শেখ হাসিনার নির্দেশ অনুযায়ী দল-সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবেন বলে দলীয় সভানেত্রীকে আশ্বাস দেন। প্রধানমন্ত্রী মহানগর নেতাদের কাউন্সিলর পদে একক প্রার্থী দেয়ার নির্দেশ দিয়ে বলেন, এ ব্যাপারে একটি কমিটি করে দেয়া হয়েছে। আলাপ আলোচনার মাধ্যমে এ কমিটি প্রার্থী ঠিক করবে।