দু মোড়লের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই

মাথাভাঙ্গা মনিটর: সময়ের দু সেরা ওয়ানডে দল তারা-অস্ট্রেলিয়া ৱ্যাঙ্কিঙের এক নম্বরে আছে, ভারতের অবস্থান দুইয়ে। বদলে যাওয়া ক্রিকেট কুটনীতিতে প্রভাবশালী এ দু দল বিশ্বমঞ্চে এবার মুখোমুখি হচ্ছে সেমিফাইনালে। বিশ্বকাপের ইতিহাসেও অন্যতম সেরা দল এ দু দেশ। অস্ট্রেলিয়া ছয়বার ফাইনালে খেলে সর্বোচ্চ চারটি বিশ্বকাপ জিতেছে, আর তিনটি ফাইনালে খেলে তার দুটি জিতেছে ভারত। আজ বৃহস্পতিবার দু দেশের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের লড়াইটি হবে সহআয়োজক অস্ট্রেলিয়ার মাঠ সিডনিতে বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৯টায়। কোলকাতা, লন্ডন, জোহানেসবার্গ আর ব্রিজটাউন-চার চারটি দূরের আঙিনা জয় করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পর বহুদিন ক্রিকেট বিশ্ব শাসন করা অস্ট্রেলিয়া। তবে ১৯৯২ সালে নিজেদের দেশে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে হওয়া ফাইনালেই উঠতে পারেনি তারা। এবার আবার চেনা আঙিনায় বিশ্বকাপের ফাইনাল, নিজেদের আঙিনার ফাইনালে খেলার জন্য মরিয়া অস্ট্রেলিয়া। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডের সবুজ চত্বর সোনালি জার্সি আর ট্রফির রঙে রাঙানো দেখতে চায় দেশটির মানুষও। মাইকেল ক্লার্কের দল দেশের মানুষের এ প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবেন? মেলবোর্নে শিরোপা-স্বপ্ন পূরণ করার আগে তাদের পেরিয়ে আসতে হবে সিডনির বাধা। প্রত্যাশার এ চাপ কতোটা মেটাতে পারবে অস্ট্রেলিয়া? প্রতিপক্ষের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই সর্বজয়ী এক নেতার মতো ক্লার্ক ঘোষণা দেন, তার দলের জন্য এটা কোনো বিষয় নয়। প্রত্যাশা আছে, কারণ আমরা ৱ্যাঙ্কিঙের এক নম্বর দল। আর পারফর্ম করার কারণেই আপনার প্রতি প্রত্যাশা আছে। আমি মনে করি, আপনারা দেখছেন; ছেলেরা পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে এটা (চাপ) ভালো সামলেছে।

অন্যদিকে বিশ্বকাপের আগে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে নাকাল হওয়া মহেন্দ্র সিং ধোনির দল এবার অস্ট্রেলিয়া জয় করেই দেশে ফিরতে চায়। এটা ম্যাচের আগের দিনের সংবাদ সম্মেলনে দলের প্রতিনিধি হয়ে আসা রোহিত শর্মার কথাতেই স্পষ্ট। অবশ্যই আমরা জিততে পারি। এ নিয়ে কোনো প্রশ্নই নেই। দু দলের আত্মবিশ্বাসের পালেই জোর হাওয়া লেগে আছে। শক্তি-সামর্থ্য আর সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে দু দলের পার্থক্যও খুব বেশি নয়। বিশ্বকাপের আগে অস্ট্রেলিয়া সফরে ভারতের পেস আক্রমণ হালে পানি না পেলেও বিশ্বকাপ শুরু হতেই তাদের দেখা গেছে অন্য রূপে। টানা ৭টি ম্যাচ জিতে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠেছে ভারত।

এদিক দিয়ে বরং অস্ট্রেলিয়াই একটু পিছিয়ে। গ্রুপ পর্বে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হেরেছে তারা। এ বিশ্বকাপে পারফরম্যান্সের আলোকে অস্ট্রেলিয়া একটু পিছিয়ে। তবে দুই দেশের মুখোমুখি লড়াইয়ের পরিসংখ্যানে আবার তারা অনেকটাই এগিয়ে। এ পর্যন্ত দু দেশ ১১৭টি ওয়ানডেতে মুখোমুখি হয়েছে। এর মধ্যে ৬৭টিতেই জয় পায় অস্ট্রেলিয়া, ভারতের জয় ৪০টিতে; বাকি ১০টি ম্যাচের ফল হয়নি। পরিধিটা আরেকটু ছোট করে শুধু সিডনিতে দু দলের মুখোমুখি লড়াইয়ের ইতিহাসে নিয়ে আসলে ভারত ঢের পিছিয়ে। ৩৫ বছরে এই মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে একটি ম্যাচই শুধু জিতেছে ভারত। দু দল এখানে ১৪টি ম্যাচ খেলে; অস্ট্রেলিয়া জেতে ১২টি, একটি ম্যাচের ফল হয়নি।

ভারতের চেয়ে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং এ বিশ্বকাপে একটু অনুজ্জ্বল থাকলেও খুব বেশি পিছিয়ে নেই ডেভিড ওয়ার্নার, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল আর অ্যারন ফিঞ্চরা। তিন জনেই একটি করে শতক পেয়েছেন। স্টিভেন স্মিথ আর ক্লার্কও ভালো করছেন। বল হাতে মিচেল স্ট্যার্ক আছেন দারুণ ছন্দে। ৬ ম্যাচে ১৮ উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেরা বোলার তিনি। নিজেদের নামের প্রতি এখন পর্যন্ত সুবিচার করতে না পারা মিচেল জনসন আর জস হেইজেলউডরা এ ম্যাচে জ্বলে উঠলে ভারতের অদম্য ব্যাটিং লাইনআপকে ধসিয়ে দেয়া কঠিন হবে না অস্ট্রেলিয়ার। পরিসংখ্যান যাই বলুক, আঙিনা যারই হোক; বিশ্ব মঞ্চে শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের এ ম্যাচে দুই সেরা দল

Leave a comment