ভুয়া চিকিত্সক চিহ্নিত করার অভিযান চলছে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার: স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, ভুয়া চিকিত্সক এবং ক্লিনিক-হাসপাতাল চিহ্নিত করার অভিযান চলছে। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল আইন-২০১০ অনুযায়ী মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। আর হাসপাতালে রোগীর লাশ আটকিয়ে চিকিত্সা প্রদান বাবদ অর্থ আদায়ের কোনো অভিযোগ উত্থাপিত হলে তাত্ক্ষণিকভাবে সরেজমিনে তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। গতকাল সোমবার সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এ কথা বলেন। অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

জনসেবার নামে প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলো টাকা কামাইয়ের মেশিনে পরিণত হয়েছে, এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কি পদক্ষেপ নিচ্ছে, সরকারি  দলের সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের এমন সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক, নাসিং হোম ইত্যাদি পরিচালনার জন্য ১৯৮২ সালে জারিকৃত একটি অর্ডিন্যান্স রয়েছে। ওই অর্ডিন্যান্সেই চিকিত্সা পরামর্শ ফি ধার্য করা আছে। তাই এটি যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে বেসরকারি চিকিত্সা সেবা আইন নামে আইন প্রণয়নের কার্যক্রম চলছে।

সংসদ সদস্য আবদুল মান্নানসহ কয়েক এমপির প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্বীকার করে বলেন, ৬ হাজার নতুন ডাক্তার নিয়োগের ফলে গ্রামীণ অঞ্চলে চিকিত্সক সঙ্কট না থাকলেও অ্যানেসথেসিয়াসহ বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকের সংকট রয়েছে। আমরা চিকিত্সকদের ট্রেনিং দিয়ে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করছি। আর কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর সমস্যা সমাধানেরও নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জের ৩শ শয্যার জেলা হাসপাতালাকে মেডিকেল কলেজে উন্নীত করার বিষয়ে সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, কোনো হাসপাতালকে সরকারি মেডিকেল কলেজে উন্নীত করার বিষয়টি সম্পূর্ণ সরকারি সিদ্ধান্তের ব্যাপার। সিদ্ধান্ত হলে নারায়ণগঞ্জ ও আমাদের নেতা তোফায়েল আহমদের এলাকা ভোলার হাসপাতালকে মেডিকেল কলেজে উন্নীত করার বিষয়টি অগ্রাধিকার পাবে।

একাধিক সংসদ সদস্যের তাদের নির্বাচনী এলাকার হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্সের দাবির প্রেক্ষিতে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, প্রায় একশ নতুন অ্যাম্বুলেন্স আনা হচ্ছে; কিন্তু প্রয়োজনীয় অর্থাভাবে তা দ্রুত আনা সম্ভব হচ্ছে না।

সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর: দেশে অন্তঃসত্ত্বা মা এবং পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য আর্থিক প্রণোদনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। প্রাথমিকভাবে সাতটি জেলায় এই কর্মসূচি শুরু হবে আগামী মাসে। এ লক্ষ্যে গতকাল সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. দীন মো. নূরুল হক, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক নূর হোসেন তালুকদার, স্থানীয় সরকার বিভাগের এম ই ই শাখার মহাপরিচালক জুয়েনা আজিম সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, স্বাস্থ্য সচিব সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুল মালেক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।