বিএনপিসহ সব দল সিটি নির্বাচনে আসবে

স্টাফ রিপোর্টার: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আসন্ন ঢাকা দক্ষিণ, উত্তর ও চট্টগ্রাম এই ৩ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপিসহ সব দল অংশ নেবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, সব দল নির্বাচনে আসবে বলেই মনে হচ্ছে। দেখা যাক মানুষ নির্বাচন চায়, না আন্দোলন চায়। ভোটাধিকার প্রয়োগ করে জনগণ তাদের মতের প্রতিফলন ঘটাবেন এটাই সবার প্রত্যাশা। গতকাল সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বৈঠক সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

সূত্র জানায়, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিল পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত একক প্রার্থীর বিজয়ে কাজ করার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, দল যাকে সমর্থন দিবে তার পক্ষেই কাজ করতে হবে। বৈঠকে মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্য বলেন, বিএনপি নির্বাচনে আসলে নাশকতা সহ্য করা হবে না। একদিকে নির্বাচনে অংশ নিবে, অন্যদিকে সহিংসতা চালাবে এটা তো হতে পারে না। নির্বাচনে আসলে বোমাবাজি বন্ধ করতে হবে। যেখানে নির্বাচন হচ্ছে সেখানে কর্মসূচি দেবে না, আর সারা দেশে কর্মসূচি থাকবে বা বিশৃঙ্খলা করবে- এটা সহ্য করা হবে না।ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রার্থী নিয়ে বৈঠকে দীর্ঘ আলোচনা হয়। সাঈদ খোকন ও হাজী মোহাম্মদ সেলিমের মধ্যে কে ভালো প্রার্থী হবে, কার বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, এ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। উভয় প্রার্থীর পক্ষে-বিপক্ষে কথা হয়েছে। দুজন প্রার্থী থাকলে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রার্থীর নিশ্চিত বিজয় নিয়ে কেউ কেউ উদ্বেগ প্রকাশ করেন। সূত্র অনুযায়ী, বৈঠকে নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান ঢাকা দক্ষিণের দল সমর্থিত প্রার্থী নিয়ে নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন। একই সময় খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামও শাজাহান খানকে সমর্থন করে কথা বলেন। পরে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক দক্ষিণের প্রার্থী হিসেবে হাজি মোহাম্মদ সেলিম মন্দ না বলেও মন্তব্য করেন। তারা উভয়ই ঢাকা দক্ষিণে প্রার্থীর যোগ্যতা যাচাই-বাচাই করে মনোনয়ন দেয়ার পক্ষে মত দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবার মতামত শুনলেও এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেননি। বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে গিয়ে কাউন্সিলর প্রার্থী মনোনয়নের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন তিনি। তিনি একক কাউন্সিলর প্রার্থী সমর্থনে কয়েকজন সিনিয়র নেতাকে দায়িত্ব দেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা হলেন- আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম। তাদের সঙ্গে মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এমএ আজিজ এবং জাপান সফরে থাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম যোগ দেবেন বলে জানা গেছে।

প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে যথাক্রমে সাঈদ খোকন ও আনিসুল হককে কাজ করার নির্দেশ দেন। ওই দিন রাতে সাঈদ খোকন ও আনিসুল হক প্রধানমন্ত্রীর সাথে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে দেখা করেন। অন্যদিকে ২০ মার্চ গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সাথে কেন্দ্রীয় ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আ.জ.ম নাসিরকে দল সমর্থিত একক প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়।