৪ কাউন পাউয়ারটিলার ভর্তি বিচুলি সড়কে চলে ধীরে

বিচির ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে তাতে কৃষকরা বাণিজ্যিক পণ্য হিসেবে লাভবান হচ্ছে

 

তাছির আহমেদ: ৪ আটি সমান ১ গণ্ডা, ২০ গণ্ডায় ১ পোন, ১৬ পোনে ১ কাউন। ৪ কাউন বিচুলি নিয়ে দৈত্তাকার পাউয়ারটিলার পথ চলে ধীরে ধীরে। গতকাল রাত-দুপুরে দামুড়হুদার বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এক চায়ের দোকানে এ কথা বলেন, জীবননগর উপজেলার মহেশপুর গ্রামের আবুল হাসেমের ছেলে মহিদুল ইসলাম। গ্রাম থেকে ৪ পাউয়ারটিলার ৪ কাউন করে মোট ১৬ কাউন বিচুলি নিয়ে তারা বিক্রির উদ্দেশে হাটবোয়ালিয়ায় রওনা হন।

জীবননগর মহেশপুরের মহিদুল আরো জানান, তিনি একজন বিচুলির পেশাদারী। তাদের আশপাশ গ্রাম থেকে ৭-৮শ টাকা দরে ১ কাউন বিচুলি কেনা পড়ে। কয়েক কাউন বিচুলির পর সেগুলো পাউয়ারটিলারে নিয়ে তারা বিক্রির উদ্দেশে যান আলমডাঙ্গার মিলবাজার এলাকার শফির কাছে। কাউন প্রতি বর্তমান দর ১৩শ টাকা, আর এ পাউয়ারটিলারের ভাড়া ২ হাজার ৪শ টাকা। এতে অভারলোড পড়ায় তারা রাতের আঁধারে আস্তে আস্তে যান। তাতে ইঞ্জিন গরম হলে মাঝে মাঝে একটু ঠাণ্ডা পানি দিলে ভালো হয়। এ বিচুলির ব্যবসা বেশ সে কয়েক বছর ধরে করেন। একই গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে ইকরামুল বলে, এ বিচুলি দিয়ে তারা তামাক পেড়ায়, আবার কেউ কেউ গো-খাদ্য হিসেবেও ব্যবহার করে।

বিচুলি জেলা শহর পেরিয়ে ট্রাকযোগে দেশের বিভিন্ন স্থানেও যাচ্ছে। তাতে কৃষকরা বাণিজ্যিক পণ্য হিসেবে কিছুটা লাভবান হচ্ছে। কোনো কোনো গ্রামের ভ্যানচালকেরা এ পণ্যকে পেশা হিসেবেও বেছে নিয়েছে। প্রতিদিন সকালে সূর্য ওঠার আগে এদেরকে ফেরি করে বিচুলি বিক্রি করতে দেখা যায়। একটি সময় ছিলো যখন গ্রামের প্রত্যেক গৃহস্থরা তাদের জমি থেকে ধানগাছ কেটে বাড়িতে এনে তা ঝাড়াই মাড়াই শেষে এ সকল ধানগাছ বা বিচুলিগুলো বাড়ির আঙিনার পাশে গাদা করে রাখতো। বছরভর তাদের গো-খাদ্য আর ধান সিদ্ধের কাজে ব্যবহার করবে বলে। এখানে গাদার আকার দেখে অনেকে অনুমান করতো এ গৃহস্থের আর্থিক আকার। এখন গৃহস্থের বাড়িতে তেমন আর বড় বিচুলির গাদা চোখে পড়ে না।