বিশ্বকাপ ক্রিকেটে ভারতের থাকা না থাকার ওপর আইসিসির লাভ-ক্ষতির অনেক কিছুই নির্ভর করে। প্রশ্ন উঠেছে, নিজেদের স্বার্থেই কি আইসিসি আম্পায়ারদের ওপর প্রভাব বিস্তার করেছে? ভারতের বিপক্ষে করা বাংলাদেশের রিভিউগুলো অনেক ক্লোজশর্টে দেখা হলেও বাংলাদেশের বেলায় তা একেবারেই উল্টো ছিলো! কেন? আম্পায়ারদের ওপর কি ওপরের ইশারা ছিলো যে ভারতকে রাখতেই হবে টুর্নামেন্টে? এসব প্রশ্নের পাশাপাশি বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ইতিহাসে গতকালের দিনটি লজ্জাতম দিন হিসেবেই আখ্যা দিতে শুরু করেছেন ক্রিকেটমোদী দুনিয়া। যা ঘটেছে তা আর কোনো দলের ক্ষেত্রেই যাতে না ঘটে তা নিশ্চিত করার দাবি অবশ্যই আমলে নেয়া দরকার।
বাংলাদেশ-ভারত কোয়ার্টার ফাইনালে সারাবিশ্ব জুড়ে যে আবেগ, জমজমাট ম্যাচ দেখার যে প্রত্যাশা ছিলো ক্রিকেটপ্রেমীদের তা থেকে বঞ্চিত হয়েছে ক্রিকেটপাগল প্রায় প্রত্যোকে। অবশ্যই ভারতীয় তথা ভারত বাদে। বাংলাদেশ ১০৯ রানে হারার পরও টাইগারদের কেউ কটূকথা তো দূরে থাক উল্টো বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সদস্যদের সহানুভূতি জানাচ্ছে ক্রিকেট পাগল বাংলাদেশিরা। যা অতীতে কখনই দেখা যায়নি। কারণ, মাঠে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ১১ জনের সাথে আর কারা ছিলো তা এ ম্যাচ যারা সরাসরি দেখেছেন তাদের কাছে মোটেই অস্পষ্ট নয়। ঠিক যখনই রোহিত শর্মার ইনিংস কেন দীর্ঘ হলো তা যেমন পরিষ্কার তেমনই ওর ব্যাটিং তখন থামলে কি স্কোর কোন পর্যায়ে উঠতো? ক্রিকেট বিশেষজ্ঞই নয়, ক্রিকেটের সাধারণ দর্শকদের কাছেও অঙ্কটা খুব একটা গোলমেলে নয়। মাঠে যদি কোনো আম্পায়ারের কৃপা থাকে তাহলে আইসিসির নিরপেক্ষতাই যে প্রশ্নের মধ্যে পড়ে তা নতুন করে বলার অবকাশ রাখে না। বিপরীতে বাংলাদেশের ইনিংসে বিশ্বকাপ ক্রিকেটে ঝড় উঠানো মাহমুদুল্লাও কি বাজে আম্পায়ারিঙের শিকার নয়? এ প্রশ্নের পক্ষে বিপক্ষে যুক্তি থাকতেই পারে, এরপরও গতকালের খেলার পর গণমাধ্যমে যে বিষয়টি ফুটে ওঠেছে তা শুধু বাজে আম্পায়রিংই নয়, পক্ষপাতিত্বের নির্লজ্জ এক উদাহরণ। অবশ্যই এবারের বিশ্বকাট ক্রিকেটের আয়োজনে বাংলাদেশের তুলনায় ভারত অনেক ভালো খেলেছে, ভালো অবস্থানেও রয়েছে। এ অবস্থানে থেকেও আম্পায়াররা বাজে সিদ্ধান্ত কি ভারতের জয়ে কালিমা মাখেনি? যে রমিজ রাজা সুযোগ পেলেই বাংলাদেশকে নিয়ে কটাক্ষ করে সেই রমিজ রাজাও বিস্ময় চেপে রাখতে না পেরে আইসিসিকে কটাক্ষ করে বলেছেন, ওয়েলডান ইন্ডিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। ভারতের ভিভিএস লক্ষণ, অস্ট্রেলিয়ার শেন ওয়ার্ন, পাকিস্তানের শোয়েব আক্তারের মতো ক্রিকেটাররা কোনো রাখঢাক না রেখেই আম্পায়ারদের বাজে সিদ্ধান্তে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। বাংলাদেশ-ভারতের খেলার ইভেন্ট নিয়েও আইসিসির বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল ওঠে খেলার কয়েক দিন আগে থেকেই। তারই লজ্জার বহির্প্রকাশ ঘটলো উত্তেজনাপূর্ণ খেলায়।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দল অতীতে অনেকবার বাজে আম্পায়ারিঙের শিকার হয়েছে। কিন্তু বিশ্বকাপের মতো মেগা ইভেন্ট যেখানে ডু অর ডাই ম্যাচ সেখানে বাজে আম্পায়ারিং কোনো যুক্তিতেই মেনে নেয়া যায় না। প্রযুক্তির এতো ব্যবহার সত্ত্বেও যখন বাজে আম্পায়ারিং হয় তখন স্বভাবতই প্রশ্ন এসে যায় আইসিসির প্রভাবেই কি এমনটা হয়েছে? সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন, যে বাজে আম্পায়ারিঙের শিকার হয়েছে বাংলাদেশ সে দায়ভার কার? আইসিসির নাকি আম্পায়ারদের? যদি আম্পায়ারদের হয়ে থাকে তাহলে আম্পায়াররা কি প্রাপ্য শাস্তি পাবেন? বিপরীতে আইসিসির ইশারায় যদি আম্পায়াররা বাজে রেফারিং করে তাহলে আইসিসির বিচার করবে কে?