স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসাইন বলেছেন, জেলার সকল ইউনিয়নে টেলিটকের নেটওয়ার্ক চালু ও গতিশীল করতে হবে। যে ইউনিয়ন থেকে যতো বেশি নারী নাম রেজিস্ট্রেশন করবেন, সেই ইউনিয়ন থেকে ততো বেশি নারী বিদেশে যেতে পারবেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার (ইউডিসি) থেকে বিদেশে গমনেচ্ছুক নারী কর্মীদের অনলাইন রেজিস্ট্রেশনের বিষয়ে এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক উপরোক্ত মন্তব্য করেন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আনজুমান আরার সভাপতিত্বে কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশনের নীতিমালা ও নিয়মকানুন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. আব্দুর রাজ্জাক। এ সময় জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারী পরিচালক রাহেনুল ইসলাম, টেলিটকের প্রতিনিধি শাফিরুল ইসলাম, বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, সচিব ও ইউডিসির উদ্যোক্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলা ২০১৫ বিজয়ী ১৩ জনকে ক্রেস্ট ও স্মার্ট মোবাইলফোন উপহার দেয়া হয়। পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন- সদ্য বিদায়ী অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মল্লিক সাঈদ মাহবুব, দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদুর রহমান, সহকারী কমিশনার (আইসিটি) সাব্বির রাহমান সানি, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী প্রোগ্রামার সুবর্ণা রাণী সরকার, তিতুদহ ইউনিয়ন পরিষদ সচিব মো. ফয়জুর রহমান, আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কার্যালয়ের উপজেলা টেকনিশিয়ান মো. রাকিব উদ্দিন, চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, দামুড়হুদা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও জীবননগর শাপলাকলি আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সদর উপজেলার মোমিনপুর ও তিতুদহ এবং জীবননগর উপজেলার উথলী ও আলমডাঙ্গা উপজেলার খাসকররা ইউপি চেয়ারম্যান।
এদিকে কর্মশালায় জানানো হয়, হাউজকিপারসহ নির্ধারিত ৯টি পেশার জন্য সৌদি আরবসহ বিদেশে গমনেচ্ছু আগ্রহী নারী কর্মীরা আবেদন করতে পারবেন। একযোগে জেলার চারটি পৌরসভা, ৩৫টি ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার এবং জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চলবে। চুয়াডাঙ্গা জেলায় আগামী ২৪ মার্চ মঙ্গলবার থেকে পাঁচ দিনব্যাপি অনলাইন রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম শুরু হচ্ছে।
অনলাইনে রেজিস্ট্রেশনের জন্য প্রতিজনে খরচ গুনতে হবে ৩শ টাকা। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চলবে। রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম শেষ হবে ২৮ মার্চ শনিবার। ২৫ থেকে ৪৫ বছর বয়সী নারী কর্মীরা সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জর্ডান ও লেবাননের জন্য হাউজকিপার, কেয়ার গিভার, বেবি সিটার, মালি, গার্ড, ক্লিনার, ড্রাইভার ও কুক পেশায় আবেদন করতে পারবেন। তবে কেয়ার গিভার, ড্রাইভার ও বেবি সিটার পদে আগ্রহী প্রার্থীদের কমপক্ষে এসএসসি পাস হতে হবে।
এছাড়া যাদের বয়স ১৮ থেকে ৪৫ বছর তারা গার্মেন্টস পেশায় দক্ষ, আধা দক্ষ ও অদক্ষ কর্মী হিসেবে মরিশাস, জর্ডান ও মিশরে চাকরি করতে পারবেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সৌদি আরব সরকার বাংলাদেশি কর্মীদের শ্রমবাজার উন্মুক্ত করায় প্রথম পর্যায়ে প্রতি মাসে ১০ হাজার নারী কর্মী নিয়োগের ইচ্ছা ব্যক্ত করেছে। আগ্রহীদের এমআরপি পাসপোর্ট ও দেশের মধ্যে যাতায়াতের খরচ ছাড়া সকল খরচ নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ বহন করবে। এক্ষেত্রে নির্বাচিতদের দু বছরের জন্য চুক্তি হবে এবং হাউজকিপারের জন্য বেতন দেয়া হবে ১৭ হাজার টাকা। কোনো নারীকর্মী দু বছরের মধ্যে চুক্তি ভঙ্গ করে দেশে ফিরে এলে তাকে প্রশিক্ষণ ব্যয়, ভিসা প্রসেসিং, বিমানভাড়া আসা-যাওয়া বাবদ ১ লাখ ৫০ হাজার ফেরত দিতে হবে। বিদেশে যাওয়ার আগে তার অভিভাবকদের কাছ থেকে এ সংক্রান্ত একটি অঙ্গীকারনামা নেয়া হবে।
অনলাইন রেজিস্ট্রেশনে টেলিটকের জন্য সরকারী রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ ২শ টাকা ও ফরম পূরণে সহায়তা করার জন্য উদ্যোক্তাকে ১শ টাকা সার্ভিস চার্জ দিতে হবে। এছাড়া এমআরপি পাসপোর্ট বা জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন সনদ থাকতে হবে। শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র, প্রশিক্ষণের কাগজপত্র ও অভিজ্ঞতার সনদপত্র যদি থাকে জমা দিতে হবে। এছাড়া পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদে কর্তৃক চারিত্রিক সনদপত্র জমা দিতে হবে।
চুয়াডাঙ্গায় ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তাদের কর্মশালায় জেলা প্রশাসক বললেন
