খেলা, ও আর এমন কী! খেলা নিয়ে অতো মাতামাতিই বা কেন? কেউ কেউ এরকম প্রশ্ন তুলে বলতেই পারেন দেশে যখন রাজনৈতিক অস্থিরতা, সর্বক্ষেত্রেই অনিশ্চয়তা তখন বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ দলের কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠা কতোটুকুই আর স্বস্তিকর! যতোটুকু স্বস্তিকর নয়, তার চেয়ে অনেক অনেক বেশি বিশ্ববাসীর সামনে ক্রিকেটের মাধ্যমে পরিচিত লাভ। আর একের পর এক জয়লাভ? দেশবাসীকে শুধু ঐক্যবদ্ধই করে না, জাতীয়তাবাদ জাগিয়ে তুলে দেশাত্মপ্রেমে আবদ্ধ করে। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল এবারের বিশ্বকাপে অনেকটাই তা পেরেছে। আজকের খেলায় ভারতকে হারিয়ে সেমিফাইনালে উন্নীত হলে, তা হবে ইতিহাস।
ম্যাচটি ঘিরে দেশের মানুষ যে অধীর অপেক্ষায়, সেটা কার না জানা? মেলবোর্নে বসেও দেশের উত্তাপ পাচ্ছেন সাকিবরা। দল ভালো খেললে খেলোয়াড়দের ওপর দেশবাসীর প্রত্যাশা বাড়ে। এটা দলের কাছে চাপ নয়, বরঞ্চ প্রেরণা। ভারতীয় ব্যাটিঙের যে ভারী ভারী নাম সেগুলো যাতে কোনোভাবে ক্রিকেটারদের অজান্তে মনের মধ্যে ঢুকে না পড়ে সেজন্য সবসময় দলকে চাঙ্গা করার কাজ হাতে নিয়েছেন মাশরাফি। লাংহ্যাম হোটেলে একই সাথে আছে দুটি দল। খাবার টেবিলে রায়না, কোহলিদের সাথে দেখা হচ্ছে তামিমদের। কথাও হচ্ছে টুকটাক; কিন্তু ওটুকুই। ভারতীয় দলের ওপর কঠোর নজরদারি রয়েছে টিম ম্যানেজমেন্টের। আসলে এ ম্যাচটিতে প্রচণ্ড স্নায়ুর চাপে আছে ভারতীয় দল। সে কারণেই মাঠের বাইরের সব হাওয়া থেকে গা বাঁচিয়ে চলছেন ধোনিরা। সাকিবরাও রয়েছেন স্নায়ু শক্ত করে।
বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ জড়তা কাটিয়ে ফেলেছে। প্রথমবারের মতো আজ জাতীয় ক্রিকেট দল খেলছে বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে। এ সেমিফাইনালে ওঠার স্বপ্ন নিয়েই আজ বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে নয়টায় মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ভারতের মুখোমুখি হবে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। আকাশ কি আজ মেঘলা থাকবে? সূর্য কি বিলম্বে মুখ দেখাবে? অনেক কিছুই হতে পারে আজ! বৃষ্টি হতে পারে, রোদ উঠতে পারে; কিন্তু একটা ব্যাপারের ব্যত্যয় ঘটেনি। আজ বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ এক স্বপ্ন নিয়েই ঘুম থেকে জেগে উঠেছে! আর সেটা হলো- ভারতকে হারিয়ে ইতিহাসের আরেক প্রাচীর ধসিয়ে দেয়ার স্বপ্ন! বাংলাদেশ দলের জন্য শুভ কামনা।