ভাতিজার কোপে নিহত চাচার মৃতদেহ ময়নাতদন্ত শেষে দাফন

জীবননগরের আন্দুলবাড়িয়ায় শোক আর গুজব ছিলো দিনভর

 

আন্দুলবাড়িয়া প্রতিনিধি: জীবননগরের আন্দুলবাড়িয়া মিস্ত্রিপাড়ায় চাচা-ভাতিজার কোপাকুপিতে নিহত আব্দুস সালাম ওরফে কোপা সালামের লাশ ময়না তদন্ত শেষে দাফন কাজ শেষে হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল বেলা ৩টার দিকে তার লাশ বাড়িতে এসে পৌঁছুলে স্বজনদের কান্নায় এলাকার বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তার লাশ মিস্ত্রিপাড়া গোরস্তানে জানাজা শেষে দাফন করা হয়। অপরদিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত ভাতিজা শহিদুল ইসলামের মুত্যর গুজব দিনভর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। সত্যতা মেলেনি। তিনি চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে মুত্যর সাথে পাজ্ঞা লড়ছেন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।

পুলিশ ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীগণ সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়িয়া মিস্ত্রিপাড়ার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে আবুল কালাম (৫২) ও তার ছোট ভাই আব্দুস সালাম (৪২) চাচাতো ভাই মৃত দাউদ হোসেনের ছেলে শহিদুল ইসলাম (৪০) একই সাথে গত সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে গ্রামের খালপাড়ার তেঁতুলতলার আব্দুল বারিকের চা-মুদি দোকানে উপস্থিত হন। সেখানে চা-পান শেষে আব্দুস সালামের নিকট দোকানির পূর্বের বকেয়া ১৫২ টাকা পাওনা রয়েছে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীগণ বলছেন, নিহত সালাম খাতাপত্র দেখে ১৫২ টাকা পকেট থেকে বের করে ভাতিজা শহিদুল ইসলামের হাতে দিয়ে দোকানিকে দিতে বলেন। শহিদুল টাকা হাতে করে দোকানদারকে দিতে অপরাগতা প্রকাশ করায় বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে কালাম ও তার সহোদর সালাম ক্ষুদ্ধ হয়ে ভাতিজা শহিদুল ইসলামের ওপর এলোপাতাড়ি হামলা চালায়। এ সময় উপস্থিত কয়েকজন প্রতিবাদ করলে কালাম-সালাম দু ভাই তাদের ওপর রুখে যায়। শহিদুল মারধোর খেয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেয়। সূত্র জানান, এ সময় কালামই তার ছোট ভাই সালামকে জোরপূর্বক বাড়ি নিয়ে যাবার চেষ্টা চালায়। সালাম বাড়িতে যাবে না বলে বড় ভাই কালামের পা চেপে ধরে কান্নাকাটি করে। এরই এক পর্য়ায়ে কালাম তার ছোট ভাই সালামকে জোর করে বাড়িতে নিয়ে যাই। সাথে ছিলো খালপাড়ার মণ্ডল হজরত আলী। বাড়িতে গিয়েই শহিদুলের উঠোনে সালাম-শহিদুলের কোপাকুপিতে চাচা-ভাতিজা নিহত আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় কালাম ও মণ্ডল হজরত আলী ছিলো কোথায়। এ প্রশ্ন এখন সাধারণ মানুষের মাঝে ঘুরপাক খাচ্ছে। সূত্র জানায়, কালাম, সালাম ও শহিদুল এলাকার চিহ্নিত তাড়িখোর। ঘটনার সময় তারা তাড়িখানা থেকে নেশা করে ফিরছিলো। নেশার ঘোরে ৩ জন বুদ হয়েছিলো। স্থানীয়রা এ অভিযোগ তুলে মন্তব্য করতে গিয়ে বলছেন, নেশায় বিভোর অবস্থায় এ কোপাকুপির ঘটনা ঘটিয়েছে বলে দাবি করছেন। এছাড়া ও সালামের বিরুদ্ধে একাধিক মানুষকে কোপানোর অভিযোগ রয়েছে। কোনো ঘটনা ঘটলেই কোপানোই ছিলো তার কাজ। ঘটনার শিকার অনেকে পঙ্গু হয়ে জীবনযাপন করছেন। এ কথা এখন এলাকার মানুষের মুখেমুখে। অনেকে তার ভয়ে আতঙ্কিত ছিলো। মানুষ কোপানোর অভিযোগে তার নাম এলাকায় কোপা সালাম নামে আলোচিত হয়ে ওঠে। গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিনিয়ার সহকারী পুলিশ সুপার ছুফিউল্লা ও জীবননগর থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই লুৎফুর কবীর ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছেন। এ ব্যাপারে নিহত আব্দুস সালামের বড় ভাই আবুল কালাম বাদী হয়ে গতকাল জীবননগর থানায় তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহাপুর ক্যাম্প ইনচার্জ এসআই ওলিয়ার রহমান অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে কয়েক দফা অভিযন চালান। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কাউকে পুলিশ ধরতে পারেনি।

Leave a comment