সারা দেশে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৯

স্টাফ রিপোর্টার: গতকাল সারাদেশে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ৯ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে পটুয়াখালীর গলাচিপায় ২ জন, মুন্সীগঞ্জে ১ জন, ত্রিশালে ১ এবং রোববার টেকনাফে দুর্ঘটনায় আহত আরও ২ যাত্রীর মৃত্যু হয়।

মুন্সিগঞ্জের মুক্তারপুরে মো. ইউনুস (৩২) নামে এক দিনমজুরের মৃত্যু হয়েছে। নিহত ইউনুস মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার চরবারেখা গ্রামের মো. শাহজাহান ব্যাপারীর ছেলে। গতকাল
দেওয়ান কোল্ড  স্টোরেজে আলু ওঠাতে গিয়ে তার মৃত্যু হয়।

মুক্তারপুর নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মোশারফ হোসেন বলেন, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে মাচা ভেঙে আলুর বস্তার নিচে চাপা পড়ে মো. ইউনুস। পরে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন। এব্যাপারে মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।

ময়মনসিংহ ও ত্রিশাল প্রতিনিধি জানান, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বালু  বোঝাই ট্রাক উল্টে চালক নিহত হয়েছেন। গতকাল ভোররাতে ত্রিশালের চেলেরঘাট রায়মনি নামকস্থানে এ ঘটনা ঘটে। নিহতের নাম রিয়াজ উদ্দিন (৪৫), গফরগাঁও উপজেলার মশাখালি ইউনিয়নে তার বাড়ি ও তিনি বিডিআরের সাবেক সদস্য বলেও জানা যায়।

ত্রিশাল থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) চাঁদ মিয়া বলেন, সোমবার ভোরবেলায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। সড়ক নির্মাণ সামগ্রীর সঙ্গে ধাক্কা  খেয়ে উল্টে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই চালকের মৃত্যু হয়। নিহতের লাশ উদ্ধার করে থানায়  নেয়া হয়েছে।

গত রোববার টেকনাফে সড়ক দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে গতকাল আরও দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলেন-হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমুরা এলাকার মৃত বাদশা মিয়ার ছেলে আলী জোহা (৬২) ও হ্নীলা ইউনিয়নের নয়াপাড়া এলাকার জাফর আলমের পুত্র মোসলেম উদ্দিন (১৬)। রোববার সন্ধ্যায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আলী জোহা ও রাত সাড়ে ১০টার দিকে চমেক হাসপাতালে মারা যায় মোসলেম। এদের মধ্যে মোসলেম হ্নীলা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্র। এর আগে একই দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলে প্রাণ হারিয়েছিল নুরজাহান ও ইদ্রিস নামে দুই যাত্রী, আহত হয়েছিল নারী-শিশুসহ অন্তত আরো ১৮ জন।

তরমুজ বোঝাই ট্রাক্টর ট্রলি উল্টে গলাচিপায় আনিস ও সুমন নামের ২ শ্রমিক নিহত ও ২ জন আহত হয়েছেন। গতকাল সকালে উপজেলার উত্তর চরবিশ্বাস গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চর কাজল-চরবিশ্বাস সড়কের ক্লোজার বাজারের দক্ষিণপাশে দ্রুতগতিতে মোড় ঘোরার সময় ট্রাক্টর ট্রলিটি উল্টে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আহত শহিদুল বয়াতি ও ছালাম মৃধাকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে রবিউল ইসলাম নামের এক বাস মালিক নিহত হয়েছেন। গতকাল গাইবান্ধা বাস টার্মিনাল সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গাইবান্ধা সদর থানার ওসি রাজিউর রহমান বলেন, সোমবার ১২টার দিকে তূর্য এন্টারপ্রাইজ নামের এক পরিবহন মালিককে এসপি অফিসের সামনে ট্রাক চাপা দেয়। তেলপাম্পে ট্রাক রেখে ড্রাইভার ও হেলপার পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার ও ট্রাকটি আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

মালবাহী ট্রাকের ধাক্কায় বগুড়ার শেরপুরে মকবুল হোসেন (৪০) নামে এক ভটভটি চালকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামের নুর মোহাম্মদের ছেলে। এ ঘটনায় আরও ৩ ধান ব্যবসায়ী আহত হন। গতকাল বেলা সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের মির্জাপুরের কৃষ্ণপুর এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

বগুড়ার শেরপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাজু কামাল বলেন, ধান বিক্রি শেষে ধান ব্যবসায়ীরা ঢাকা-বগুড়া মহাসড়ক হয়ে মির্জাপুরের দিকে যাচ্ছিলেন। কৃষ্ণপুর এলাকায় পৌঁছলে পেছন থেকে আসা একটি মালবাহী ট্রাক ভটভটিকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই ভটভটির চালক মকবুল মারা যান। আর আহত হন ভটভটিতে থাকা উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের আমিনপুর গ্রামের মোতাহার আলীর ছেলে রনজু সরকার (১৮), একই গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দিনের ছেলে জহুরুল ইসলাম (২২) ও জয়নাল আবেদীনের ছেলে গোলাম রসুল (৩০), ছোনকার সাতারা গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দিনের ছেলে জসমত আলী (৫৫)। তারা সকলেই ধান ব্যবসায়ী। আহতদের মধ্যে জসমত আলীকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (শজিমেক) ভর্তি করা হয়েছে।
সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, রাস্তা পারাপারের সময় কাভার্ডভ্যানের চাকায় পিষ্ট হয়ে কাঁচপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় জাহাঙ্গীর  হোসেন ভূঁইয়া (৪৫) নামে এক পথচারী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় পুলিশ ঘাতক চালক ও গাড়ি আটক করতে পারেনি।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ওসি মাহবুবুর রহমান বলেন, উপজেলার কাঁচপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় রাস্তা পারাপারের সময় কাভার্ডভ্যানের চাকায় পিষ্ট হয়ে জাহাঙ্গীর হোসেন ভূঁইয়া নামের একজন নিহত হয়েছেন। নিহত জাহাঙ্গীর আলম সাদিপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মৃত ফিরোজ মিয়ার ছেলে।