আসামির অনুপস্থিতিতে হুলিয়া জারি কীভাবে হয়- অ্যাড. তুহিন আহমেদ

পলাতক আসামিকে নির্দিষ্ট স্থানে ও নির্ধারিত সময়ে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়ে ফৌজদারি কার্যবিধির ৮৭ ধারায় অধীনে আদালত যে ঘোষণা জারি করেন তাকে হুলিয়া বলে। তবে এ সময় সীমা ঘোষণার প্রকাশের তারিখ থেকে ৩০ দিনের কম হবে না। সমন জারি ব্যর্থ হলে ওয়ারেন্ট জারি করতে হয়। ওয়ারেন্ট জারি ব্যর্থ হলে হুলিয়া জারি করতে হয়।

১. ওই ব্যক্তি সাধারণত যেখানে বাস করে সেই শহরে বা গ্রামের কোনো প্রকাশ্য স্থানে ওই ঘোষণাপত্রটি পড়ে শোনাতে হবে। ২. যে গৃহ বা বাড়িতে ওই ব্যক্তি বাস করে সেই গৃহ বা বাড়ি কোনো প্রকাশ্য স্থানে বা শহরে বা গ্রামের কোনো প্রকাশ্য স্থানে ওই হুলিয়াপত্রটি টানিয়ে দিতে হবে এবং ৩. সংশ্লিষ্ট আদালত গৃহের কোনো প্রকাশ্য স্থানে ওই ঘোষণাপত্রের নকল টানিয়ে দিতে হবে। মনে রাখতে হবে, হুলিয়া জারি করার সময় আদালত সংশ্লিষ্ট আসামির স্থাবর ও অস্থাবর উভয় শ্রেণির সম্পত্তি ক্রোক করতে পারেন। ক্রোক সম্পত্তি সরকারি হেফাজতে থাকে। ক্রোক সম্পত্তির রিসিভার নিয়োগ করা যায়। যে পলাতক আসামির সম্পত্তি ক্রোক করা হবে তিনি যদি আদালতের নির্দেশিত সময়ের মধ্যে হাজির হয়ে যান তাহলে তার সম্পত্তি ক্রোক থেকে মুক্ত করে দেবেন। তবে ক্রোক সম্পত্তি দ্রুত ও স্বাভাবিকভাবে ধ্বংসশীল, পচনশীল হলে আদালত বিক্রির ব্যবস্থা করতে পারেন। যেক্ষেত্রে উপরোক্ত বিধান পালন করার পর আদালতের এরূপ বিশ্বাস করার কারণ থাকে যে, আসামিকে যাতে গ্রেফতার ও বিচার সোপর্দ না করা যায় সেজন্য সে ফেরারি হয়েছে বা আত্মগোপন করেছে এবং তাকে গ্রেফতার করতে পারার আশু সম্ভাবনা নেই, তাহলে নালিশি অপরাধ আমলে গ্রহণকারী আদালতে কমপক্ষে দুটি বহুল প্রচারিত জাতীয় বাংলা দৈনিক সংবাদপত্রে প্রচারিত আদেশ দ্বারা ওই ব্যক্তিকে আদেশে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেই আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেবেন এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ওই নির্দেশ পালনে ব্যর্থ হলে সেই ব্যক্তি অনুপস্থিতিতেই তার বিচার হবে।

উল্লেখ্য, আসামি হাজির হওয়ার পর পলাতক হলে বা জামিনে মুক্তি পেয়ে পলাতক হলে পেপার বিজ্ঞপ্তির প্রয়োজন হবে না।