মাথাভাঙ্গা মনিটর: কুমার সাঙ্গাকারা ও তিলকারত্নে দিলশানের শতকে সহজ জয় পেয়েছে শ্রীলঙ্কা। স্কটল্যান্ডকে ১৪৮ রানে হারিয়ে বিশ্বকাপে চতুর্থ জয় পেয়েছে তারা। সাঙ্গাকারা-দিলশানের বড় জুটির পর অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের ঝড়ো ব্যাটিঙে ৯ উইকেটে ৩৬৩ রানের বড় সংগ্রহ গড়ে শ্রীলঙ্কা। ফ্রেডি কোলম্যান ও প্রেস্টন মমসেনের শতরানের জুটিও স্কটল্যান্ড বড় হার এড়াতে পারেনি। বিশ্বকাপের ইতিহাসে কোনো ম্যাচ না জেতা দলটি ৪৩ ওভার ১ বলে ২১৫ রানে অলআউট হয়ে যায়। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৪৪ রানে প্রথম তিন ব্যাটসম্যানের বিদায়ে শুরুটা ভালো হয়নি স্কটল্যান্ডের। চতুর্থ উইকেটে ১১৮ রানের জুটিতে প্রতিরোধ গড়েন কোলম্যান-মমসেন। অর্ধশতকের পর ফিরে যান স্কটল্যান্ডের অধিনায়ক মমসেন। অর্ধশতক পাওয়া আরেক ব্যাটসম্যান কোলম্যানও এরপর বেশিক্ষণ টিকেননি। এক সময়ে স্কটল্যান্ডের সংগ্রহ ছিলো ৪ উইকেটে ১৮৯ রান। সেখান থেকে ২৬ রান যোগ করতেই শেষ ৬ উইকেট হারিয়ে বড় হার এড়াতে পারেনি তারা। স্কটল্যান্ডের দুটি আউটে অবদান রাখেন ম্যাচ সেরা সাঙ্গাকারা। মাইকেল লিস্কের প্রথম ক্যাচটি নিয়ে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ডিসমিসালের রেকর্ড গড়েন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডাম গিলক্রিস্টের ৫২ ডিসমিসালের রেকর্ড ভাঙেন তিনি।
এর আগে গতকাল বুধবার হোবার্টের বেলেরিভ ওভালে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি শ্রীলঙ্কার। ষষ্ঠ ওভারেই লাহিরু থিরিমান্নের উইকেট হারায় গত দু আসরের রানার্সআপরা। তবে তার কোনো ছাপ শ্রীলঙ্কার ইনিংসে পড়তে দেননি দিলশান ও সাঙ্গাকারা। দ্বিতীয় উইকেটে দিলশান-সাঙ্গাকারার ১৯৫ রানের জুটিতে বড় সংগ্রহের দিকে এগিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। ৩৪তম ওভারে পরপর দুই বলে শতকে পৌঁছান এ দু ব্যাটসম্যান। তিন অঙ্কে পৌঁছানোর পরপরই ফিরে যান দিলশান। বিশ্বকাপে চতুর্থ শতক পাওয়া দিলশানকে বিদায় করে ২৮.৫ ওভার স্থায়ী জুটি ভাঙেন জস ডেভি। ৯৯ বলে খেলা দিলশানের ১০৪ রানের ইনিংসটি ১০টি চার ও ১টি ছক্কা সমৃদ্ধ। ওয়ানডেতে এটি তার ২২তম শতক। পরের ওভারে পরপর দুই বলে মাহেলা জয়াবর্ধনে ও সাঙ্গাকারাকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগান স্কটল্যান্ডের সেরা বোলার ডেভি। হ্যাটট্রিক করতে না পারলেও এবারের আসরে সর্বোচ্চ উইকেট নেয়ার কৃতিত্ব এখন তারই। ১৪টি উইকেট নিয়ে নিউ জিল্যান্ডের ট্রেন্ট বোল্ট ও টিম সাউদিকে পেছনে ফেলেছেন ডেভি। ডেভির তৃতীয় শিকারে পরিণত হওয়ার আগে ১২৪ রানের দারুণ একটি ইনিংস খেলেন সাঙ্গাকারা। প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ওয়ানডে ও বিশ্বকাপ টানা চার ম্যাচে শতক করার কৃতিত্ব দেখান তিনি। আগের তিন ম্যাচে বাংলাদেশ, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শতক করেছিলেন তিনি। সাঙ্গাকারার রেকর্ড গড়া ৯৫ বলের ইনিংসটি ১৩টি চার ও ৪টি ছক্কা সমৃদ্ধ। দ্বিতীয় উইকেট জুটি ভাঙার পর শ্রীলঙ্কার আর কোনো জুটিই চার ওভার পর্যন্ত স্থায়ী হয়নি। নেমেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করা অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস কুশল পেরেরার সঙ্গে ৫৪ ও থিসারা পেরেরার সঙ্গে ৩৭ রানের দুটি জুটি উপহার দেন। ২০ বলে অর্ধশতকে পৌঁছান অধিনায়ক ম্যাথিউস। সুবাদে বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার দ্রুততম অর্ধশতকের রেকর্ড গড়েন তিনি। টানা চারটি ছক্কা হাকিয়ে সীমানায় ক্যাচে পরিণত হওয়া ম্যাথিউসের (৫১) ২১ বলের ইনিংসটি সাজানো ১টি চার ও ৬টি ছক্কায়। অধিনায়কের বিদায়ের পর নিয়মিত উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। ১০ রানের মধ্যে চার উইকেট হারালেও দশম উইকেট জুটির দৃঢ়তায় সাড়ে তিনশ’ পার হয় তাদের সংগ্রহ। ১৯ বলে ২৭ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন নুয়ান কুলাসেকারা ও দুশমন্ত চামিরা।
‘এ’ গ্রুপের চতুর্থ স্থানে থাকা দলের কোয়ার্টার-ফাইনালে মুখোমুখি হতে হবে গ্রুপ ‘বি’র শীর্ষস্থান নিশ্চিত করা ভারতের বিপক্ষে। তাই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ যদি হারে আর এ ম্যাচে শ্রীলঙ্কা যদি বড় ব্যবধানে জয় পায় তবে টাইগারদের শেষ আটে লড়তে হবে ভারতের সাথে।