পূর্বাশার চাকায় পিস্ট হয়ে মাংসব্যবসায়ী নিহত : বাসে আগুন ধরিয়ে দিলো বিক্ষুব্ধ জনতা

11046811_885493308158412_3373749614613933714_n

দর্শনা-মুজিবনগর সড়কে ঘুঘুডাঙ্গায় দুর্ঘটনার কবলে ঢাকামুখি নৈশকোচ : নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মোটরসাইকেলে ধাক্কা

দর্শনা অফিস: কার্পাসডাঙ্গা-ঢাকাগামী যাত্রীবাহী পূর্বাশা পরিবহন আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। কোচের চাকায় পিষ্ট হয়ে মাংসব্যবসায়ীর মৃত্যুসহ দুজন আহত হওয়ায় ক্ষুব্ধ জনতা কোচটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। ঘটনাটি ঘটে গতরাত সাড়ে ৯টার দিকে চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদার দর্শনা-কার্পাসডাঙ্গা সড়কের ঘুঘুডাঙ্গা পদ্মা ক্লিনিকের নিকট। প্রত্যক্ষদর্শীরা এ তথ্য জানিয়ে বলেছেন, খবর পেয়ে ফায়ার স্টেশনের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌছুনোর আগেই কোচটির সিংহভাগই পুড়ে যায়। তবে কোচে থাকা যাত্রীদের কেউ হতাহত হননি। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। পালিয়েছেন কোচচালক ও হেলপার। এ দুর্ঘটনার কারণে দর্শনা-মুজিবনগর সড়ক ঘণ্টাখানেক অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। নিহত মাংসব্যবসায়ী দর্শনা পৌর শহরের ঘুঘুডাঙ্গার হাসেম শরীফের ছেলে আবুল কাশেম।
জানা গেছে, প্রতিদিনের মতো গতকাল রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাজার থেকে মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফিরছিলেন আবুল কাশেম। দর্শনা-মুজিবননগর সড়কের ঘুঘুডাঙ্গা পদ্মা ক্লিনিকের সামনে বাড়ির অদূরে পৌঁছুনোর আগেই দুর্ঘটনার শিকার হয়ে প্রাণ হারান তিনি। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, কার্পাসডাঙ্গা থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রীবাহী পূর্বাশা পরিবহনের একটি বাস (ঢাকা-মেট্রো-ব-১৪-১১৯৯) দ্রুতগতিতে দর্শনা অভিমুখে ছুটছিলো। পরিবহনের চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি ধাক্কা দেন। এতে আবুল কাশেম (৪৫) পরিবহনের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন। বাসের ধাক্কায় আহত হন একইপাড়ার হায়দার আলীর ছেলে শারীরিক প্রতিবন্ধী আ. আজিজ (৫০) ও আজিজের ছেলে জুয়েল (২৪)। আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে কাশেম নিহত হওয়ার ঘটনায় মুহূর্তের মধ্যে শ শ মানুষ ভিড় জমায় ঘটনাস্থলে। শুরু হয় গাড়ি ভাঙচুর। এক পর্যায়ে পরিবহনে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। খবর পেয়ে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান দর্শনা আইসি ইনচার্জ এসআই মিজানুর রহমান। বিক্ষুব্ধ জনতার ঢল সামলাতে রীতিমতো হিমসিম খেতে হয় পুলিশকে। খবর দেয়া হয় ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে। আধঘণ্টার মাথায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার আগেই পরিবহন পুড়ে ভস্মীভূত হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে কাশেমের লাশ উদ্ধার করে হেফাজতে নেয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার রশীদুল হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোলাম মোহাম্মদ, দামুড়হুদা থানার ওসি (তদন্ত) ফকির আজিজুর রহমান, দর্শনা পৌরসভার সাবেক মেয়র মতিয়ার রহমান, ইউপি চেয়ারম্যান জাকারিয়া আলম, আ.লীগ নেতা আলী মুনসুর বাবু প্রমুখ।
এদিকে ৩ সন্তানের জনক কাশেমের মৃত্যুর খবরে স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে বাতাস। গোটা এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এ ঘটনায় কারো বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে কি-না জানা যায়নি। এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত কাশেমের লাশ, ভস্মীভূত পরিবহন ও মোটরসাইকেল পুলিশ হেফাজতে ছিলো। সচেতনমহল অভিমত ব্যক্ত করে বলেছে, পরিবহন চালকদের বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর কারণে প্রায়ই এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে। পূর্বাশা পরিবহনের এ বাসটি কী চালক চালাচ্ছিলো নাকি হেলপার? তা খতিয়ে দেখা দরকার।