গণমিছিল ঘোষণা করা হলেও ঝটিকা মিছিলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ

বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলী জোটের গণমিছিলের কর্মসূচিতেও সাড়া মিলছে না

 

স্টাফ রিপোর্টার: বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের ডাকা হরতাল-অবরোধ পালিত হচ্ছে না বললেই চলে। বিক্ষোভ বা গণমিছিলের কর্মসূচিতেও সাড়া মিলছে না। গণমিছিল ঘোষণা করা হলেও নেতাকর্মীরাই মাঠে নামছেন না। যেটুকু আছে তা ঝটিকা মিছিলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। গত ৬ জানুয়ারি থেকে টানা অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি-জোট। এর সাথে দেয়া হচ্ছে বিভিন্ন মেয়াদের হরতাল। হরতাল-অবরোধের মধ্যেই গত ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে সপ্তায় দু-এক দিন বিক্ষোভ বা গণমিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করে আসছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট। ১৪ ফেব্রুয়ারি দেশের সব জেলা-উপজেলা এবং মহানগরের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলো ২০ দল। কিন্তু দেশের কোথাও নেতাকর্মীদের জানান দিয়ে মিছিল করতে দেখা যায়নি। বিভিন্নস্থানে ঝটিকা মিছিল হয়েছে। এরপর থেকে প্রায় প্রতি সপ্তায়ই বিক্ষোভ বা গণমিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করা হচ্ছে। কিন্তু হচ্ছে দুয়েক মিনিটের ঝটিকা মিছিল। তাতেও অংশ নিচ্ছেন হাতে গোনা কয়েকজন নেতা-কর্মী।

গতকাল সোমবারও বিএনপি দেশের সব উপজেলা-জেলা ও মহানগরের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গণমিছিল কর্মসূচি ছিল। কিন্তু রাজধানীতে বড় ধরনের কোনো গণমিছিলের খবর পাওয়া যায়নি। ঢাকা মহানগরীতে বিএনপির ওয়ার্ড কমিটি পুনর্গঠন করা হয়নি। মহানগরের পক্ষ থেকেও মিছিল কর্মসূচি কোথায় কোথায় করা হয়েছে তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি। তবে ঢাকা মহানগর বিএনপি আহ্বায়ক মির্জা আব্বাস ও সদস্য সচিব হাবিব উন নবী খান আজ এক বিবৃতিতে ঢাকা মহানগরের সকল স্তরের নেতাকর্মীদের রাজপথে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা দাবি করেন, ২০ দলের জনসম্পৃক্ত আন্দোলনের ফলে সারা দেশ অচল হয়ে পড়েছে। রাজধানী বিচ্ছিন্ন। তারপরও সরকার ক্ষমতার মোহে অন্ধ হয়ে বন্ধুর পথে হাঁটছে।

এদিকে চুয়াডাঙ্গায় হরতালের সমর্থনে ২০ দল হরতালের সমর্থনে মাঝে মাঝে ঝটিকা মিছিল করলেও একেকদিন একেক স্থানে করছে। তারা জেলা শহরের ভেতরে বিক্ষোভ করতে সাহস পাচ্ছেন না। একটি সূত্র জানায় গতকাল সোমবার চুয়াডাঙ্গায় বিএনপি ও যুবদলের বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল ৮টার দিকে চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গা সড়কের ফার্স্ট ক্যাপিটাল ইউনিভার্সিটির সামনে থেকে যুবদলের মিছিল বের হয়ে মসজিদপাড়া এলাকায় এসে শেষ হয়। যুবদলের একটি সূত্র জানায়, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শরিফুজ্জামান শরিফের তত্ত্বাবধানে মিছিলে নেতৃত্ব দেন জেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক যুবদল নেতা হাবিবুর রহমান সাদিদ। মিছিল থেকে অবৈধ সরকারের পদত্যাগ, বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা প্রত্যাহার ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অহিদুল ইসলাম বিশ্বাসের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করা হয়। এছাড়া হরতাল অবরোধ সফল করতে জনগণকে আহ্বান জানানো হয়। মিছিলে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পৌর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, জেলা বিএনপির সাবেক ক্রীড়া সম্পাদক আব্দুস সালাম, যুবদল নেতা রাশেদ, যুবদল নেতা শফিউল হক, খাসকররা ইউনিয়ন যুবদলের সহসভাপতি কাজী মোস্তাফিজুর রহমান পিন্টু, তরুণ দলের আহ্বায়ক মাবুদ সরকার, যুগ্ম আহ্বায়ক রোকনুজ্জামান, যুবদল নেতা হাসিমুজ্জামান, সালাম, রায়হান, লালন, ছাত্রদল নেতা খন্দকার আরিফ, বুদ্দিন, মিলন, নোন্তা প্রমুখ।

এছাড়া বিকেলে হরতালের সমর্থনে জেলা বিএনপি বিক্ষোভ করেছে চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদাহ সড়কের ৪ মাইল নামক স্থানে। মিছিল থেকে হরতাল-অবরোধ সফল করার আহ্বান জানানো হয়। মিছিলে নেতৃত্ব দেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক খন্দকার আব্দুল জব্বার সোনা ও মজিবুল হক মালিক মজু ।

ঝিনাইদহ অফিস জানিয়েছে, গতকাল সোমবার সকাল ৯টার দিকে শহরের কেপি বসু সড়কের দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে গণমিছিল বের করেন নেতাকর্মীরা। জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. এমএ মজিদের নেতৃত্বে মিছিলটি শহরের গীতাঞ্জলি সড়ক প্রদক্ষিণ করে চাকলাপাড়া বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সভাপতিত্বে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা। জেলা বিএনপির সহসভাপতি অ্যাড. এসএম মশিয়ুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হরিণাকুণ্ডু উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাড. এমএ মজিদ, জেলা কৃষকদলের সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম বাদশা, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আহসান হাবিব রনক, মিজানুর রহমান সুজন ও কালীচরণপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন আলম। এ সময় বক্তারা অবিলম্বে নির্দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন দিয়ে জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবি জানান। বক্তারা আরও বলেন, দলীয় নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।