স্টাফ রিপোর্টার: গত ম্যাচে তামিম ইকবাল কাছে গিয়েও হাতছাড়া করেছিলেন সুযোগটা। সুযোগ রানের সাথে পাল্লা দিতে গিয়ে আউট হয়ে বঞ্চিত হয়েছেন শেষ পর্যন্ত। কিন্তু গতকাল অ্যাডিলেডে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করার পথে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে থামাতে পারলো না কোন বাঁধাই। বিপর্যয় সামলে দলকে জয়ের ভিত্তি গড়ে দেয়ার পাশাপাশি বিশ্বকাপে প্রথম বাংলাদেশি হিসাবে শতরান করে রেকর্ড বইয়ে নিজের নামটা তুললেন রিয়াদ।
১০৩ রানের দারুণ এক ইনিংসের পরেও এই অলরাউন্ডার ম্যাচ শেষে অবশ্য নিজের কৃতিত্ব বড় করে দেখতে রাজি হলেন না। বরাবরই বিনয়ী রিয়াদ জানালেন, ব্যাটিংয়ে মুশফিক-সৌম্য বোলিংয়ে মাশরাফি-রুবেল; অর্থাত্ ১৫ রানের ঐতিহাসিক এই জয়ে অবদান আছে পুরো দলেরই।
রিয়াদ বলেন, দারুণ একটা জয় আমাদের জন্য। যেভাবে মাঠে সবাই লড়াই করেছে সেটা ছিলো অসাধারণ। বোলারদের বিশেষ ধন্যবাদ। রুবেল-মাশরাফি দারুণ বল করেছে। তাসকিনও ছিলো দারুণ। বিশ্বকাপে দেশের বাইরের মাটিতে প্রথম সেঞ্চুরির সুযোগ; ব্যাটিংয়ের সময় কি একটু নার্ভাস লাগছিলো? এমন প্রশ্নের জবাবে নেতিবাচক উত্তরই পাওয়া গেলো তার কাছ থেকে, সত্যি বলতে আমি আসলে এগুলো নিয়ে ভাবিইনি। আমি চেয়েছি কেবল ব্যাট করতে। সৌম্যর সাথে একটা জুটি গড়তে চেয়েছিলাম। পরে মুশফিক খুব ভালো খেলেছে। কারণ অন্যপ্রান্তে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করে প্রতিপক্ষকে চাপে রাখছিল সে।’
গত ম্যাচেই তামিম ইকবালের হাত ধরে সেঞ্চুরিটা পেয়ে যাচ্ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সেঞ্চুরি থেকে ৫ রান দূরে থাকতে ফিরে আসেন তামিম। মনে হচ্ছিলো প্রথম সেঞ্চুরির জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরো দীর্ঘকাল। কারণ এর আগে চলে গেছে পাঁচটা বিশ্বকাপ, ৩০টা ম্যাচ।
রিয়াদ গতকাল শুধু বাংলাদেশকে মহাবিপর্যয় থেকে টেনে তুলে লড়াই করার পুঁজি এনে দিলেন না, উপহার দিলেন সেই সেঞ্চুরিটাও। ৮ রানে দু ওপেনার ফিরে যাওয়ার পর উইকেটে এসেছিলেন রিয়াদ। প্রথমে সৌম্য সরকারকে নিয়ে এবং এরপর পরম আত্মীয় মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে রানের পাহাড়ে তুলে দিলেন বাংলাদেশকে। আর এ পথেই খেলে ফেললেন ১০৩ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস।
১৩৮ বলে ৭টি চার ও দুটি ছক্কায় সাজানো ছিলো রিয়াদের এ ইনিংস। তবে সেরা মুহূর্তটা হল ১৩১ বলে সেই সেঞ্চুরি ছুয়ে ফেলা। গতকালসহ চার নম্বরে রিয়াদ এ পর্যন্ত ব্যাট করেছেন ৬ ম্যাচ। এ ছয় ম্যাচের ৩টি ফিফটি এবং একটি সেঞ্চুরি! রান করেছেন বিস্ময়কর ১০৯.৩৩ গড়ে ৩২৮। চার নম্বরে রিয়াদ ক্যারিয়ারের প্রথম ম্যাচ খেলেছিলেন ২০১১ সালে, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। সেবার ৬৮ রানে ছিলেন অপরাজিত। এরপর এ বিশ্বকাপের আগে থেকে এখন পর্যন্ত ৫ ইনিংসে রান যথাক্রমে ১, ৮২*, ৫১*, ২৩ ও ১০৩।