১৩ মাস কারাভোগের পর আঁখি ও বুলবুলি ফিরলো আপন ঠিকানায়

পেটের তাগিদে ঢাকায় গিয়ে দু যুবতী নারী পাচারচক্রের কবলে : ভারতীয় পুলিশের হাতে আটক

দর্শনা অফিস: ভারতে পাচার হওয়া দু বাংলাদেশি তরুণীকে ফেরত দিয়েছে বিএসএফ। গতকাল রোববার দুপুরে দর্শনা চেকপোস্ট সীমান্তের ৭৬ নম্বর মেন পিলার এলাকায় পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কাছে তাদের ফেরত দেয়া হয়। দামুড়হুদা থানা পুলিশ বেলা ৩টার দিকে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। ফেরত আসা তরুণীরা হলেন- ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলা শহরের কলেজপাড়ার রজব আলীর মেয়ে আঁখি তারা খাতুন (১৮) ও কুষ্টিয়া সদর উপজেলার খদ্দ-আইলচারা গ্রামের হাসেন আলী মণ্ডলের মেয়ে বুলবুলি খাতুন (১৯)।
জানা গেছে, পেটের তাগিদে চাকরির আশায় বাড়ি ছেড়ে ঢাকায় পাড়ি জমায় কৃষ্টিয়ার বুলবুলি ও কোটচাঁদপুরের আঁখি। ঢাকায় গিয়ে চাকরি খুঁজতে গিয়ে পড়তে হয়েছে নারী পাচারকারীচক্রের কবলে। মোটা অঙ্কের বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে দু যুবতীকে পাচার করা হয় ভারতে। ১৩ মাস কারাভোগের পর দর্শনা জয়নগর সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফ’র পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ফেরত দেয়া হয়েছে বুলবুলি ও আঁখিকে। কুষ্টিয়া সদর উপজেলার পোড়াদাহ ইউনিয়নের খোদ্দ-আইলচারা গ্রামের হাসান মণ্ডলের মেয়ে বুলবুলি খাতুন ও ঝিনাইদাহ জেলার কোটচাঁদপুর কলেজ স্ট্যান্ডপাড়ার রজব আলীর মেয়ে আঁখি পেটের তাগিদে চাকরির আশায় ঢাকায় পাড়ি জমায় ১৩ মাস আগে। ঢাকার নুরজাহান নামের মধ্য বয়সী এক মহিলা তাদের আকর্ষণীয় বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখায়। রাতের আঁধারে বুলবুলি ও আখিকে সীমান্ত পথে পাচার করে দেয়া হয় ভারতে। কোন সীমান্ত পথে পাচার করা হয়েছে তা পরিষ্কারভাবে বলতে পারেনি কেউ। তবে ভারতের কৃষ্ণনগর পুলিশের হাতে ধরা পড়ে বুলবুলি ও আঁখি। এ সময় কৌশলে সটকে পড়ে পাচারকারীচক্রের সদস্যরা। আটককৃত দুজনকে কৃষ্ণনগর সেভ হোমে রাখা হয়। আইনি জটিলতা কাটিয়ে তুলে আবশেষে গতকাল রোববার দুপুর ১২টার দিকে দর্শনা জয়নগর সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফ’র অনুষ্ঠিত হয় পতাকা বৈঠক। এ বৈঠকে বুলবুলি ও আঁখিকে ফেরত দেয়া হয়েছে। বৈঠকে বিজিবির পক্ষে নেতৃত্ব দেন- দর্শনা বিজিবি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার কাজি রবিউল আউয়াল, ইমিগ্রেশনের এএসআই রাশিদুল হাসান, বিএসএফ’র পক্ষে ছিলেন গেদে কোম্পানি কমান্ডার এনকে ইয়াদান, ইমিগ্রেশন অফিসার বি জাদব, এমডি রোজারিয়, পি বিশ্বাস প্রমুখ। বুলবুলি ও আঁখি স্বজনদের কাছে পেয়ে বুকফাটা কান্নায় ঙেঙ্গে পড়ে। গতকালই তারা স্বজনদের সাথে ফিরেছে আপন ঠিকানায়।