শিক্ষাবোর্ড পরিপত্র জারি ছাড়াই গাংনীর বিভিন্ন বিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রেশনের নামে অতিরিক্ত ফিস আদায়!

মাজেদুল হক মানিক: শিক্ষাবোর্ড পরিপত্র জারি করার আগেই মেহেরপুর গাংনী উপজেলার বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রেশনের নামে আদায় করা হচ্ছে অতিরিক্ত ফিস। বিভিন্ন খাত দেখিয়ে ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি অর্থ আদায়ে রীতিমতো উৎসবে মেতে উঠেছেন কয়েকটি বিদ্যায়ের শিক্ষকবৃন্দ। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন অভিভাবকগণ।

প্রতিবছরের ন্যায় নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের ফিস আদায় সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করে বিভিন্ন শিক্ষাবোর্ড। কিন্তু চলতি বছরে এখনও কোনো পরিপত্র জারি করেনি। তথাপিও বিভিন্ন বিদ্যালয় ৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে ৫০০ টাকা ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে ৬০০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত। গত বছর বোর্ড ফি ছিলো ৭০-১০০ টাকার মধ্যে।

গাংনীর বাওট সোলাইমানী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম সত্যতা স্বীকার করে জানান, বোর্ড কোনো পরিপত্র জারি করেনি। কিন্তু যে সময় পরিপত্র জারি করে ওই সময় বিদ্যালয়ের কিছু করার থাকে না। এজন্য ষষ্ঠ ও অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৫০০ টাকা ও নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৬০০ টাকা নেয়া হয়েছে। বিদ্যালয়ের আনুসঙ্গিক খরচের জন্য এ বাড়তি ফিস নেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

একই কথা জানালেন হোগলবাড়িয়া-মহাম্মদপুর হাজি ভরস উদ্দীন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জামান। তিনি জানান, বিদ্যালয় পরিচালনা কাজে ব্যাপক খরচ আছে। এ সময় ফিস বেশি না নিলে ওই খরচ সংকুলান করা সম্ভব হয় না। তিনিও জানালেন, বোর্ড এ ব্যাপারে কোনো পরিপত্র জারি করেনি।

হাজি ভরস উদ্দীন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ইমনের বড় ভাই মাসুদ রানা জানান, ইমনের কাছ থেকে ৬০০ টাকা ফিস নেয়া হয়েছে। বোর্ডের আদেশে এ ফিস নেয়া হচ্ছে বলে প্রধান শিক্ষক জানান। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাওট সোলাইমানী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণির কয়েকজন ছাত্রছাত্রী জানায়, প্রতি বছরে এভাবে প্রধান শিক্ষক বোর্ডের নাম করে অতিরিক্ত ফিস আদায় করেন। কিছু জানতে চাইলে উপবৃত্তি বাতিল করার হুমকি দেন। কিন্তু গরিব শিক্ষার্থীদের জন্য এটা খুবই কষ্ট সাধ্য।

গাংনী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মনিরুল ইসলাম জানান, মোট ৬২টি মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। শিক্ষাবোর্ড সরাসরি ফিস আদায় সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করে ওয়েবসাইটে প্রদর্শন ও বিদ্যালয়ে কপি প্রেরণ করে। অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবুল আমিন জানান, এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a comment