চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার ২ নং ওয়ার্ডের মুসলিম নিকাহ রেজিস্ট্রার পদ থেকে অব্যাহতি চাইলেন মাওলানা নাসির উদ্দীন

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার ২ নং ওয়ার্ডের নিকাহ রেজিস্ট্রার কাজি মাওলানা মো. নাসির উদ্দীন নিকাহ রেজিস্ট্রার লাইসেন্স সারেন্ডারের আবেদন করেছেন। গত ১০ ফেব্রয়ারি জেলা রেজিস্ট্রারের কাছে লিখিতভাবে তিনি নিজে এ আবেদনটি জমা দিয়েছেন। জেলা রেজিস্ট্রার আবুল কালাম আজাদ মাওলানা নাসির উদ্দীনের অব্যাহতির আবেদনটির সত্যতা স্বীকার করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০০৫ সালের ৩১ জুলাই চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার ২ নং ওয়ার্ডের মুসলিম নিকাহ রেজিস্ট্রার হিসেবে চুয়াডাঙ্গা বনানীপাড়ার মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলে মাওলানা মো. নাসির উদ্দীন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে নিয়োগ লাভ করেন। নিয়োগ লাভের পর থেকে এ পর্যন্ত তিনি আইনত ২ নং ওয়ার্ডের নিকাহ রেজিস্ট্রার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

অভিযোগ রয়েছে, নিকাহ রেজিস্ট্রার মাওলানা নাসির উদ্দীনের নামে থাকলেও নিকাহ রেজিস্ট্রারের সকল প্রকার কাগজপত্র ও বিয়ের কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকেন পলাশপাড়ার জনৈক আকরাম হোসেন। তিনি আকরাম কাজি নামেই পরিচিত। ২০১৪ সালের ৭ মার্চ চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ফুলবাড়িয়া গ্রামের শিপন আলীর মেয়ে শিরিনা খাতুন স্বামী হাবিবুর রহমানের নামে যৌতুকের জন্য জিআর ১১৮/১৪ নং মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় কাজি নাসির উদ্দীন, আকরাম হোসেন, আব্দুল হালিম ও নাজমুল হক হীরা নিকাহনামা রেজিস্ট্রার আদালতে দেখাতে ব্যর্থ হলে আদালতের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ বিপ্লব গোস্বামী ওই চারজনকে গত ৩১ জুলাই জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন। দীর্ঘদিন জেলা কারাগারে থাকার পর আসামিরা নিম্ন আদালত ও উচ্চ আদালত থেকে সর্বশেষ গত ৫ জানুয়ারি জামিনে মুক্তি লাভ করেন।

এরপর আদালতের আদেশে মামলার বাদী শিরিনা খাতুন চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় ওই চারজনকে আসামি করে পৃথক আরেকটি প্রতারণার মামলা দায়ের করেন। ওই মামলাটি বর্তমানে দুদকে তদন্তাধীন রয়েছে।

মাওলানা নাসির উদ্দীন দীর্ঘ ৫/৬ মাস জেলহাজতে থাকলেও চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার ২ নং ওয়ার্ডের বিয়ে পড়ানোর জন্য কোনো কাজিকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হয়েছিলো না। জেল থেকে বেড়িয়ে এসে মাওলানা কাজি নাসির উদ্দীন নিকাহ রেজিস্ট্রার হিসেবে কাজ করতে আগ্রহ না থাকায় অবশেষে লাইসেন্সটি সারেন্ডার করতে বাধ্য হলেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চুয়াডাঙ্গা জেলা রেজিস্ট্রার আবুল কালাম আজাদ জানান, মাওলানা নাসির উদ্দীনের অব্যাহতির আবেদনটি পেয়েছি এবং আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা রেজিস্ট্রার অফিস থেকে চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে। চূড়ান্ত আদেশ না আসা পর্যন্ত নাসির উদ্দীনকে কাজির দায়িত্ব পালন করে যেতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

Leave a comment