স্টাফ রিপোর্টার: নদীতে পশুর রক্ত ঢেলে ভিত্তি স্থাপন কাজের উদ্ধোধন করেছেন পদ্মা সেতুর দায়িত্ব পাওয়া চাইনিজ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা। তাদের বিশ্বাস, বড় কাজের শুরুতে পশু উৎসর্গের মাধ্যমে স্রষ্টার সন্তুষ্টি লাভ করা যায়, এড়ানো যায় বড় দুর্ঘটনা। গতকাল রোববার সকালে মুন্সিগঞ্জের মাওয়ায় মূল সেতুর পরীক্ষামূলক ভিত্তি স্থাপনের সময় নদীতে গরু ও খাসির রক্ত ঢালতে দেখা যায় চাইনিজ ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের। ভাসিয়ে দেয়া হয় কয়েকটি মুরগিও। গত বছর পদ্মায় মূল সেতু তৈরির দায়িত্ব পায় চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি।
সেতু তৈরির এ মহাযজ্ঞ শুরুর পর প্রকল্পে চীনের প্রায় ১৫০ জন প্রকৌশলী এবং ৩৫০ জন কর্মী অংশ নিয়েছেন। কর্মরত এসব চীনা নাগরিকরা তাদের প্রথাগত বিশ্বাস ও রীতি অনুযায়ী গতকাল রোববার দুটি কালো ষাড়, দুটি খাসি এবং দুটি মোরগ পদ্মা তীরে জবাই করেন। পরে পশুর রক্ত ঢেলে দেয়া হয় পদ্মায়।
এছাড়া ষাড়ের সামনের দুটি পা এবং জবাই করা দুটি মুরগিও তারা ভাসিয়ে দেন। অবশ্য অবশিষ্ট মাংস প্রকল্পে কর্মরত চীনাদের মাঝে বিতরণ করা হয়। পশু উৎসর্গের পর ভিত্তি স্থাপন (অ্যাংকর পাইল) কাজের চারিদিকে একেরপর এক আতশবাজি ফুটতে দেখা যায়। এতে অংশ নেন প্রকল্প সংশ্লিষ্ট প্রায় সবাই। কথা বলে জানা গেছে, দু নম্বর পিলারের কাছে নদীতে বিশাল আকারের ক্রেন ব্যবহার করে অ্যাংকর পাইল স্থাপন শুরু করা হয়েছে। ২০ মার্চ থেকে শুরু হবে ট্রায়াল পাইল স্থাপনের কাজ।
প্রকল্পের কাজে সংশ্লিষ্ট এক বাংলাদেশি প্রকৌশলী বলেন, এটা চীনাদের প্রচলিত রীতি ও বিশ্বাস। তারা বিশ্বাস করেন বড় কোনো কাজের শুরুতে এ পশু উৎসর্গ করলে স্রষ্টার সন্তুষ্টি লাভ করা যায়। আর এটি কাজে দুর্ঘটনা রোধ করে সফলতা নিয়ে আসবে। চীনা কোম্পানিটি তাদের প্রকৌশলী ও কর্মীদের আগ্রহে এ রীতি পালনে অর্থায়ন করেছে বলে জানান তিনি। পদ্মা সেতুর প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এটা চীনাদের নিজস্ব রীতি।