বিএনপি-জামায়াত দেশে গণহত্যা চালাচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত চক্র তথাকথিত আন্দোলনের নামে দেশে গণহত্যা চালাচ্ছে। কারও পক্ষেই তাদের এ ধরনের নৃশংসতা মেনে নেয়া সম্ভব নয়। গত বৃহস্পতিবার সকালে প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারিবিষয়ক ৪র্থ আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণকালে তিনি একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা হরতাল-অবরোধের নামে মানুষ হত্যা করছে। তারা এ খুনের দায় এড়াতে পারে না। এ ধরনের নির্মম কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে আল্লাহ তাদের সুমতি দিন। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা দেশব্যাপি ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি করেছে। মানুষ তাদের এ ধ্বংসাত্মক কর্মসূচিতে সাড়া দেয়নি। এজন্য তারা পেট্রোলবোমা ছুড়ে মানুষ পুড়িয়ে মারার কৌশল নিয়েছে। দ্য সোসাইটি অব প্লাস্টিক সার্জনস বাংলাদেশ (এসপিএসবি) ৪ দিনের এ সম্মেলনের আয়োজন করে। এতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ও স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালিক বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে এসপিএসবি সভাপতি ডা. সামন্ত লাল সেন, স্বাস্থ্য সচিব সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম, এসপিএসবি মহাসচিব ডা. মো. আবুল কালাম, সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) অঞ্জন কুমার দেব বক্তৃতা করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এমন এক সময়ে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে যখন একটি রাজনৈতিক জোট নিজেদের হীনস্বার্থ উদ্ধারে নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে মারছে। তাদের পেট্রোলবোমা সন্ত্রাসের হাত থেকে শিশু, বৃদ্ধ এমনকি অন্তঃসত্ত্বা মাও রেহাই পাচ্ছেন না। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত সৃষ্ট এ ভীতিকর পরিস্থিতি খুবই অমানবিক। একজন মানুষ আরেকজন মানুষকে পুড়িয়ে মারছে এটা চিন্তা করা যায় না। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত চক্র এই অপরাধই করে চলছে। তাদের পেট্রোলবোমা সন্ত্রাসে এ পর্যন্ত একশর বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং কয়েকশ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মৃত্যু যন্ত্রণায় দিন কাটাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট অবরোধের সাথে হরতালও দিচ্ছে। এটা যেন মরার উপর খাঁড়ার ঘা।

মানুষ যখন সুখ-শান্তিতে বাস করছে এবং তারা উন্নত ও সুন্দর জীবনের স্বপ্ন দেখছে, সে সময় বিএনপি-জামায়াত আন্দোলনের নামে দেশব্যাপি অরাজকতা সৃষ্টি করছে। সাধারণ মানুষকে কষ্ট দেয়ার কোনো যুক্তি নেই। সরকার দেশ চালাতে ব্যর্থ হলে তখন তাদের আন্দোলন যুক্তিযুক্ত হতো। তিনি বলেন, জনগণের জন্য নয়- বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলন হচ্ছে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত স্বার্থে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা আগামী প্রজন্মের জীবন ধ্বংস করতে এ আন্দোলন করছে। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের তথাকথিত আন্দোলনে ১৫ লাখ এসএসসি পরীক্ষার্থী এবং সাড়ে ৪ কোটি শিক্ষার্থীর ভবিষ্যত হুমকির মুখে পড়েছে। মানুষের প্রতি বিএনপি নেত্রীর ন্যূনতম দরদ ও ভালোবাসা থাকলে তিনি এমন ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি দিতে পারতেন না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্যোগে স্বাধীনতার পর পরই দেশে প্লাস্টিক সার্জারির যাত্রা শুরু হয়েছিলো। বঙ্গবন্ধু যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অর্থোপেডিক সার্জন ডা. আরজে গাস্ট ও ভারতীয় প্লাস্টিক সার্জন ডা. পি বেজলিলকে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। কিন্তু সপরিবারে তাকে হত্যার পর চিকিৎসা শাস্ত্রের উন্নয়নে পরবর্তী সরকারগুলো কোনো উদ্যোগ নেয়নি। যদিও এ সময়ের মধ্যে দেশব্যাপি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ রোগীর সংখ্যা বহুগুণ বেড়েছে। সরকার স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বিভাগীয় হাসপাতালে বার্ন ইউনিট চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে উপজেলা পর্যন্ত তা সম্প্রসারিত হবে। সাম্প্রতিক সময়ে পেট্রোলবোমা হামলায় বার্ন ইউনিটে অগ্নিদগ্ধ আহতদের জীবন রক্ষায় চিকিৎসকদের অক্লান্ত পরিশ্রমের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী তার ও জাতির পক্ষ থেকে চিকিৎসকদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।