আইএসে যোগ দিতে তুরস্কে বাংলাভাষী দু স্কুলছাত্রী

মাথাভাঙ্গা মনিটর: লন্ডনের তিন স্কুলছাত্রী পরিবারকে না জানিয়ে তুরস্কে পাড়ি দেয়ায় তারা সিরিয়ার জঙ্গি সংগঠন আইএসে যোগ দিতে পারে বলে সন্দেহ করছে পুলিশ। তিন স্কুলছাত্রীর মধ্যে দুজন বাংলাভাষী। তারা যে বিমানে চড়েছিলো সেটি মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অবতরণ করে। বিমানে চড়ার আগে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বেষ্টনী পার হওয়ার সময় ওই কিশোরীদের ছবি সিসিটিভি ক্যামেরায় রেকর্ড হয়।

লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশের কমান্ডার রিচার্ড ওয়াল্টন বলেন, সিরিয়ায় আইএস জঙ্গিদের সাথে যোগ দিতেই ওই তিন কিশোরী তুরস্কে পাড়ি জমাতে পারে। গত বছরের ডিসেম্বরে এই তিন কিশোরীর অপর এক বান্ধবী সিরিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলো। সম্প্রতি সে তাদের সাথে যোগাযোগ করেছিলো। তারা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। যে কোনো সময় তারা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে তুরস্ক থেকে সিরিয়ায় চলে যেতে পারে।

তিন কিশোরীর মধ্যে শামীমা বেগম (১৫) ও খাদিজা সুলতানা (১৬) ব্রিটিশ উচ্চারণে ইংরেজির পাশাপাশি বাংলা ভাষায়ও কথা বলেন। ১৫ বছর বয়সী আরেক তরুণী ইংরেজির পাশাপাশি আফ্রিকার আমহারিক ভাষায় কথা বলতে পারে। তাদের জন্য তাদের অভিভাবকরাও খুবই উদ্বিগ্ন। লন্ডন পুলিশ তাদের সন্ধানে সবার সহযোগিতা চেয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। মেয়েগুলো ঘটনার শিকার বলেও উল্লেখ করেছে তারা। পুলিশের আশা, মেয়েগুলো তাদের নিয়ে অভিভাবক ও নিরাপত্তা বাহিনীর উদ্বেগের বিষয়টি বুঝতে পারবে এবং পরিবারের কাছে ফিরে আসবে। এর আগে সিরিয়ায় জঙ্গি সংগঠন আইএসের তথাকথিত জিহাদিদের স্ত্রী হতে ৫০ জনেরও বেশি ব্রিটিশ নারী তুরস্ক হয়ে সিরিয়ায় পাড়ি জমিয়েছেন। লন্ডন পুলিশের ধারণা, ভারি তুষারপাতের কারণে তুরস্কে যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে। সে কারণে তিন কিশোরী এখনও সিরিয়ায় পৌঁছাতে পারেনি। তারা তুরস্কেই আছে।

অবশ্য মেয়েগুলোর স্কুল বেথনাল গ্রিন একাডেমির অভিভাবক প্রতিনিধি আব্দেল সামিদ দাবি করেন, ওই স্কুলে কোনো ধরনের চরমপন্থা চর্চা হয় না এ বিষয়ে তিনি নিশ্চিত। তিনি বলেন, আমি একশ ভাগ নিশ্চিত, স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও অন্যান্য নীতিনির্ধারকরা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তারক্ষীর মতো তত্ত্বাবধান করে। তিনি বলেন, তারা সিরিয়া যাওয়ার চেষ্টা করছে না, বরং অবসর সময় কাটাতে ভ্রমণে গিয়েছে। সালমান ফারসি নামে পূর্ব লন্ডনের মসজিদের একজন মুখপাত্র বলেন, তারা সম্ভবত ভুল বুঝিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। খবরে বলা হয়, পৃথিবীর প্রায় একশ দেশ থেকে কমপক্ষে ২০ হাজার লোক সিরিয়া ও ইরাক পাড়ি দিয়েছে। ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ জানায়, এর মধ্যে কমপক্ষে ৬শ জন শুধু যুক্তরাজ্য থেকে গেছে। যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব বলেন, তারা চরমপন্থিদের বিরুদ্ধে কাজ করছেন।