ঝিনাইদহে চিত্রা নদীতে বাঁধ : ব্যয় করা হয়েছে সরকারি টাকা

শাহনেওয়াজ খান সুমন: পাশেই পরাপারের জন্য সেতু থাকলেও সরকারি অর্থ ব্যয় করে নদীর মধ্যে বাঁধ দিয়ে রাস্তা তৈরি করলেন ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার কুশনা ইউনিয়ন পরিষদ। ১২০ ফুট চিত্রা নদীর মাঝে মাত্র ২৫ ফুট রেখে বাকিটা আড়াআড়িভাবে বেঁধে দেয়া হয়েছে। এতে নদীর পানি প্রবাহের মারাত্মক বাধাগ্রস্ত হবে বলে জনিয়েছেন স্থানীয়রা। অবশ্য বাঁধ দেয়ার সাথে যুক্ত চেয়ারম্যান-মেম্বাররা বলছেন জনগণের চলাচলের জন্য এ বাঁধ।

স্থানীয়রা বলছেন এ বাঁধের কারণে বর্ষা মরসুমে নদীর পানি আটকে পাশের ক্ষেত-খামারে প্রবেশ করবে। এতে সাধারণ কৃষকদের হাজার হাজার বিঘা ক্ষেতের ফসল জলাবদ্ধতায় নষ্ট হবে। তাছাড়া নদীকে বাঁধ দিতে হলে প্রশাসনের অনুমোদন প্রয়োজন। এক্ষেত্রে চেয়ারম্যান-মেম্বাররা তা নেননি।

সরেজমিনে দেখা যায়, ঝিনাইদহ সদর উপজেলা ও কোটচাঁদপুর উপজেলার সীমান্ত দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে চিত্রা নদী। এ নদীর সদর উপজেলার মধুহাটি ইউনিয়নের সুতি গ্রামের খন্দকারপাড়া এবং কোটচাঁদপুর উপজেলার কুশনা ইউনিয়নের তালসার গ্রামের মাঝে কুশনা ইউনিয়নের পক্ষ থেকে বাঁধ দেয়া হয়েছে। গ্রামবাসী জানান, চিত্রা নদীর এ স্থানটির নাম বাজারঘাট। এ বাজারঘাটের দু পাশে এক কিলোমিটারের মধ্যে দুটি সেতু রয়েছে। যে সেতু দিয়ে উভয় গ্রামের মানুষ যাতায়াত করে থাকে। তারপরও শুকনো মরসুমে ওই স্থানের পানি কমে গেলে স্থানীয় বাসিন্দারা বাঁশের সাকো তৈরি করে চলাচল করেন। পানি বেড়ে গেলে আবার সাঁকো তুলে দেয়া হয়। এভাবে বেশ কয়েক বছর তারা পারাপার হচ্ছেন।

গ্রামবাসী জানান, চলতি মাসের প্রথম দিকে হঠাৎ করে বাজারঘাট নামক স্থানে বাঁধ দেয়া শুরু হয়। কোটচাঁদপুর উপজেলার কুশনা ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সরকারের ৪০ দিনের কর্মসংস্থান প্রকল্পের মাধ্যমে দেয়া হয় এ বাঁধ। দু পাশে সিংহভাগ বাঁধ দিয়ে মাঝে সামান্য জায়গা খালি রাখা হয়েছে। যেখানে বাশেঁর সাঁকো দেয়া হয়েছে। বর্ষা মরসুমেও রাস্তাটি রাখার জন্য তারা এ ব্যবস্থা নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন গ্রামবাসী। কিন্তু এভাবে নদীতে বাঁধ দেয়ার কারণে নদীর পানি প্রবাহের ক্ষতি হচ্ছে। তাছাড়া বর্ষা মরসুমে পানি প্রবাহে সমস্যা হওয়ায় আশপাশের ক্ষেত-খামার পানি প্রবেশ করলে ফসলের ক্ষতি হবে। গ্রামবাসী আরো জানায়, বর্তমানে নদী পানি কম থাকলেও বর্ষা মরসুমে নদীর উন্মুক্ত পানি প্রবাহ দারুণভাবে বাধাগ্রস্ত হবে।

এ বিষয়ে কুশনা ইউপি চেয়ারম্যান শরিফুর রহমান টিটো জানান, রাস্তাটি এলাকার মানুষের উপকারে করা হয়েছে। তিনজন মেম্বার ৪০ দিনের কর্মসংস্থানের যে কাজ পেয়েছেন তা সমন্বয় করে এ কাজ করেছেন। এতে নদীর কোনো ক্ষতি হবে না বলে জানান। এ বিষয়ে কোটচাঁদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবপ্রসাদ পাল জানান, বিষয়টি তিনি জানেন না। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে জানান।