ঝিনাইদহ অফিস: ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. একেএম কামালকে গাড়ি পোড়ানোর মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করলে বিজ্ঞ আদালত গতকাল রোববার বিকেলে কারাগারে প্রেরণ করেনে। যৌথবাহিনী গত শনিবার মধ্যরাতে তাকে নিজ বাড়ি থেকে আটক করে থানা পুলিশের কাছে সোর্পদ করে।
পুলিশ জানায়, গত পয়লা ফেব্রুয়ারি শহরের চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় একটি গরুর ট্রাকে আগুন দেয়া এবং ৫-৬টি বাসের গ্লাস ভাঙচুর করে দুবৃর্ত্তরা। এ ঘটনায় সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। সেই সাথে ডা. কামালের বিরুদ্ধে চলমান অবরোধ ও হরতাল এবং নাশকতা সৃষ্টি ঘটনায় অর্থযোগান দাতা হিসেবে অভিযোগ করা হয়েছে। এদিকে জেলা সদর হাসপাতালের একমাত্র হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. একেএম কামালকে আটকের খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকার লোকজন রাতেই থানায় ছুটে যান। সকাল হতে না হতেই পরিবারের লোকজনসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ থানায় ছুটে যান। সকাল ১১টার দিকে সিভিল সার্জন ডা. আব্দুস সালাম, বিএমএ নেতা ডা. দুলাল চক্রবর্তীসহ চিকিৎসকদের একটি দল জেলা প্রশাসক মো. শফিকুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার মো. আলাতাফ হোসেনের সাথে দেখা করেন। সিভিল সার্জন জানান, এ সময় হাসপাতালের কার্ডিও বিভাগের একমাত্র ডা. আটকের ঘটনায় সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়। এ বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে আটকের কারণ জানানো হয়নি। অবশেষে বিকেল ৫টার দিকে আদালতে পাঠানো হলে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
তবে অন্য একটি সূত্র জানায়, ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন নিয়োগ নিয়ে চিকিৎসকদের মধ্যে বিভেদের কারণে ডা. কামালকে অর্থযোদানদাতাসহ জামায়াত সংশ্লিতার অভিযোগ করা হয়েছে। এছাড়া জমিজমা নিয়ে শরিকদের সাথে দ্বন্দ্বের কারণে অর্থবিত্তশালী না হয়েও আদর্শপাড়ার রোগগ্রস্ত ইয়াকুব আলীকে নাশকতায় অর্থ যোগানদাতা হিসেবে আটক করেছে যৌথবাহিনী। অর্থের অভাবে পরিবারটি ধুঁকছে। তার একমাত্র ছেলে শিমুল দোকানের কর্মচারী। পুঁজির অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে আদর্শপাড়ার মুদিদোকান। পিতার জমি বিক্রি করে কোনো রকম একটি টিনশেড বাড়িতে স্ত্রী নাজমা বেগমকে নিয়ে বসবাস করেন। এমন একটি পরিবারকে নাশকতায় অর্থ যোগানদাতা হিসেবে উল্লেখ করায় জনমনে নানা সন্দেহ ছড়িয়ে পড়েছে।
প্রসঙ্গত কয়েক মাস আগে ঝিনাইদহ শহরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মতিয়ার রহমানসহ তিন ব্যক্তিকে অবৈধ অস্ত্রব্যবসায়ী হিসেবে উল্লেখ করে গোয়েন্দা রিপোর্টের সূত্র ধরে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ নিয়ে জেলায় সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। বিক্ষাভ মিছিলসহ প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে প্রতিবাদ জানানো হয়।