ভালোবাসার উচ্ছ্বাসে ভালোবাসার কবি মাতালেন মাথাভাঙ্গা

ফুলের দোকান আর রেস্টুরেন্টগুলোতে লাগে উৎসবের ঢেউ : চিত্তবিনোদনের স্থানগুলোও হয়ে ওঠে রঙিন

 

স্টাফ রিপোর্টার: উচ্ছ্বাস আর উত্সবে গতকাল শনিবার উদযাপিত হয়েছে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনস ডে। প্রিয়জনকে ফুল-চকলেটসহ মনোহর গিফট দিয়ে ভালোবাসা জানিয়েছেন পরস্পর। ফুলের দোকানগুলোতে ছিলো ভিড়। একটি গোলাপ ৫০ টাকা দরেও বিক্রি হয়েছে। চুয়াডাঙ্গার কয়েকটি ফুলের দোকানে প্রায় দু লাখ টাকার ফুল বিক্রির খবর পাওয়া গেছে। প্রেমিক যুগলদের পাশাপাশি তরুণ-তরুণীরা গাঢ় লাল-শাদায় সাজেন চোখটানা সাজে। কেউ কেউ খোঁপায় গাঁদাফুল, পরনে বাসন্তী রঙের শাড়ি, ডান হাতে ধরা ছিলো প্রিয়জনের মুঠো। আর দৈনিক মাথাভাঙ্গা দফতরে বিশ্ব ভালোবাসা দিবসের ছোঁয়া লাগিয়েছেন চুয়াডাঙ্গার প্রেমের কবি, ভালোবাসার কবি গোলাম কবির মুকুল। তিনি তার একগুচ্ছ ভালোবাসার কবিতা পাঠের আসর বসিয়ে জমিয়ে তোলেন সকলকে।

Ashadul

বিশ্ব ভালোবাসা দিবসের সন্ধ্যায় দৈনিক মাথাভাঙ্গা দফতরের প্রধান কার্যালয়ের একটি কক্ষে যখন গোলাম কবির মুকুল শুরু করেন কবিতা, ভালোবাসা খুচরা পয়সা হলে সমস্ত কুমারীদের হাতে হাতে তুলে দিতাম প্রচার পত্রের মতো আমার সব ভালোবাসা…. অমনি করতালিতে মুখোরিত গোটা দফতর। তারপর হয়তো একদিন চলে যেতাম বয়েসী রাতের জোছনার শাল গায়ে জড়িয়ে প্রতীক্ষায় প্রতীক্ষিত যুবতীদের প্রেমের মচমচে উদ্যানে…. কবিতার এ লাইন কবির নিজের আবেগময়ী কণ্ঠে শুনে স্রোতাদের হৃদয়ে যেন ভালোবাসা উথলে ওঠে। গোলাম কবির মুকুল চুয়াডাঙ্গা ঝিনাইদহ বাসস্ট্যান্ডপাড়ার বাসিন্দা। বয়স ষাট ছুঁলেও তারুণ্যে ভরপুর, শুরু থেকে এ পর্যন্ত যতো লেখা তার সবই প্রেমের ছোঁয়া। চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদের আঙিনা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস মাতানো কবি গোলাম কবির মুকুলের ভালোবাসার খুচরা পয়সা শিরোনামের কবিতা দিয়েই মাথাভাঙ্গা দফতর মাতিয়ে তোলেন তিনি। ১৯৮৮ সালে লেখা কবিতাটি সব বয়সের সকলেই হৃদয় ছুঁয়ে যায়। তিনি বলেন, ভালোবাসা আসলে সবার জন্য। ভাইয়ের জন্য ভাই, প্রতিবেশীর জন্য প্রতিবেশী, মায়ের জন্য পিতা, সন্তানের জন্য পিতা-মাতা, পিতা-মাতার জন্য সন্তান, সহকর্মীর জন্য সহকর্মী, পথচারীর জন্য পথচারীর ভালোবাসা না থাকলে কি আর দিনগুলোকে ভালো করা যায়? বিশ্ব ভালোবাসা দিবস আমাদের সেই শিক্ষাই দিক।

জানা গেছে, সেলফোনে ম্যাসেজ, ফেসবুক-টুইটার এবং অনলাইন চ্যাটিং এ পুঞ্জ পুঞ্জ কথার কিশোলয় পল্লবিত হয়। ভালোবাসার রঙ ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। বেড়ানোর পাশাপাশি শোভাযাত্রা, কেককাটা, ফুল, চকলেট, পারফিউম, বই উপহার, শুভেচ্ছা কার্ড বিনিময়, স্কাইপে, ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রামের মতো সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে চলে ভালোবাসার কথামালা, কবিতা-বার্তার প্রকাশ। সেলফি প্রকাশের জোয়ার ছিলো নেটজুড়ে। বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে মিনি ট্রাক, আলমসাধু সাজিয়ে অনেকেই দলবদ্ধভাবে ঘুরেছে। চুয়াডাঙ্গার শিশুস্বর্গ, পুলিশপার্কসহ বিভিন্ন স্থানে ছিলো ভিড়। হোটেল রেস্তোঁরায়ও ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। গতকালই চুয়াডাঙ্গায় উদ্বোধন করা হয়েছে ফুডগার্ডেন। উদ্বোধন দিনে ছিলো উপচেপড়া ভিড়। জোড়ায় জোড়ায় শুধু নয়, দলের দলে চাইনিজ রেস্টুরেন্টে ভিন্ন স্বাদের খাবার খেয়ে নিজেদের মধ্যে ভালোবাসা বিনিময় করেছেন। কিছু পরিবারকে দেখা গেছে তারাও ভালোবাসা দিবসে রাস্তায় বের হয়ে ভালোবাসা দিবসকে করে তুলেছেন আরো বর্ণিল।

চুয়াডাঙ্গার সবকটি ফুলের নার্সারিতে সকাল থেকে ভিড় জমে। ফুলের দোকানগুলোতে ভিড় ঠিক উপচেপড়া না হলেও সারাদিনই দোকানগুলোর সামনে ছিলো ক্রেতার উপস্থিতি। স্বপ্নের ঠিকানা নামক ফুলঘর থেকে গতকাল প্রায় ৫০ হাজার টাকার, বন্ধুত্ব ফুল ঘরের দুটি দোকানে প্রায় ৪৫ হাজার টাকার, ইত্যাদি ফুলঘরের প্রায় ২০ হাজার টাকার ফুল বিক্রি হয়েছে বলে দোকানিদের সাথে যোগাযোগ করে জানা গেছে।