গাংনীর হিজলবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষ

৫ শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধের জের

 

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী উপজেলার হিজলবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষকের যোগদান নিয়ে আবারো সংঘর্ষ হয়েছে। নতুন নিয়োগ পাওয়া প্রধান শিক্ষকসহ ৫ শিক্ষক গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে বিদ্যালয়ে গেলে গ্রামবাসীর সাথে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে আহত হয়েছেন দুজন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিয়োগ পাওয়া প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামানসহ ৫ শিক্ষক লোকজন নিয়ে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করেন। গ্রাম ও কমিটির প্রতিনিধিদের কাছে তাদের বৈধ কাগজপত্র দেখান। এর এক পর্যায়ে গ্রাম আওয়ামী লীগের সভাপতি মসলেম উদ্দীন পক্ষের লোকজন তাদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। কিছু সময় ইটপাটকেল নিক্ষেপের পর মসলেম পক্ষের লোকজন পিছু হটে। ইটের আঘাতে মসলেমের ভাই আক্কাস আলী ও পথচারী রেশমা বেগম আহত হন। রেশমাকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও আক্কাসকে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এদিকে খবর পেয়ে হিন্দা পুলিশ ক্যাম্প পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে বলে জানান গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকরাম হোসেন।

২০১২ সালের ৪ জুলাই প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামানসহ ৫ শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ পান। এমপিওভুক্ত তিন শিক্ষকের পদত্যাগজনিত শূন্যপদ দেখিয়ে তাদের নিয়োগ দেয়া হয়। নিয়ম বর্হিভূতভাবে নিয়োগের অভিযোগ তুলে হিজলবাড়িয়া গ্রামের এক প্রার্থী আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি বর্তমানে চলমান। বিভিন্ন ব্যক্তির অভিযোগের প্রেক্ষিতে মেহেরপুর জেলা প্রশাসক তদন্ত করে শিক্ষা অধিদপ্তরের একটি তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণ করেন। এর প্রেক্ষিতে শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ২০১৩ সালের ২০ মে এক পত্রে নিয়োগ বাতিলের আদেশ দেন। সরকারি বিধি-বিধান মেনে বহুল প্রচলিত পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে নতুনভাবে নিয়োগ দিতে বলা হয়। এর প্রেক্ষিতে মনিরুজ্জামান উচ্চাদালতে রিট পিটিশন করেন। আদালত ডিজির আদেশের স্থগিতাদেশ দেন। বর্তমানে ওই স্থগিতাদেশ চলমান রয়েছে। ওই ৫ জনের বিদ্যালয়ে যোগদান ও প্রতিরোধ নিয়ে বেশ কয়েকবার উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। মামলা ও গ্রামের মানুষের প্রতিরোধের মুখে গত তিন বছর ধরে বিদ্যালয়ে যেতে পারেননি মনিরুজ্জামানসহ ওই ৫ শিক্ষক কর্মচারী। তবে আইনগত বৈধতার ভিত্তিতে গতকাল তারা বিদ্যালয়ে যোগদান করেছেন বলে জানান নিয়োগ পাওয়া প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান। অপরদিকে মসলেম উদ্দীনের অভিযোগ, গায়ের জোরে তারা বিদ্যালয়ে প্রবেশ করেছে।