মহেশপুর জলুলি সীমান্তে বিএসএফ’র বিএসএফ’র গুলিতে দু বাংলাদেশি গরুব্যবসায়ী নিহত

পরিবারে শোকের মাতম : লাশ ফেরত দেয়নি বিএসএফ

 

ঝিনাইদহ/মহেশপুর প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার জলুলি সীমান্তে বিএসএফ’র গুলিতে নিহত হয়েছেন দু বাংলাদেশি। গতকাল বুধবার ভোরের দিকে এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো একজন। এ হত্যকাণ্ডের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিএসএফকে চিঠি দিয়েছে বিজিবি। নিহতরা হলেন- মহেশপুর উপজেলার লেবুতলা গ্রামের মিরাজ আলী মণ্ডলের ছেলে গরু ব্যবসায়ী আমিনুর রহমান (৩৫) ও জলুলি গ্রামের শাহাদত হোসেনের ছেলে ফয়েজ আহমেদ (৪২)। নিহতদের লাশ বিএসএফ হেফাজতে রয়েছে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিজিবি-বিএসএফ কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও এখনও নিহতদের লাশ ফেরত দেয়নি বিএসএফ। এদিকে নিহতদের গ্রামের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।

BSF-2

বিজিবির যশোর ২৬ ব্যাটালিয়নের কোম্পানি কমান্ডার লে. কর্নেল জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, গত মঙ্গলবার সকালে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার লেবুতলা গ্রাম থেকে আমিনুর, ফয়েজ ও ফারুক ভারত থেকে গরু আনতে যান। গতকাল বুধবার ভোরে গরু নিয়ে ভারতের জিতপুর সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ফিরছিলেন তারা। এ সময় ভারতের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার কাশীপুর ক্যাম্পের বিএসএফ টহল দল তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এতে আমিনুর ও ফয়েজ ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ সময় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পালিয়ে আসেন ফারুক। পরে তাকে আহত অবস্থায় যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দুপুরে নিহত আমিনুর ও ফয়েজের গ্রামের বাড়িতে মৃত্যু সংবাদ পৌঁছানোর পর স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।

এলাকাবাসী জানিয়েছেন, বিএসএফ’র গুলিবর্ষণে সীমান্ত এলাকার মানুষকে আতঙ্কে থাকতে হয়। সীমান্তে বিজিবি ক্যাম্প বাড়ানো হলে এর সমাধান সম্ভব বলে জানান তারা। এদিকে নিহতদের লাশ ফেরত চেয়ে সকালে বিএসএফকে চিঠি দেয় দেয় বিজিবি। এ ঘটনায় বিকেলে বিজিবি-বিএসএফ কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পতাকা বৈঠক হলেও এখনও নিহতদের লাশ ফেরত দেয়নি বিএসএফ। পতাকা বৈঠকে বিজিবির যশোর-২৬ ব্যাটালিয়নের কোম্পানি কমান্ডার লেফট্যান্ট কর্নেল জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিএসএফ’র কৃষ্ণনগর সেক্টরের কমান্ডার মিস্টার ডিএ প্রামাণিক। বৈঠক শেষে অংশ নেয়া স্থানীয় যাদবপুর ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান বলেন, আজ বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্ত শেষে নিহতদের লাশ ফেরত দিতে পারে বিএসএফ।

যাদবপুর বিজিবি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার গিয়াস উদ্দিন জানান, ৫১/৬এস পিলারের কাছে ঘটনাটি ঘটেছে। লাশ বর্তমানে ভারতের কাশীপুর বিএসএফ’র হেফাজতে আছে। তারা পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে লাশ ফেরত চেয়ে চিঠি দিয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। সংবাদ পেয়ে ২৬ ব্যাটালিয়নের কমান্ডার লে. কর্নেল জাহাঙ্গীর হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং এ ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, দু দেশের মধ্যে সীমান্তে স্ব-অবস্থান ও শান্তি বজায় রাখার জন্য ইতোমধ্যে ভারতের নদীয়া জেলার কৃঞ্চনগর শহরে একাধিকবার বৈঠক হয়েছে। তারপরও এ হত্যার ঘটনা ঘটছে। এদিকে সকালেই ভারতের ১ নং ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার এসকে সুকলা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং বাংলাদেশের বিজিবির সদস্যদের সাথে মতবিনিময় করেন। যাদবপুর কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার গিয়াস উদ্দিন জানান, তিনি লাশ দেখে নিশ্চিত হয়ে বিএসএফ’র কাছে হত্যার কারণ জানতে চাইলে বিএসএফ তাদের ওপর চড়াও হওয়ার ঘটনা জানায়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত লাশ ময়নাতদন্তের ভারতরে বাগদা থানা পুলিশ নিয়ে গেছে বলে জানা গেছে।