বোমাঘাতে ক্ষতবিক্ষত চুয়াডাঙ্গার বাসচালকের হাত ও পা : ঢাকায় রেফার্ড

বগুড়া থেকে ফেরার পথে নাটোরে বোমা হামলার শিকার বরযাত্রী বহন করা বাস : আহত ৪

 

স্টাফ রিপোর্টার: বগুড়ায় বিয়ে শেষে চুয়াডাঙ্গায় ফেরার পথে বোমা হামলার শিকার হয়েছে বরযাত্রীবাহী বাস সজনী পরিবহন। হামলায় বাসচালক চুয়াডাঙ্গা সাদেক আলী মল্লিকপাড়ার মতিয়ার রহমানসহ আহত হয়েছে ৪ জন। গতকাল শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে নাটোরের বড়াইগ্রাম রাজাপুর নামক স্থানে এ হামলার ঘটনা ঘটে। বাসচালক মতিয়ারকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় গতরাতেই ঢাকার পঙ্গুতে নেয়া হয়েছে। আহত অপর তিনজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এছাড়া গতপরশু রাতে চুয়াডাঙ্গার একটি ট্রাক সিলেটে পেট্রোলবোমা হামলার শিকার হয়েছে। চালক ও হেলপার দ্রুত নেমে পড়ায় তাদের আর দগ্ধ হতে হয়নি। ট্রাকটি চুয়াডাঙ্গার কেজিএন পরিবহন সংস্থার।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা স্টেশনের অদূরবর্তী মাছের আড়তপট্টির হরিজন সম্প্রদায়ের রতনের ছেলে মুন্না কুমারের বিয়ে ঠিক হয় বগুড়ার নূরানী মোড় সুইপারকলোনির জগদীশের মেয়ে পূজার সাথে। গতপরশু বৃহস্পতিবার সকালে চুয়াডাঙ্গার সজনী পরিবহনের একটি বাসযোগে (চুয়াডাঙ্গা-জ-১১-০০০৭) বরসহ অর্ধশত বরযাত্রী রওনা হন। রাতে বিয়ের মূল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। গতকাল প্রথা অনুযায়ী বিয়ে শেষে বর-কনে ও বরযাত্রী নিয়ে চুয়াডাঙ্গায় ফেরার উদ্দেশে রওনা হয়। বিকেল ৪টার দিকে সড়কের নাটোরের বড়াইগ্রামের রাজাপুর নামক স্থানে পৌঁছুলে একটি বোমা নিক্ষেপ করে দুষ্কৃতীরা। বোমাটি বাসচালক মতিয়ার রহমানের (২৭) ডান দিকে লাগে। বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়। ডান হাতের কবজি উড়ে যায়। পায়েও গুরুতর জখম হন তিনি। জখম মতিয়ার রহমান ড্রাইভার চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের সাদেক আলী মল্লিকপাড়ার হাসান আলী ওরফে বুড়োর ছেলে। চালকের পাশের আসনে থাকা চুয়াডাঙ্গা ভিমরুল্লার মৃত ইসলাম উদ্দীনের ছেলে রনি (৩০) ও কেদারগঞ্জপাড়ার শহাবুদ্দিনের ছেলে জনি (২৮) এবং বরের পিতা রতন কুমার। রনি ও জনি অবশ্য বরযাত্রী ছিলেন না। এরা বগুড়া থেকে পরিচিত বাসচালক পেয়ে বাড়ি ফিরছিলেন।

ঘটনার পর বাসটি বড়াইগ্রাম রাজাপুরের পরিবহন শ্রমিকদের হেফাজতে রেখে চালকসহ আহত রনি ও জনি মাইক্রোবাসযোগে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হন। রাত ১০টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পৌঁছান তারা। বর-কনে ও বরযাত্রীরা ট্রেনযোগে চুয়াডাঙ্গার উদ্দেশে রওনা হয়। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়ার পর চালক মতিয়ারের হাতে ও পায়ে ব্যান্ডেজ দেয়া হয়। রক্তক্ষরণে অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে পড়ায় তাকে রক্ত দিতে হয়। রাতেই জরুরিভাবে তাকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেন কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মাসুদ রানা। তিনি বলেছেন, বোমার আঘাতে মতিয়ারের ডান হাতের কয়েকটি আঙ্গুলসহ কবজির কিছু অংশ উড়ে গেছে। পায়েও গুরুতর জখম হয়েছে। এছাড়া রনি ও জনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরিয়ে নেয়া হয়েছে। বরের পিতাকে স্থানীয় একটি চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়। তিনি অবশ্য বরযাত্রীদের সাথেই রাতের রকেট মেলযোগে চুয়াডাঙ্গার উদ্দেশে রওনা হন।

বাসচালকসহ আহতরা মন্তব্য করতে গিয়ে বলেছে, দেশজুড়ে পেট্রোলবোমা, বোমা হামলারই অংশ এ হামলা। আমরা বুঝতেই পারিনি বিয়ের গাড়িতেও ওরা ওভাবে বোমা ছুড়ে মারবে। জানি না- আন্দোলনের নামে দেশে এ অশান্তির আগুন নিভবে কবে।