যশোরে হরতালে দু যুবকের মৃত্যু নিয়ে রহস্য

স্টাফ রিপোর্টার: যশোরের মনিরামপুরে হরতাল সমর্থক দু যুবককে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহতের ঘটনায় পুলিশ ও স্বজনদের পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। নিহতের স্বজনদের দাবি কাঁচামাল (তরকারি) ব্যবসায়ী দু যুবককে আটকের পর পুলিশ পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে ট্রাক চাপা দিয়েছে। কিন্তু পুলিশের দাবি, রাতে পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করতে গিয়ে ট্রাকের চাপায় তারা দুজন নিহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে ২টি পেট্রোলবোমা ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ভোর রাতে যশোর-মনিরামপুর সড়কের মনিরামপুরের কুয়াদা এলাকার ব্যাগারিতলা নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- মনিরামপুর উপজেলার তাহেরপুর গ্রামের আবদুল আজিজের ছেলে ইউসুফ আলী ও দুর্গাপুর গ্রামের আতিয়ার রহমানের ছেলে লিটন। তারা দুজন মনিরামপুর বাজারের কাঁচামাল আড়তে কেশবপুর ভাণ্ডার নামের একটি প্রতিষ্ঠানে ব্যবসা করতেন।

নিহত ইউসুফ আলীর ভাই তাজাম্মুল হোসেন অভিযোগ করেন, পুলিশ ওদের মেরে ফেলেছে। লাশ দেখলি তো বুঝা যাচ্ছে কুপিয়ে মারা হয়েছে। এক্সিডেন্ট করলি ছুলে যাবে, গোশ কেটে যাবে। প্রথম ম্যারেছে, ভিম মার দিয়েছে। মাথায় টাতায় গড়ান মার দিয়েছে। মারার পর মনে হয়তো মোটরসাইকেল ডলে (চাপা) দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ওরা কোনো রাজনীতির সাথে জড়িত নয়। কাঁচামালের ব্যবসা করে। গত সোমবার রাত ১১টার দিকে পাওনা টাকা আদায় করতি চালকিডাঙ্গার দিকে যায়। পুলিশ ওদের রাস্তায় ধরে ফেলে। এরপর মেরে ফেলেছে। নিহত ইউসুফের চাচাতো ভাই মাহবুব জানান, সোমবার রাতে পুলিশ ওদের দুজনকে আটক করে। এখন দেখছি তারা লাশ। আপনারা বুঝে নেন কি হয়েছে। পেট্রোলবোমা হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইউসুফ আলী ও লিটনের পরিবারের সদস্যরা। তাদের দাবি, পরিবার বিএনপির সমর্থক হলেও রাজনীতির মাঠে তারা থাকেন না। শুধু ভোট দেন। বিএনপির সমর্থক এ কথা শুনে পুলিশ আটকের পর তাদেরকে পিটিয়ে হত্যা করেছে।

মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা খবির আহম্মেদ জানান, সোমবার রাতে মনিরামপুর সড়কে দুর্বৃত্তরা পিকআপে অগ্নিসংযোগ করে। তাদের ধরার জন্য আমরা তৎপর ছিলাম। পরে জানতে পারি রাত ৩টা ১৫ মিনিটের দিকে ব্যাগারিতলা এলাকায় দুজন পিকেটার মোটরসাইকেলে করে ট্রাকে পেট্রোলবোমা মারার উদ্যোগ নিয়েছিলো। চালক বিষয়টি বুঝতে পেরে ওদেরকে চাপা দিয়েছে। ঘটনাস্থলে দুটি পেট্রোলবোমা পাওয়া গেছে। এ সময় একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ প্রসঙ্গে ওসি মোল্লা খবির আহম্মেদ জানান, এ কথা সত্য নয়। আমি এমন শুনিনি।