লাগাতার হরতাল অবরোধের হুমকি বিএনপির : এখনো যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন খালেদার

স্টাফ রিপোর্টার: বিদ্যুত ফিরলেও এখনো যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার। গুলশান কার্যালয়ে ১৯ ঘণ্টা পর বিদ্যুত সংযোগ দেয়া হলেও ইন্টারনেট, টেলিফোন, ফ্যাক্স ও ডিশলাইনের সংযোগ এখনো বিচ্ছিন্ন রয়েছে। তিনদিন ধরে টেলিভিশনে দেশের কোনো খবর দেখতে পারছেন না তিনি।

গতকাল রোববার বিকাল পৌনে ৩টার দিকে টিভি ক্যাবল অপারেটররা ডিশ লাইনের সংযোগ দেয়ার জন্য কার্যালয় অভিমুখে যেতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কার্যালয়ের আশপাশে কিছু দূরত্বের মধ্যে মোবাইলের নেটওয়ার্কও বন্ধ। কার্যালয়ে অবস্থানরত বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার অভিযোগ করেন, লোক দেখানো বৈদ্যুতিক সংযোগ দেয়া হলেও অন্যান্য সংযোগ এখনো দেয়া হয়নি। ইন্টারনেট, ডিশলাইন ও টেলিফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

তিনি বলেন, কম্পিউটারে কাজ করা যাচ্ছে না। তারা মোবাইলেও ঠিকমতো নেটওয়ার্ক পাচ্ছেন না। ডিশ বিচ্ছিন্ন থাকায় ম্যাডাম টেলিভিশনে কোনো খবর দেখতে পান না। তবে পত্রিকা পড়ে দেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে কিছুটা অবহিত হন। বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের আরেক সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে এখনো ডিশলাইন এবং অন্যান্য সংযোগ বিচ্ছিন্ন। বিকাল পৌনে ৩টার দিকে ডিশ লাইনের কাজ করার জন্য ক্যাবল অপারেটর আসতে চাইলে গুলশান-২ নম্বরে পুলিশ তাদের বাধা দেয়।

এ অবস্থায় দলটি বলেছে, এসব সেবা দ্রুত পুনঃস্থাপন না করা হলে অবিরাম হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি দেয়া হবে। গতকাল রোববার বিএনপির পক্ষ থেকে দলটির যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ এক বিবৃতিতে এ হুমকি দেন। তিনি বলেন, গণতন্ত্র হত্যাকারী আওয়ামী শক্তিকে বিতাড়নের এ সংগ্রামে দেশবাসীকে সাময়িক ত্যাগ স্বীকারে আহ্বান জানিয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ বিবৃতিতে বলেন, এখন পর্যন্ত খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে ইন্টারনেট, টেলিফোন, ক্যাবল নেটওয়ার্কসহ সব বৈদ্যুতিক যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনঃস্থাপন করা হয়নি। অবিলম্বে এসব সংযোগ পুনঃস্থাপন না করা হলে দেশবাসীকে সাথে নিয়ে অবিরাম হরতাল ও অবরোধ অব্যাহত রাখা হবে। দেশব্যাপি চলমান ৭২ ঘণ্টার শান্তিপূর্ণ হরতাল-অবরোধ কর্মসূচিকে সফল করার জন্য সংগ্রামী দেশবাসীকে বিনীত আহ্বান জানাচ্ছি। অবৈধ সরকারের পদত্যাগ এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত দেশবাসীকে সাথে নিয়ে অবিরাম সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।

বিবৃতিতে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশ এখন গণতন্ত্রের পরিবর্তে শেখ হাসিনার মনোতন্ত্র এবং ইচ্ছাতন্ত্রে প্রবেশ করেছে। ইচ্ছামতো গুলি করে আন্দোলনকারীদের হত্যার লাইসেন্স দেয়া হয়েছে দলীয়কৃত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এবং দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নিজে। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইইউসহ পৃথিবীর তাবৎ উন্নত রাষ্ট্র, মানবাধিকার সংস্থা ও সংগঠনসমূহের উদ্বিগ্নতা সত্ত্বেও অবৈধ সরকার প্রতিনিয়ত ক্রসফায়ারের মাধ্যমে বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের পাইকারি হারে হত্যা করছে।