দামুড়হুদার কাঠ খচিত কর্মজীবিরা ভালো নেই

তাছির আহমেদ: স্বল্প পুঁজিতে আত্মনির্র্ভরর্শীল হওয়ার যে কয়েকটি ব্যবসা রয়েছে তার মধ্যে কাঠের কারুকাজ অন্যতম। কারণ দৈনন্দিন ব্যবহারের আসবাবের মধ্যে কাঠের তৈরি আসবাবপত্রই বেশি। যে কোনো কাঠের আসবাবপত্রে অল্পবিস্তর হলেও খোদাই কাজ থাকে। কাঠ খোদাইকর্ম একটি শিল্প। বহুকাল আগে থেকেই কাঠের কারিগররা কাঠের আসবাবপত্র তৈরিতে এবং তার সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে কাঠ খোদাই বা কুন্দানোর কাজ করে আসছেন। বর্তমান প্রেক্ষাপটে অন্যান্য উপকরণের তৈরি আসবাবপত্র পাওয়া গেলেও কাঠের আসবাবপত্রের চাহিদা অপরিসীম। কাঠের আসবাবপত্রের প্রতি আকর্ষণের অন্যতম কারণ খোদাই করা কারুকাজ। একটা সময় ছিলো একজন কাঠমিস্ত্রিই আসবাবপত্র তৈরির সব ধাপ একাই সম্পন্ন করতো। বর্তমানে কাঠে খোদাই বা নকশা তৈরির কাজটি অভিজ্ঞ কারিগররাই করে থাকেন এবং তারা শুধু খোদাইকর্মের ওপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তাই এ এলাকায় প্রচুর চাহিদার কথা বিবেচনায় রেখে স্বল্প পুঁজিতে অনেকেই গড়েছেন কাঠ খোদাইকর্মের একটি কারখানা বা প্রতিষ্ঠান।
দামুড়হুদা বাজারে অবস্থিত ঈগল নকশা ঘরের প্রোপাইটর সুজিত জানান, প্রথমে কাঠের ওপর ছাপ দিয়ে নকশার অঙ্কন করা হয় তারপর হাতুড়ি বাটালি ব্যবহার করে কাঠের ওপর নকশার অঙ্কনটি কাটা হয়। গতানুগতিক ডিজাইনের চেয়ে একটু ভিন্ন ধরনের ডিজাইন করতে পারলে সহজেই গ্রাহকের দৃষ্টি আকর্ষণ সম্ভব। কাঠ খোদাইয়ের কাজটি কষ্টকর ও সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। এ ব্যবসায়ও রয়েছে প্রতিযোগিতা। তাই নির্ধারিত কয়েকটি আসবাবপত্রের দোকানের সাথে যোগাযোগ রাখি বিভিন্ন অর্ডারের সুবিধা পেতে। অর্ডার পাওয়ার পর যথাসময়ে তা ডেলিভারি দিতে হয়। আসবাবপত্রের ডিজাইন বা নকশার অনুপাতে কাজের মূল্য নির্ধারিত হয়ে থাকে।
দামুড়হুদার বাজারে সর্বপ্রথম নকশা বা কুন্দানোর কাজ শুরু করে বেগোপাড়ার শাহ আলম। তিনি জানান, এলাকার কয়েক শতাধিক মানুষের ভাগ্য বদলে দিয়েছে এই কাঠ শিল্পের কাজ। এরা এখন কম মূল্যের চমৎকার কাঠের ওপর কারুকাজ করে মুক্তি ক্ষুধা নামক দানবের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করে। তাদের নিপুন হাতের কারুকাজের ফার্নিচার এখন এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের অভ্যন্তরে রপ্তানি হয়। যথাযথ ডিজাইন ও কাজের মান অক্ষুণ্ণ রাখার চেষ্টার ওপর নির্ভর করে এ ব্যবসার সফলতা। এ ব্যবসায় স্বল্প পুঁজিতে সারা বছর কাজ করার সুযোগ রয়েছে। নিজস্ব মেধা ও মননের সমন্বয়ে নতুন নতুন ডিজাইন তৈরির মাধ্যমে কাস্টমার আকৃস্ট করার পাশাপাশি নিজেকে স্বাবলম্বী করেছি। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে অধিক বিদ্যুত বিলের রোষানলে হাবুডুবু খাচ্ছি।