গাংনীতে হারানো দিনের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা

Gangi pic_30.01.15_ (7)

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী উপজেলার চেংগাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে হয়ে গেলো গ্রামীণ খেলাধুলা প্রতিযোগিতা। ছোটবেলায় যারা দর্শক হিসেবে এসব খেলা উপভোগ করতেন আজ তারাই ছিলেন মূল প্রতিযোগী। গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে বিভিন্ন ইভেন্টের খেলা। বৃদ্ধরা খেলায় অংশ নিয়ে যেমনি হারিয়ে গিয়েছিলেন ছোটবেলায়, আর খেলা উপভোগ করে মুগ্ধ হয়েছেন হাজার হাজার দর্শক। হাজার বছর ধরে বাঙালির যে সাংস্কৃতিক বিকাশ তার মধ্যে অন্য সংস্কৃতিক ঢুকে বাংলার সাংস্কৃতি হারিয়ে যেতে বসেছে। আর তাইতো হা-ডু-ডু, দাঁড়িবাধা, বৈচি, গাদনসহ বাঙালির মজার মজার এখন অনেকটাই স্মৃতির পাতায় ঠাঁই হয়েছে। আকাশ সংস্কৃতি, আধুনিক ইন্টারনেটের প্রতি ঝুঁকে পড়ছে তরুণ সমাজ। তরুনদের আর আগের মতো দেখা যায় না খেলার মাঠে। ফলে সমাজে তাদের অনেকেই জড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন অপরাধে। এমনই মতামত প্রকাশ করে আয়োজকরা জানান, বাংলার হারানো সেই খেলাধুলার সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনতে আয়োজন করা হয় গ্রামীন খেলা ধুলার। ছোটদের মোরগ লড়াই, লাফ, বিস্কুট দৌড়, অঙ্ক দৌড়, বড়দের বস্তা দোড়, তৈলাক্ত বাঁশ ও কলাগাছ বেয়ে ওঠা, চোঁখ বেধে হাড়ি ভাঙাসহ বিভিন্ন খেলায় অংশ নেয় গ্রামের শিশু, পুরুষ ও নারীরা। এ ধরনের ধরনের ভিন্ন আয়োজনে দর্শকরা মুগ্ধ। আয়োজনের মধ্যে বিশেষ আকর্ষণ ছিলো মধ্য বয়সী ও শিশুদের বালিশ যুদ্ধ। চেঙ্গাড়া-ফতাইপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চেঙ্গাড়া গ্রামের বাসিন্দা মকবুল হোসেন বালিক যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি জানান, খেলাধুলার মধ্যে যে কতো আনন্দ তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। ওই প্রতিযোগিতার কথা সারাজীবন মনে থাকবে বলে জানান তিনি। এদিকে তৈলাক্ত কলাগাছে উঠতে ব্যর্থ হয়েছেন প্রতিযোগীরা। এক ফুট ওপরে উঠে দু ফুট নিচে নেমে যাওয়ার দৃশ্য দর্শকদের বেশ আনন্দ জোগায়। হাড়িভাঙা খেলায় পুরুষের পাশাপাশি নারীরা ছিলেন এগিয়ে। দুজন করে নারী-পুরুষ পৃথক ইভেন্টে হাড়ি ভেঙে পুরস্কার অর্জন করেন।

দর্শক ময়না আক্তার ও নাছরিন নাহার মিতা জানান, শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশের জন্য খেলাধুলা অপরিহার্য। এ ধরনের আয়োজন শিশুদেরকে খেলাধুলার দিকে টানতে সহায়ক হবে। আয়োজক কমিটির পক্ষে আবু ইউসুফ জানান, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে দ্বিতীয়বারের মতো তারা ওই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন। বছরের বিশেষ কোনো দিনে নয় এ ধরণের আয়োজন মাঝে মধ্যে করা হবে বলে জানান তিনি।