পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্মারকলিপি পেশ

স্টাফ রিপোর্টার: দর্শনা ও জীবননগর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বেতন-ভাতা ও পেনশন প্রবর্তনসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা সরকারের রাজস্ব তহবিল থেকে প্রদানের লক্ষ্যে চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংদস্যের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ করেন। অপরদিকে মহেশপুর পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ঝিনাইদহ-৩ আসনের সংসদ সদস্য নবী নেওয়াজের মাধ্যমে স্মারকলিপি পেশ করেন।

দর্শনা অফিস জানিয়েছে, দর্শনা পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বেতন-ভাতা ও পেনশন প্রবর্তনসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা সরকারের রাজস্ব তহবিল থেকে প্রদানের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী বরাবর দর্শনা পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য হাজি আলী আজগার টগরের মাধ্যমে স্মারকলিপি পেশ করা হয়েছে। গতকাল সোমবার সকাল ১০টার দিকে দর্শনা পুরাতন বাজারস্থ এমপি টগরের বাসভবনে এ স্মরকলিপি পেশ করা হয়। স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্থানীয় সরকার শক্তিশালীকরণ, সুশাসন প্রতিষ্ঠা, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গঠন ও ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশের পরিণত করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। নগরায়নের এ যুগে পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ সরকারের ওই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। অথচ বাংলাদেশের অধিকাংশ পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ মাসের পর মাস বেতন না পেয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে অর্ধাহারে-অনাহারে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এ সেবায় নিয়োজিত মানুষগুলো আর্থিক অনটনের কারণে প্রতিনিয়ত সমাজে হেয়প্রতিপন্ন হচ্ছে। এমনকি চাকরি শেষে যখন অবসরে যান তখন খালি হাতে পৌরসভা থেকে বিদায় নিতে হয়। চাকরিরত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে এ সমস্যা আরও প্রকট হয়ে দাড়ায়। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিবার-পরিজন পাওনা অর্থ পাওয়ার জন্য দিনের পর দিন পৌরসভায় ঘুরতে থাকেন। কখনও বা কিস্তিতে যে সামান্য টাকা পৌরসভার পক্ষ থেকে দেয়া হয় সেটা সংসারের কয়েক দিন খরচ মেটাতে তা শেষ হয়ে যায়। পরবর্তী প্রজন্মের সাবলম্বী হওয়ার কোনোই সুযোগ থাকে না। দেশের সর্বাপেক্ষা প্রাচীনতম প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্বেও এ প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী-কর্মকর্তারা এখনও পর্যন্ত মানবেতন জীবনযাপন করছে। এ অবস্থার নিরসনের দাবিতে সারাদেশের ৩১০টি পৌরসভার ন্যায় দর্শনা পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য হাজি আলী আজগার টগরের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তাদের আকুতির কথা তুলে ধরে স্মারকলিপি পেশ করা হয়। এ সময় দর্শনা পৌরসভার পক্ষে উপস্থিত ছিলেন- চুয়াডাঙ্গা জেলা পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ, ইউনুচ আলী, রুস্তম আলী, রুমি আলম পলাশ, শাহ আলম, সরোয়ার হোসেন, আরিফিন হোসেন, মমিনুল ইসলাম, আব্দুর রাজ্জাক, শহিদুল ইসলাম, দোস্ত মোহাম্মদ, জাহিদুল ইসলাম, তছের আলী, গোলাম কিবরিয়া, আবুল হোসেন মিস্টার, মেহেদী হাসান প্রমুখ।

জীবননগর ব্যুরো জানিয়েছে, জীবননগর পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বেতন ভাতা ও পেনশন সুবিধা প্রবর্তনসহ সরকারের রাজস্ব তহবিল থেকে বেতন-ভাতা প্রদানের দাবিতে চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য হাজি আলী আজগার টগরের নিকট স্মারকলিপি পেশ করেছেন। গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সংসদ সদস্যের দর্শনাস্থ বাড়িতে এ স্মারকলিপি পেশ করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি আ.ন.ম. মোস্তফা কামাল, সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, সহসাধারণ সম্পাদক সাজেদা আক্তার, সাংগঠনিক সম্পাদক সরাফত হোসেনসহ পৌরকর্মকর্তা কর্মচারীবৃন্দ।

মহেশপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, দেশের অতি পুরাতন পৌরসভার মধ্যে মহেশপুর একটি পৌরসভা। এই পৌরনভার কর্মচারীগণ বিগত ১ বছরের অধিক বেতন-ভাতা না পেয়ে স্থানীয় এমপির কাছে স্মারকলিপি পেশ করেছেন।

মহেশপুর পৌরসভার কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিবুল আলম খাঁন স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিসূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ৬-২০ মাস পর্যন্ত কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বকেয়া রয়েছে। এতে তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছে। তাদের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার খরচ এমনকি চিকিৎসা পর্যন্ত করাতে পারছেন না। তারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে সরকারের রাজস্ব খাত থেকে বেতন-ভাতা দাবি জানিয়ে ঝিনাইদহ-৩ আসনের এমপি মো. নবী নেওয়াজের কাছে গত রোববার সকালে সকলে মিলে এ স্মারকলিপি পেশ করেন।