বাদশাহর সাদামাটা দাফন : সৌদিতে নেই রাষ্ট্রীয় শোক

মাথাভাঙ্গা মনিটর: দেশের সরকার প্রধান বা প্রেসিডেন্টের মৃত্যুতে যেসব আনুষ্ঠানিকতা করার কথা এর কোনোটাই করা হয়নি সৌদি আরবের বাদশা আবদুল্লাহর ক্ষেত্রে। সাধারণ শাদা আবরণে শুক্রবার কবরে চিরনিন্দ্রায় শায়িত হলেন তিনি। তার পূর্ব পুরুষদের মতোই সাধারণ নাগরিকদের মতো তাকে কবর দেয়া হয়েছে। ইসলামে লাশ নিয়ে আড়ম্বর এবং শোক প্রকাশ শিরকের শামিল বলে সৌদি আরবে তা গুরুত্ব সহকারে মেনে চলা হয়। বাদশাহর মৃত্যুতে সৌদি আরবে সরকারিভাবে কোনো শোক দিবস পালনের ঘোষণা দেয়া হয়নি, জাতীয় পতাকাও অর্ধনমিত রাখা হয়নি। তার মৃত্যুতে সৌদি আরবের রাজপথে কোনো শোকৱ্যালিও হয়নি। শুক্রবার ও শনিবার যথারীতি অফিস বন্ধ থাকার পর আজ রোববার আবার খুলবে। এর আগে শুক্রবার আসরের নামাজের পর রাজধানী রিয়াদের গ্রান্ড মসজিদে তার নামাজের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজার নামাজে ইমামমতি করেন মসজিদের ইমাম তুর্কি বিন আব্দুল্লাহ। সৌদি বাদশার জানাজায় তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ, মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের শাসক এবং বহু দেশের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। আসরের নামাজের পর শহরের একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে বাদশার লাশ মসজিদের নিয়ে আসা হয়। জানাজার নামাজ শেষে সাধারণ স্ট্রেচারে করে বাদশার নিকটাত্মীয়রা সেটি বহন করে তাকে কবরে শায়িত করেন। বাদশাকে সমাহিত করার সময় কোনো আনুষ্ঠানিকতার আয়োজন ছিলো না। তবে জীবদ্দশায় বাদশাহ বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়ববহুল বিমানে ভ্রমণ করতেন। ২০০৬ সালে ফাঁস হওয়া মার্কিন কূটনৈতিক তারবার্তায় জানা যায় যে, তিনি মার্কিন একজন কূটনীতিককে বলেছিলেন যে তার বিমানটিতেও যেন এয়ার ফোর্স ওয়ানের (মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিমান) মতোই নিরাপত্তা ব্যবস্থা সংযোজন করে দেয় বোয়িং। তবে অন্যান্য ক্ষেত্রে বাদশাহ আবদুল্লাহ তার ভাই এবং ভাতিজাদের মতো বিলাসী জীবনযাপন করতেন না। তিনি ছিলেন মিতব্যয়ী। মধ্যপ্রাচ্যের ব্যয়বহুল প্রাসাদে অবকাশ যাপনের পরিবর্তে তিনি মরুভূমির শিবিরে সময় কাটাতেন। ক্ষমতায় থাকাকালে তিনি তার পরিবারের সদস্যদের ব্যয় হ্রাসের পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। তিনি প্রিন্সদের টেলিফোন বিল প্রদান এবং রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থায় ভ্রমণের জন্য আগাম বুকিংয়ের নির্দেশ দিয়েছিলেন।