দাবি না মানা পর্যন্ত অবস্থান ধর্মঘটে থাকবেন শিল্পীরা

স্টাফ রিপোর্টার: বিএফডিসিতে চতুর্থ দিনের মত হিন্দি আর উর্দু ছবির বিরুদ্ধে শিল্পীদের আন্দোলন কর্মসূচি চলছে। আন্দোলনের কর্মসূচি অনুযায়ী বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ঐক্যজোট ব্যানারে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে স্মারকলিপি প্রদান করা হয় ২২ জানুয়ারি। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি দেলোয়ার জাহান ঝন্টু, সাধারণ সম্পাদক মুশফিকুর রহমান গুলজারসহ ফিল্ম এডিটরস গিল্ডের সভাপতি আবু মুসা দেবু, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র গ্রাহক সমিতির সভাপতি রেজা লতিফ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে স্মারকলিপি নিয়ে যান। চলচ্চিত্র শিল্পের সঙ্কট, ভিডিও পাইরেসি, রুচিহীন আকাশ সংস্কৃতি, অস্বাস্থকর ও নিম্নমানের প্রদর্শন ব্যবস্থা, পুঁজির অভাব, আমদানি নিষিদ্ধ উপমহাদেশীয় ভাষার চলচ্চিত্র প্রদর্শনের চক্রান্ত সহ আরো নানা বিষয় এ স্মারকলিপিতে স্থান পায়।

চার পৃষ্ঠার এ স্মারকলিপিতে এদেশে হিন্দি ও উর্দু তথা উপমহাদেশীয় ছবি আমদানি ও প্রদর্শন বন্ধের নির্দেশ দিয়ে  চলচ্চিত্র শিল্পকে বাঁচাতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির মহাসচিব মুশফিকুর রহমান গুলজার বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য তার বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছি। তার সাথে দেখা করার কথা ছিলো প্রধানমন্ত্রী মিটিঙে ব্যস্ত আছেন এবং তার প্রেসসচিবের সহকারী বলেছেন স্মারকলিটি প্রধানমন্ত্রী বরাবর পৌঁছে দেবেন। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে কি পদক্ষেপ নেন আমরা তার অপেক্ষায় রইলাম। এদিকে বিএফডিসির মূল গেটের বামপাশের মঞ্চে অবস্থান ধর্মঘট কমসূচিতে অংশ নিয়ে বক্তরা হিন্দি ও উর্দু ভাষার চলচ্চিত্র যাতে মুক্তি দেয়া না হয় এবং এর বিপক্ষে বিভিন্ন যুক্তি ও তর্ক তুলে ধরেন। সমাবেশে পরিচালক অভিনেতাসহ চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সকলেই উপস্থিত ছিলেন। অভিনেতা অমিত হাসান বলেন, বাংলার মাটিতে হিন্দি ও উর্দু ছবি চলবে না। যদি চলে বাংলা ছবি বন্ধ হয়ে যাবে। তাদের অনেক টাকার ব্যবসা। আমাদের দেশ ছোট তাই আমাদের ব্যবসাও ছোট। একটি কুচক্রীমহল আমাদের এ চলচ্চিত্র শিল্পকে ধ্বংস করার পাঁয়তারা করছে। যদি শুক্রবার হলে হিন্দি ছবি চলে তাহলে হলে হলে আগুন জ্বলবে। অভিনেতা জায়েদ খান বলেন, আমরা সবসময়ই হিন্দি ছবির বিরুদ্ধে। বাংলা আমাদের মাতৃভাষা। কিন্তু কিছু অসাধু লোক বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে ধ্বংস করার জন্য হিন্দি ও উর্দু ভাষার চলচ্চিত্র চালানোর ব্যবস্থা করছে। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরবো না।

অভিনেতা ওমর সানি বলেন, আমরা আর কোনো কাজ শিখিনি। যেটা শিখেছি সেটা যদি বন্ধ হয়ে যায় আমরা কোথায় যাবো? আমরা তো চুরি-ডাকাতি করতে পারবো না। প্রধানমন্ত্রীর কাছে অসহায়ভাবে জানাচ্ছি আপনি আমাদেরকে বাঁচান। একটা সময় বাংলা চলচ্চিত্রের স্বর্ণযুগ ছিলো। এখন আমরা বাজে সময়ের মধ্যদিয়ে যাচ্ছি। তার মধ্যে যদি হিন্দি ও উর্দু ভাষার চলচ্চিত্র মুক্তি পায় তাহলে আমাদের কি হবে? পরিচালক এফ আই মানিক বলেন, যে গোষ্ঠী বা মহল এ চক্রান্ত করছে তাদেরকে সাবধান করে দিয়ে বলতে চাই আপনারা বাংলা চলচ্চিত্রকে ধ্বংস করার চেষ্টা করবেন না। তা না হলে আপনাদের বিরুদ্ধে যতো ধরনের কঠোর পদক্ষেপ নিতে হয় আমরা নেবো। এ সময় সভামঞ্চে চিত্রনায়ক রুবেল, শিল্পী চক্রবর্তী, আহমেদ শরীফ, সাকি, দেবাশীষ বিশ্বাসসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।