কৃতী ফুটবলার মামুন জোয়ার্দ্দারের সৌজন্যে চুয়াডাঙ্গায় প্রীতি ফুটবল ম্যাচ
ইসলাম রকিব: কৃতী ফুটবলার মামুন জোয়ার্দ্দারের সৌজন্যে চুয়াডাঙ্গায় প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেল ৪টায় চুয়াডাঙ্গা টাউন ফুটবল মাঠে অনুষ্ঠিত ওই প্রীতি ম্যাচে মুখোমুখি হয় সদ্য প্রতিষ্ঠিত প্রথম রাজধানী ফুটবল একাডেমী ও তালতলা একাদশ। খেলা গোলশূন্য ড্র হয়। চুয়াডাঙ্গা টাউন মাঠ ভরে উঠেছিলো ফুটবল প্রিয় দর্শকে। খেলা দেখার পাশাপাশি সকলেরই প্রায় একই ইচ্ছা ছিলো কৃতীফুটবলার মামুন জোয়ার্দ্দারকে কাছ থেকে দেখা। টাউন মাঠে মামুন জোয়ার্দ্দারের উন্মুক্ত চলাফেরা ও ফুটবলারদের সাথে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলা তাকে কাছ থেকে দেখার কাজটি সহজ হয়ে ওঠে। তবে কোনো চেয়ার বা সোফায় বসে নয়, মামুন জোয়ার্দ্দার একেবারে মাটিতে দর্শকসারিতে বসে ফুটবল খেলা উপভোগ করেছেন।
খেলার ফাঁকে একান্ত আলাপচারিতায় মামুন জোয়ার্দ্দার বলেন, এ টাউন মাঠ আমার মায়ের মতো। এ মাঠের পাশেই শহীদ আবুল কাশেম সড়ক সংলগ্ন নিমগাছ ও কৃষ্ণচুড়া গাছটির কথা আজো মনে পড়ে। যদিও গাছ দুটি আজ নেই। তারপরও আজ মনে পড়ে, এ গাছের নিচে বসে বুট, হুজ ও জার্সি পরে তারপর মাঠে নেমেছি। এ মাঠে খেলেছি প্রাণভরে। আজ এ সবই যেন স্মৃতি। তারপরও এ মাঠকে ভুলে থাকতে পারি না। (কানাডা) প্রবাস থেকে যখনই চুয়াডাঙ্গায় আসি মনটা ছুটে আসে এ মাঠে। এখন নিজে আগের মতো খেলতে না পারলেও নতুন প্রজন্মের ফুটবলারদের মধ্যে নিজেকে খুঁজে পেতে চাই মন।
মামুন জোয়ার্দ্দার তার ফুটবল ক্যারিয়ার সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন, ১৯৮৯ সালে অনুর্ধ্ব-১৯ ফুটবলের মাধ্যমে আমার জাতীয় ফুটবলে পদার্পণ। এরপর ১৯৯০ সালে কোরিয়া, একই বছর এশিয়ান ক্লাব কাপে জাপানের বিরুদ্ধে বেস্ট খেলোয়াড় নির্বাচিত, ১৯৯১ সালে ব্রাদার্স ইউনিয়নের হয়ে পাকিস্তান সফর, ১৯৯২ সালে থাইল্যান্ডের ক্লাব কাপ, ১৯৯৩ সালে আবাহনীর হয়ে ভারতের চাম্স কাপ, ১৯৯৪ সালে মায়ানমারে অনুষ্ঠিত ৪ জাতি ফুটবল টুর্নামেন্টে বেস্ট খেলোয়াড় নির্বাচিত হওয়ার পাশাপাশি খেলেছি আগাখান গোল্ডকাপ, কাতার গোল্ডকাপ, সাব ফুটবল গেমস, সার্ক গেমস, ওয়ার্ল্ড কাপ ফুটবলের কোয়ালিফাইঙে নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া, সৌদি আরবসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের বিরুদ্ধে।
১৯৯৭ সালে ওয়ার্ল্ড কাপ কোয়ালিফাইঙে খেলার পর চুয়াডাঙ্গার এ কৃতী ফুটবলার ফুটবল থেকে অবসরগ্রহণ করেন। ফুটবল থেকে অবসরগ্রহণ করলেও ফুটবলের প্রতি যে ভালোবাসা, যে অনুরক্ততা সেটি কিন্তু কমে যায়নি। তাই যখনই সুযোগ পান তখনই নেমে পড়েন ফুটবল নিয়ে। তিনি ইচ্ছা ব্যক্ত করেন, আগামী ২৫ জানুয়ারি রোববার বিকেলে চুয়াডাঙ্গা টাউন মাঠে সোনালী অতীত ক্লাবের হয়ে খেলবে চুয়াডাঙ্গা জেলা ক্রীড়া সংস্থার ফুটবলারদের বিপক্ষে।
গতকাল প্রীতি ফুটবল ম্যাচ চলাকালীন সময়ে চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র সাবেক বাংলাদেশ হকি দলের ম্যানেজার, চুয়াডাঙ্গা নাইটিঙ্গেল ক্রিকেট একাডেমীর সভাপতি, প্রথম রাজধানী ফুটবল একাডেমীর সভাপতি, রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন টাউন মাঠে উপস্থিত হন। খেলা উপভোগ শেষে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে পুরস্কার বিতরণ করেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র লেখা-পড়ার পাশাপাশি খেলোয়াড়দের নিয়মিত অনুশীলন করার আহ্বান জানান এবং অচিরেই টাউন মাঠ সংস্কার করার আশ্বাস প্রদান করেন। খেলোয়াড়দের উৎসাহিত করতে ম্যান অব দি ম্যাচের পুরস্কার দেন মামুন জোয়ার্দ্দার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্রের সভাপতি চুয়াডাঙ্গা নাইটিঙ্গেল ক্রিকেট একাডেমীর সদস্য সচিব তরুণ ক্রীড়া সংগঠক নঈম হাসান জোয়ার্দ্দার, ফুটবল একাডেমীর সম্পাদক শহিদুল কদর জোয়ার্দ্দার, পরিচালক সরোয়ার হোসেন মধূ, সাবেক ফুটবলার আশরাফুল ইসলাম মিঠু, পিন্টু কুমার আগরওয়ালা, আয়ুব আলী, টিপু সুলতান, নাজমুল হক শান্তি, রিজু, হাসান, মিলু, হাপ, সোহেল, ইমরান প্রমুখ।