বাবা আ. লীগ নেতা : ছেলেকে পিটিয়ে হত্যা!

স্টাফ রিপোর্টার: চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলায় নবম শ্রেণির এক ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তার নাম রাজন আলী রকি (১৪)। তার বাবা রুহুল আমিন শিবগঞ্জ পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি। এলাকাবাসী ও পরিবারের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ নেতার ছেলে হওয়ায় জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা রকিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে।

রকির বাড়ি উপজেলার শেখটোলা গ্রামে। অবরোধে নাশকতা সৃষ্টিকারীদের ধরতে গত বৃহস্পতিবার ওই এলাকায় অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সেদিন দুপুরে বাড়ির কাছে একটি আম বাগানে বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে গেলে হামলার শিকার হয় রকি। গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে তাকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে নিয়ে যাওয়া হয় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে রকি মারা যায়।

রামেক হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. জোবাইদুর রহমান কালের কণ্ঠকে জানান, রকির মাথার সামনে ও পেছনের অংশে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন আছে। আঘাতের কারণে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের ফলেই তার মৃত্যু হয়েছে। শরীরের অন্যান্য অংশেও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

এলাকাবাসী ও পরিবারের সদস্যরা রকির এমন মৃত্যু কোনোভাবেই মানতে পারছে না। রামেক মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল শনিবার দুপুর পৌনে ২টার দিকে যখন মরদেহ গ্রামের বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়, তখন পুরো এলাকায় নামে শোকের ছায়া। সজল নয়নে, নত মস্তকে প্রতিবেশীরা ভিড় জমায় রুহুল আমিনের বাড়িতে। থমথমে মুখগুলো থেকে ঠিকরে পড়ছিল ক্ষোভের আগুন।

গতকাল সকাল ১১টার দিকে রকিদের বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, অন্তত শপাঁচেক লোক ভিড় করেছে। ঘরের বারান্দায় বিলাপ করছিলেন রকির মা নাজমা বেগম। শুক্রবার রাতে ছেলের মৃত্যুর খবর শোনার পর থেকে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন তিনি। মাঝেমধ্যে জ্ঞান ফিরলে শুধু বলছেন, ‘আমার ব্যাটা অ্যাসেছে। আমি ওকে একবার দেখতে চাই। আমাকে ওর কাছে নিয়ে যাও। আমাকে রেখে ও কই গেল?’

বাড়ির এক কোনায় বুক চাপড়ে আহাজারি করছিলেন বাবা রুহুল আমিন। চিৎকার করে বলছিলেন, ‘যারা আমার রকিকে খুন করল, তাদের আমি বিচার চাই। তাদের ফাঁসি চাই। ওই পশুরা কেন আমার ছেলেকে মারল, তারা কেন আমাকে মারল না?

Leave a comment