বিদ্যালয়গুলোতে বই উৎসব : লক্ষ্যে পৌঁছুনোর সোপান

 

বছরের প্রথম দিনটি বই উৎসব। সপ্তাজুড়ে প্রতিটি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের উচ্ছ্বাস ও উল্লাসে শহর-বন্দর-গ্রামের হাজার হাজার স্কুল প্রাঙ্গণ মুখরিত হওয়ার সপ্তা। বিদ্যালয়ের খাতায় নাম থাকলেই ঝকঝকে নতুন এক সেট বই সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পাচ্ছে সকল শিক্ষার্থীরা।

সারাদেশের ৪ কোটি ৪৪ লাখ ৫২ হাজার ৩৯৪ জন ছাত্রছাত্রীর প্রায় সকলেই বছরের প্রথম দিন নিজ নিজ বিদ্যালয়ে বসে নতুন পাঠ্যবই হাতে পেয়েছে। বাকিরা পাবে চলতি সপ্তার মধ্যে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণসহ নানামুখি উদ্যোগে গত পাঁচ বছরে শিক্ষার্থী বেড়েছে প্রায় এক কোটি ৭০ লাখ। বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রী বেড়ে চলার এ তথ্য যেমন উৎসাহব্যঞ্জক, তেমনি জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে এ হারে শিক্ষাথী বেড়েছে কি-না তাও খতিয়ে দেখার দাবি রাখে বটে। তবে সন্তানকে শিক্ষিত করার লক্ষ্যে দরিদ্র অভিভাবকদের মধ্যে যে উৎসাহ বেড়েছে তা নতুন করে বলার অবকাশ রাখে না। কেন? অতিদরিদ্র ও নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোও তাদের সন্তানদের এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠায়। এ শিক্ষার্থীরা যাতে ঝরে না পড়ে সেজন্য সরকারের কিছু পদক্ষেপ খুব সহায়ক হয়েছে। যেমন- বিনামূল্যে বই প্রদান, বিপুল সংখ্যক ছাত্রীকে বিনাবেতনে পড়ার সুযোগ করে দেয়া, উপবৃত্তি প্রদান। উপবৃত্তিপ্রাপ্ত প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থী এখন ৭৮ লাখ। মাধ্যমিক পর্যায়ে এ বৃত্তি মিলছে প্রায় ৩৭ লাখ। স্কুল ফিডিং কর্মসূচির আওতায় এসেছে ৩১ লাখের বেশি শিক্ষার্থী। এসব কর্মসূচি যে জাতির লক্ষ্যে পৌঁছুনোর সিঁড়ি তা বলাই বাহুল্য।

সামনে যে চ্যালেঞ্জগুলো রয়েছে তার মধ্যে শিক্ষার মান বৃদ্ধি, উপযুক্ত শিক্ষক নিয়োগ নিশ্চিতকরণ, শিক্ষাকে আনন্দদায়ক করে তোলা ও ঝরে পড়া কমিয়ে আনা। এসব সমস্যার সমাধান করতে পারলে দক্ষ ও যোগ্য বিপুল সংখ্যক মানবসম্পদ গড়ে তোলার চ্যালেঞ্জে জয়ী হতে পারবো আমরা।