বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলের দেশব্যাপি সকাল-সন্ধ্যা হরতাল : বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ

স্টাফ রিপোর্টার: ঝটিকা মিছিল, ককটেল বিস্ফোরণ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়াসহ বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের মধ্যদিয়ে সারাদেশে পালিত হয়েছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতাল। রাজধানীতে হরতালের কোনো উত্তাপ ছিলো না। চুয়াডাঙ্গাও ছিলো মূলত নিরুত্তাপ। সকাল ১১টার দিকে হরতালের সমর্থনে মিছিল বের করা হলে পুলিশি বাধার মুখে পড়ে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। মেহেরপুরে তিনজনকে পুলিশ আটক করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। হরতাল চলাকালে চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর থেকে দূরপাল্লা ও আন্তঃজেলার কোনো বাস ছাড়েনি। ট্রাক চলেনি। সড়কে ছিলো তিন চাকার নানা পদের বৈধ-অবৈধ যানের ছড়াছড়ি। দোকানপাঠ সকালে এক পাল্লা খুললেও দুপুরের পর পুরো দোকান খুলে বসতে দেখা গেছে। তবে ক্রেতার উপস্থিতি ছিলো কম। অফিস আদালতে স্বাভাবিক কাজ ব্যাহত হয়েছে। ব্যাংক বীমায় অনেকটাই স্বাভাবিক লেনদেন হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
ঢাকার পল্লবীতে যুবদল ও পুলিশের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ, গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। নোয়াখালীতে পিকেটারদের ছোড়া ইটের আঘাতে শামসুন্নাহার ঝর্ণা নামে এক স্কুলশিক্ষিকা নিহত হয়েছেন। রাজশাহীতে পুলিশের গাড়িতে হামলা হয়েছে। এছাড়া সারাদেশে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে অসংখ্য নেতাকর্মী আহত হন। সিলেট মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহরিয়ারসহ সারাদেশে বিএনপি-জামায়াত ও এর অঙ্গসংগঠনের ৩৫৯ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়। ছাত্রদল দু নেতাসহ কয়েকজনকে সাজা দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর জোটের ডাকা দ্বিতীয় হরতাল ছিলো গতকাল সোমবার। গাজীপুরে সমাবেশ করতে না দেয়ার প্রতিবাদ এবং গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ দলীয় নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে এ হরতালের ডাক দেয় ২০ দলীয় জোট।
সকাল-সন্ধ্যা হরতালের সমর্থনে হরতালের দিন সকাল ১১টায় চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির একাংশের উদ্যোগে পিকেটিং মিছিল বের হয়। মিছিলটি স্লোগান সহকারে শহীদ হাসান চত্বর হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের সম্মুখস্থ কার্যালয়ে এসে শেষ হয়। মিছিল শেষে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশে জেলা বিএনপির সদস্য শহিদুল ইসলাম রতনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক অ্যাড. ওয়াহেদুজ্জামান বুলা। বক্তব্য রাখেন- জেলা বিএনপির সদস্য আবু জাফর মন্টু, বিএনপি নেতা রেজাউল করিম মুকুট, রবিউল ইসলাম লিটন, জেলা বিএনপির সদস্য কমিশনার নাজমুস সালেহীন লিটন, জেলা যুবদল আশরাফ বিশ্বাস মিল্টু, মোখলেছুজ্জামান মোখলেছ, ইমরুল হাসান জোয়ার্দ্দার মুকুল, আরিফুজ্জামান পিন্টু, তৌফিকুজ্জামান তৌফিক, জেলা ওলামা দলের সভাপতি মো. ফজলুর রহমান, মাওলানা জাহিদ হোসেন, জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক এমএ তালহা, যুগ্ম-আহ্বায়ক মঞ্জুরুল জাহিদ, যুবদল নেতা আহসান হাবীব মুক্তি, বকুল হোসেন, ছাত্রদল নেতা সুমন, মামুন, সাদ্দাম হোসেন, উজ্জ্বল, রানা হামিদ, ফয়সাল প্রমুখ।
গাংনী প্রতিনিধি জানিয়েছেন, মেহেরপুর গাংনী উপজেলায় বাস চলাচল বন্ধের মধ্যদিয়ে ঢিলেঢালাভাবে পালিত হয়েছে ২০ দলীয় জোটের ডাকা সকাল-সন্ধ্যা। তবে হরতালে নাশকতা এড়াতে গাংনী থানা পুলিশের অভিযানে চার বিএনপি কর্মীকে আটক করা হয়েছে। ভোর থেকে জেলার আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার সকল প্রকার বাস চলাচল বন্ধ ছিলো। গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিয়াজুল ইসলাম জানান, হরতালে নাশকতা প্রতিরোধে রাতভর এ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে অভিযান চালানো হয়। এ সময় সিঁন্দুরকোটা ও শিশিরপাড়া গ্রামের বিএনপি চারকর্মীকে আটক করা হয়। গতকালই তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।

Leave a comment