স্টাফ রিপোর্টার: সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ১২ ধরনের অবসর ভাতা বাড়ানোর সুপারিশ করেছে জাতীয় বেতন কমিশন। পাশাপাশি মৃত্যুর কারণে সরকারি সহায়তা ৫ লাখ থেকে বাড়িয়ে ১০ লাখ টাকা, চাকরির পাঁচ বছর বয়সে পেনশন সুবিধা দেয়ার কথা বলা হয়েছে। স্বেচ্ছায় অবসরগ্রহণের মেয়াদ ২০ বছর করার সুপারিশ করেছে কমিশন। জাতীয় বেতন কমিশনের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
কমিশন আরও বলেছে, অধিকাংশ অবসরভোগী পেনশন ও আনুতোষিক হিসাবের প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে জীবনযাত্রা নির্বাহ করে থাকেন। বেতন ও চাকরি কমিশন সরকারের সার্বিক সম্পদ পরিস্থিতি ও আয়-ব্যয়ের ভারসাম্যের বিষয়টি বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রণয়ন করেছে। কমিশনের বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরা হলো- চাকরি পাঁচ বছর হলেই পেনশন: চাকরির মেয়াদ পাঁচ বছর হলে পেনশন দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে শেষ বেতনের ২০ শতাংশ পেনশন পাবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি। চাকরি ২৫ বছরের ওপরে হলে পেনশন পাবে শেষ বেতনের ৯০ শতাংশ হারে। অবশ্য বিদ্যমান বেতন স্কেলে চাকরির মেয়াদ ১০ বছর না হলে পেনশনের যোগ্য হিসেবে বিবেচনা করা হতো না। ১০ বছরের পর পেনশন ধরা হয় ৩২ শতাংশ এবং ২৫ বছরের ঊর্ধ্বে ৮০ শতাংশ হারে পেনশন দেয়ার বিধান রয়েছে। স্বেচ্ছা অবসরের মেয়াদ ২০ বছর: চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসরগ্রহণের মেয়াদ ন্যূনতম ২০ বছর করার সুপারিশ করা হয়েছে। বর্তমান অবসরগ্রহণের মেয়াদ হচ্ছে ২৫ বছর।
পেনশনারদের বৈষম্য নিরসন: বৈষম্য নিরসনের জন্য চারটি সুপারিশ করেছে বেতন কমিশন। এগুলোর মধ্যে নতুন বেতন স্কেল বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে নিট পেনশনের পরিমাণ পেনশনারের শেষ বেতনের অনুরূপ স্কেলে বেতন বৃদ্ধির সমতুল্য হার পুনর্নির্ধারণ করা যেতে পারে। ৫০ শতাংশ নিট পেনশন সমর্পণকারী অবসরভোগীদের উৎসব ভাতা পুনর্নির্ধারণ করার সুপারিশ করা হয়। এছাড়া পেনশনারদের মাসিক পেনশনের পরিমাণ ন্যূনতম দু হাজার টাকা নির্ধারণ এবং নিট পেনশনের পরিমাণ বার্ষিক ভিত্তিতে সমন্বয় করা যেতে পারে।
অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবীদেও জ্যেষ্ঠ নাগরিকের সুবিধা: অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চাকরিজীবীদের সিনিয়র সিটিজেন বা জ্যেষ্ঠ নাগরিক হিসেবে সিনিয়র সিটিজেন বা প্রবীণ নাগরিক কার্ড প্রবর্তন করতে পারে। অবসরপ্রাপ্তদের কর্মক্ষেত্র অনুসন্ধান: অবসরে যাওয়ার পর সরকারি চাকরিজীবীরা অনেকে কর্মসংস্থানের সুযোগ পায় না। এক্ষেত্রে সরকারি মালিকানাধীন ব্যাংক, বীমা, কর্পোরেট সংস্থা এবং সরকারি অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা বোর্ডে যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে অবসরপ্রাপ্তদের নিয়োগ দেয়ার সুপারিশ করেছে কমিশন। কল্যাণ তহবিল ও যৌথবীমা: চাকরিরত একজন বেসামরিক সরকারি চাকরিজীবীর মৃত্যুর ক্ষেত্রে সরকারি সহায়তা পাঁচ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০ লাখ টাকা, অক্ষমতার ক্ষেত্রে দু লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে পাঁচ লাখ টাকা, দাফন-কাফন অথবা অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য ২০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০ হাজার টাকায় উন্নীত করার সুপারিশ করা হয়। এছাড়া চাকরিরত অবস্থায় চিকিৎসার জন্য সরকারি সহায়তার পরিমাণ এক লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে দু লাখ টাকা করার কথা বলেছে কমিশন।
পেনশন ফান্ড, বীমা ব্যবস্থাপনা ও কল্যাণ তহবিল: বর্তমান কল্যাণ তহবিলের ব্যবস্থাপনা পরিধি ও ক্ষমতা বৃদ্ধি, অবসরপ্রাপ্তদের জন্য ট্রাস্ট ব্যাংকের আদলে ৪শ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধন দিয়ে সমৃদ্ধি সোপান ব্যাংক নামে একটি বাণিজ্যিক ও উন্নয়ন ব্যাংক স্থাপনের সুপারিশ করা হয়।