চুয়াডাঙ্গার সরোজগঞ্জ থেকে গুড় রফতানি জমে উঠেছে

জিয়াউর রহমান জিয়া: খেজুর গুড় উৎপাদন ও বাজারে বিক্রির এখন ভরা মরসুম। এবারও বাংলাদেশের সববৃহৎ খেজুর গুড়ের হাট চুয়াডাঙ্গার জেলা সদরের সরোজগঞ্জ থেকে প্রতি শুক্রবার ও সোমবার ২০ থেকে ৩০ ট্রাক খেজুরের গুড় দেশের বিভিন্ন জেলায় রফতানি হচ্ছে। অন্যবারের তুলনায় খেজুরের সরোজগঞ্জ বাজারের খেজুর গুড়ের চাহিদা দেশের বিভিন্ন জেলায় বেড়ে যাওয়ায় দামও বাড়ছে। এছাড়া আমদানির তুলনায় চাহিদা বেশি হলে সব জিনিসের দাম যেমন বৃদ্ধি পায়, খেজুর গুড়ের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

খেজুর গুড় ব্যাপারীরা বলেছেন, যে হারে গুড়ের চাহিদা বাড়ছে সেই হারে খেজুর গাছের সংখ্যা বাড়ছে না। চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরসহ দামুড়হুদা, জীবননগর ও আলমডাঙ্গা উপজেলার একাংশ ঘিরে রয়েছে প্রচুর খেজুর গাছ। এছাড়া ঝিনাইদহ এলাকায় খেজুরগাছের সংখ্যা চুয়াডাঙ্গার তুলনায় কোনো অংশেই কম নয়। র্দীঘদিন ধরে অনেকের ধারণা যশোর জেলায় খেজুরগুড়ের উৎপাদন বেশি। কিন্তু বাংলাদেশের বৃহত্তম খেজুর গুড়ের হাট হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের সরোজগঞ্জ বাজার তা অনেকেই সহজে মেনে নিতে চান না। সরোজগঞ্জ গুড়ের হাট সপ্তায় শুক্রবার ও সোমবার জমে ওঠে। চট্টগ্রাম থেকে শুরু করে দূর-দূরান্তের ব্যাপারীরা খেজুর গুড় কিনতে হাটের আগের দিন হাজির হন সরোজগঞ্জে। শীতকালীন এ ব্যবসা নিয়ে সরোজগঞ্জ হাটে বহু ব্যবসায়ী আড়ত খুলে বসেছেন। প্রতিদিনই ওইসব আড়তে গুড় বেচাকেনা হয়। এবার গুড়ের দাম তুলনামুলকভাবে বেশি। গত কয়েক হাটে খেজুর গুড় বিক্রি হয়েছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা কেজি। ব্যাপারীরা কেজি দরের চেয়ে ভাঁড় ধরে কিনতে অধিক আগ্রহী। প্রতি ভাঁড় সাড়ে ৭শ থেকে শুরু করে ১ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এলাকার কয়েকজন গাছি জানালেন, এবার শুরু থেকেই খেজুর গুড়ের দাম চড়া। জ্বালানি খরচ অনেক বেশি। জ্বালানি খরচ বেড়ে যাওয়ায় অনেকে কাঁচা রস ফেরি করে বাজারে বিক্রি করছেন। উৎপাদন ও হাটের আমদানির তুলনায় ক্রেতা তথা ব্যাপারী বেশি হওয়ায় গুড়ের দাম ঊর্ধ্বমুখি।

বাজারে আসা ব্যাপারীদের অভিযোগ, গুড়ের দাম বেশি হওয়ায় কিছু অসাধু গাছিরা চিনি ও খেজুরের রস একসাথে মিশিয়ে গুড় বানিয়ে বাজারে নিয়ে আসছেন। এতে করে খেজুর গুড়ের মান অনেক কমে যাচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে আমাদের পক্ষে খেজুর গুড় কেনায় দায় হয়ে যাচ্ছে। এর প্রতিকার হওয়া দরকার। বাজারে ইজাদারের উদ্যোগে চিনি মিশিয়ে গুড় বাজারে আনলে ধরতে পারলে ৫শ টাকা করা হবে বলে মাইকিং করা হয়েছে বলে জানানো হয়।

এ খেজুর গুড়ের হাটকে ঘিরে প্রতি শুক্রবার ও সোমবার বসছে গুড় রাখার পাত্র ভাঁড়ের হাট। গাছিরা যেকোনো মাপের ভাঁড় কিনছেন। আবার সেই ভাঁড়ে গুড় ভরে বাজারের নিয়ে আসছেন।