গৌরবের ১০০ বছর পালনের পেছনের গল্প

চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি উৎসব

 

স্টাফ রিপোর্টার: আগামীকাল শনিবার চুয়াডাঙ্গার ঐতিহ্যবাহী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি উৎসব। এ উপলক্ষে বিদ্যালয়টিকে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে। প্রায় দু হাজার লোকের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করতে ইতোমধ্যে সব ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিদ্যালয় চত্বরে বিশাল প্যান্ডেল নির্মাণসহ প্রবেশমুখে দৃষ্টিনন্দন গেট তৈরি করা হয়েছে। অনুষ্ঠানের স্মারক হিসেবে স্মরণিকা প্রকাশ এবং টি-শার্ট, ক্যাপ ও ব্যাগ তৈরি করা হয়েছে।

আয়োজকরা এই বলে তৃপ্তির ঢেকুর তুলছে যে- ১৮৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত চুয়াডাঙ্গা ভি.জে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও সেখানকার শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়টির শতবর্ষ পূতি বা ১২৫ বর্ষপূতি উৎসব করতে না পারলেও সরকারি বালিকা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তা পেরেছে। সে জন্য বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ধন্যবাদ পেতেই পারে। কিন্তু এ শতবর্ষ পূর্তি উৎসবের নেপথ্যের গল্পটা অনেকেরই অজানা।

চলতি বছরের ১১ মে চুয়াডাঙ্গার ঝিনুক মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের রজতজয়ন্তী উদযাপিত হয়। রজতজয়ন্তীর ওই উৎসবে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসাইন। অনুষ্ঠানে অন্যদের সাথে বিশেষ অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহফুজুল হোসেন উজ্জ্বল।

ঝিনুক মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের মূলমঞ্চে আলোচনা চলাকালে সিনিয়র সাংবাদিক এনটিভির প্রতিনিধি মো. রফিকুল ইসলাম অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের সভাপতি জেলা প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসাইনের কাছে একটি চিরকুট দেন। তাতে চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শতবর্ষে পদার্পণের বিষয়টি জেলা প্রশাসককে অবগত করান এবং সভাপতি হিসেবে তার পরিকল্পনা জানতে চান। জেলা প্রশাসক ওই অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদানকালে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের শতবর্ষে পদার্পণ বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের মন্তব্যে আমি ক্ষুব্ধ, অসন্তুষ্ট। প্রধান শিক্ষক বলেছেন, বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা উদ্যোগ নিলে অনুষ্ঠান হবে। যেখানে ঝিনুক বিদ্যালয় বিদ্যালয় ২৫ বছর উপলক্ষে এতো বড় অনুষ্ঠান করতে পারে, সেখানে ১শ বছর নিয়ে আরো বড় অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। অথচ প্রধান শিক্ষকের অনীহার কারণ বুঝতে পারলাম না। অনুষ্ঠানের উদ্যোগ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককেই নিতে হবে এবং সভাপতি হিসেবে জেলা প্রশাসক সার্বিক সহযোগিতা করবেন।

জেলা প্রশাসকের এ বক্তব্য শোনার পর অনুষ্ঠান স্থলে উপস্থিত সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রীরাও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তাদের অনেকেই এ প্রতিবেদকের কাছে বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক যদি উদ্যোগ গ্রহণে ব্যর্থ হন, তাহলে প্রাক্তন ছাত্রী হিসেবে তারা প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেবেন।

এদিকে ঝিনুক মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের রজতজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসকের বক্তব্যে সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহফুজুল হোসেন নড়েচেড় বসেন। স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে বিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি উৎসবের ঘোষণা ও নিবন্ধনের আহ্বান জানানো হয়। এরপর শুরু হয় উৎসবের লক্ষ্যে এগিয়ে চলা। তারপরও বলতে হয়, শেষ ভালো যার, সব ভালো তার।