গাজীপুর ইস্যুতে ছাড় দেবে না ২০ দল

স্টাফ রিপোর্টার: গাজীপুরে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জনসভা নিয়ে চলছে টানটান উত্তেজনা। জনসভা আহবানকারী ও বিরোধীরা নিজ নিজ অবস্থানে অনড় রয়েছে। জনসভা সফল করতে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা প্রচার প্রচারণায় ব্যস্ত রয়েছে।

অপরদিকে বেগম খালেদা জিয়ার জনসভা ঠেকাতে ব্যস্ত রয়েছে ক্ষমতাসীনরা। তবে জনসভাস্থল ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজ মাঠে পুলিশের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ছাত্রলীগ কর্মীরা শোডাউন করছে বলে অভিযোগ বিএনপি নেতাদের। কিন্তু যতো বাধাই আসুক, যেকোনো মূল্যে গাজীপুরে জনসভা সফল করা হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা। এ ইস্যুতে কোনো ছাড় দেয়া হবে না বলেও বিএনপির পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেয়া হয়েছে।

জানা গেছে, সমাবেশ সফল করতে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। দলের সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা মাঠে রয়েছেন। কোনো বাধা দেয়ার চেষ্টা করা হলে তা মোকাবেলা করে সমাবেশ করার সিদ্ধান্তেও অটল রয়েছে স্থানীয় নেতারা।

এ বিষয়ে ২০ দলীয় জোটের অন্যান্য দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে একাধিক সমন্বয় সভাও হয়েছে। বিশেষ করে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির কথাও জানানো হয়েছে বিএনপিকে। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও গাজীপুর জেলা বিএনপি সভাপতি ফজলুল হক মিলন। তিনি জানান, ইতোমধ্যে (বৃহস্পতিবার) তাদের ১০ থেকে ১২ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ পরিকল্পিতভাবে আতঙ্ক সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপির এ নেতা।

তিনি বলেন, একদিকে পুলিশ বিএনপি কর্মীদের গ্রেফতার করা শুরু করেছে আর অন্যদিকে ছাত্রলীগ কর্মীদের ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজ মাঠে মিছিল করার সুযোগ করে দিচ্ছে। ছাত্রলীগের কর্মীদের ভেতরে প্রবেশের পর মাঠের তিনটি গেটে তালা দিয়ে পুলিশ তাদের নিরাপত্তা দিচ্ছে বলেও অভিযোগ বিএনপির এ নেতার। তবে যতো বাধাই দেয়া হোক না কেন বেগম খালেদা জিয়ার জনসভা কেউ বানচাল করতে পারবে না বলেও উল্লেখ করেন ফজলুল হক মিলন। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে সমাবেশের সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষ এ সমাবেশ সফল করতে সক্রিয় রয়েছেন।

এ বিষয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র আবদুল মান্নান জানিয়েছেন সমাবেশ সফল করতে কর্মীরা প্রস্তুত। তিনি জানান- শুধু গাজীপুর নয়, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল ও এর আশপাশের জেলাগুলো থেকে বিপুল সংখ্যক লোক সমাবেশে অংশ নেবেন। রাজধানী ঢাকা থেকেও ২০ দলের এ সমাবেশে যোগ দিতে হাজার হাজার লোক গাজীপুরে আসবেন বলেও উল্লেখ করেন মেয়র। তিনি বলেন, এখন ছাত্রলীগ যেসব তৎপরতা দেখাচ্ছেন তা কেবলমাত্র পুলিশের সহযোগিতার কারণে। এ সব অপতৎপরতা ব্যর্থ হবে। যথাসময়ে গাজীপুরে সমাবেশ সফল করা হবে বলেও জানান তিনি।

উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে বিএনপি সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেয়া বক্তব্য প্রত্যাহার না করলে গাজীপুরে খালেদা জিয়াকে সমাবেশ করতে দেয়া হবে না বলে ঘোষণা দেয় গাজীপুর ছাত্রলীগ। পরবর্তীতে স্থানীয় ছাত্রলীগের সুর ধরে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগও একই ধরনের হুমকি দেন। ছাত্রলীগের এ ঘোষণার পর নয়াপল্টনে সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রলীগকে প্রতিহত করার ঘোষণা দেয় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদ। আর এর পরই সমাবেশকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।