যাত্রাশিল্প বাংলার অন্যতম ঐতিহ্য। যে ঐতিহ্য নিয়ে এক সময় বাংলা গর্ব করেছে সেই ঐতিহ্যে কালিমা মাখিয়েছে কারা? যারা রাজনৈতিক ক্ষমতার ছোঁয়ায় সমাজের কথা না ভেবে ব্যক্তি স্বার্থে মেতেছে তারাই। তা না হলে যাত্রার নামে অশ্লীল নৃত্য কেন? কেন বিনোদনের আয়োজনের কথা বলে জুয়োর মহোৎসব? মাদকের উগ্রতা তো আছেই। এসব সুন্দর সমাজ গঠনে অন্তরায়।
যারা সুস্থধারার সংস্কৃতি চর্চাকে ধ্বংস করেছে তাদেরই উত্তরসূরীরা গ্রামবাংলায় যাত্রার নামে অশ্লীল নৃত্য আর জুয়োর আসর বসিয়ে প্রগতিশীল বিরোধী তথা মৌলবাদচক্রকে কি শক্তিশালী করতে সহায়তা করছে না? করছে। যাত্রার নামে যখন উচ্চস্বরে উগ্র গানের সাথে অশ্লীল নৃত্য চলে তখন মৌলবাদচক্র আঙুল তুলে বলে, ওই দেখো প্রগতির বেহায়াপনা। এতে ক্ষতবিক্ষত হয় প্রগতিশীল সমাজ গঠনের ধারাবাহিকতা।
প্রতি বছরের শীত মরসুম এলেই গ্রামে গ্রামে যাত্রাপালার আয়োজন করা হয়। মুখে বাংলার ঐতিহ্যের কথা বলা হলেও বাস্তবে থাকে বেলেল্লাপনা। এবারও আলমডাঙ্গার হাঁপানিয়ায় যাত্রাপালার প্যান্ডেল করা হয়েছে। যাত্রার নামে কি হচ্ছে? যা হচ্ছে তা উঠতি বয়সীদের বিপথগামিতায় উসকে দেয়া, সরলসোজা মানুষগুলোকে সর্বস্বান্ত করা। আয়োজকদের পকেট ভারী হলেও মূলত মৌলবাদচক্রের ঝুলিই সমৃদ্ধ করা হচ্ছে।
তাই বলে বিনোদনের ব্যবস্থা করা যাবে না? অবশ্যই বিনোদন প্রয়োজন। সুস্থ ধারার বিনোদন প্রগতিশীল সমাজ গঠনে সহায়ক। যে ধারার বিনোদনের আয়োজন সুন্দর সমাজ গঠনে সহায়ক সে ধারা তথা সুস্থ ধারার আয়োজন করতে না পারলে অশ্লীলতা ও জুয়ো শক্ত হাতে বন্ধ করতে হবে। সুস্থ ধারার সংস্কৃতিচর্চা যেমন সুন্দর সমাজ গঠনে সহায়ক, তেমনই অসুস্থ সংস্কৃতি অনিবার্য করে তোলে পতন। পুনশ্চঃ ভবিষ্যত নির্মাণের এখনই সুবর্ণ সময়।